Advertisement
০৪ মে ২০২৪

রাস্তা সংস্কারে বরাদ্দ অর্থ কমিশনের টাকা

জীবনের দাম শূন্য! জীর্ণ রাস্তার বহু জায়গায় পিচের আস্তরণ উঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বর্ষার পর পরিস্থিতি আরও শোচনীয়। অথচ সংস্কার না হওয়ায় বেহাল রাস্তা দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলে যাতায়াত। সবংয়ের বড়চারা রাস্তার হাল এমনই। সব মিলিয়ে তিনটি অঞ্চল এলাকার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে রাস্তাটি। মাঝে-মধ্যেই ছোট- বড় দুর্ঘটনা ঘটে।

উঠে গিয়েছে পাঁচখুরি রাস্তার পিচের আস্তরণ।

উঠে গিয়েছে পাঁচখুরি রাস্তার পিচের আস্তরণ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:২৬
Share: Save:

জীবনের দাম শূন্য!

জীর্ণ রাস্তার বহু জায়গায় পিচের আস্তরণ উঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বর্ষার পর পরিস্থিতি আরও শোচনীয়। অথচ সংস্কার না হওয়ায় বেহাল রাস্তা দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলে যাতায়াত। সবংয়ের বড়চারা রাস্তার হাল এমনই। সব মিলিয়ে তিনটি অঞ্চল এলাকার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে রাস্তাটি। মাঝে-মধ্যেই ছোট- বড় দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় গ্রামবাসীদের একাংশের উদ্যোগে গত জুলাইয়ে তৈরি হয় বড়চারা-খড়িকা পাকা রাস্তা বাঁচাও কমিটি। কমিটির নেতা বলাই মান্নার কথায়, “আমরা মেদিনীপুরে গিয়ে জেলাশাসক-সভাধিপতির দফতরেও স্মারকলিপি দিয়েছি। তার আগে বিডিওর কাছে ডেপুটেশন দিয়েছি। সাধারণ মানুষকে জীবন হাতে নিয়ে নিত্যদিন এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। দুর্ঘটনা এড়াতে অবিলম্বে এই রাস্তার সংস্কার হওয়া দরকার।”

শুধু সবংয়ের এই রাস্তা নয়, জেলার বেশ কিছু রাস্তার হালই এমন। বেহাল রাস্তা ধরে নিত্য যাতায়াত করতে গিয়ে প্রাণান্তকর অবস্থা স্থানীয় বাসিন্দাদের। যেমন পিংলা-জামনা, খেতুয়া-আমনপুর, হুমগড়-আমলাশুলি প্রভৃতি। মেদিনীপুর সদরের পাঁচখুরি মার্কেটের লিঙ্ক রোডও বেহাল। অবিলম্বে সংস্কার প্রয়োজন। প্রতি শনিবার এখানে হাট বসে। এটিই মেদিনীপুরের সবথেকে বড় হাট। দাসপুর, কেশপুর, শালবনি, খড়্গপুর শহর ও আশপাশের এলাকা থেকে প্রায় চল্লিশ হাজার মানুষ এখানে আসেন। পরিস্থিতি দেখে শেষমেশ এই সমস্ত রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দিচ্ছে জেলা প্রশাসন।

জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, দু’টি অর্থ কমিশনের বরাদ্দ অর্থ থেকে কিছু রাস্তা তৈরি এবং সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি জেলা পরিষদের পূর্ত স্থায়ী সমিতির বৈঠকে এ ব্যাপারে আলোচনা হয়। আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্তও হয়। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলেন, “জেলার বেশ কিছু রাস্তা সংস্কার করা জরুরি। অর্থ কমিশনের বরাদ্দ অর্থ থেকে কয়েকটি রাস্তা সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।”

জামনা-পিংলা রাস্তায় ঝুঁকির যাতায়াত।

ঠিক কোন কোন রাস্তা সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে? জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, অর্থ কমিশনের বরাদ্দ অর্থে জামনা-পিংলা রাস্তা, কেশপুরের খেতুয়া-আমনপুর, চন্দ্রকোনা-১ ব্লকের হেমতপুর-তাতারপুর, গোপীবল্লভপুর- ২ এর তপসিয়া-গোয়ালপাড়া, গড়বেতা ২ ব্লকের হুমগড়-আমলাশুলি, গড়বেতা- ১ এর ধাদিকা- কল্যাণচক, সবং-বড়চারা রাস্তার সংস্কার করা হবে। জেলা পরিষদ চত্বরে থাকা দোকানঘর, ক্ষুদিরাম পরিকল্পনা ভবন-সহ আরও কিছু সংস্কার কাজের জন্য ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অন্য দিকে, তৃতীয় রাজ্য অর্থ কমিশনের বরাদ্দ অর্থ থেকে খাকুড়দা-মোহনপুর রাস্তা নতুন করে তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজনগর-দাসপুরের ক্ষেত্রে বরাদ্দ হয়েছে ৪০ লক্ষ টাকা। পাঁচখুরি মার্কেটের লিঙ্ক রোডের ক্ষেত্রে বরাদ্দ হয়েছে ৩৭ লক্ষ টাকা। জেলা পরিষদ চত্বরে একটি জলাধার তৈরিরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জেলা পরিষদের এক কর্তা বলেন, “যে সব রাস্তা সংস্কারে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, সেগুলো দীর্ঘদিন ধরেই সংস্কারের অভাবে খারাপ হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি দেখেই পূর্ত স্থায়ী সমিতির বৈঠকে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়।” দাঁতন-১ ব্লকের রবীন্দ্র ভবন সংস্কারের জন্যও ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে বলে জেলা পরিষদ সূত্রে খবর। জেলা পরিষদের ওই কর্তার কথায়, “বর্ষার পর রাস্তাগুলির পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হয়েছে। বিষয়টি রাজ্যকেও জানানো হয়েছে। বেশ কিছু রাস্তার পরিস্থিতি খারাপ। প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকায় এখনই সংস্কার করা যাচ্ছে না। তবে আমরা মোরাম ফেলে অস্থায়ী ভাবে কিছু গ্রামীণ রাস্তা মেরামতের চেষ্টা করছি।” জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবালবাবুর আশ্বাস, “আরও কিছু রাস্তা দ্রুত সংস্কার করা জরুরি। তার তালিকাও আছে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সমস্ত রকম পদক্ষেপই করা হচ্ছে।”

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE