রবিবার দিনভরই আকাশ ছিল মেঘলা । ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
ছুটির দিনে এক পশলা বৃষ্টিতে শহর জুড়ে নামল স্বস্তি। সে বৃষ্টির জোর ছিল না মোটেই। তবু চড়া রোদের চাদরটা সরেছে, কমেছে গত কয়েকদিনের নিদারুণ কষ্ট। রবিবার সকাল থেকেই নিম্নচাপের দরুন মেদিনীপুর ও খড়্গপুর শহর-সহ গোটা জেলার আকাশ ছিল মেঘলা। আর তাতেই এসেছে স্বস্তি।
গত প্রায় এক মাস তীব্র দহনে জ্বলতে হয়েছে শহরবাসীকে। সর্বাঙ্গ ঢেকে রাস্তায় বেরিয়েও রেহাই মিলছিল না। স্বস্তি ছিল না বাড়ির ভেতরে। রোদের হলকা আর ভ্যাপসা গরমে সকলেরই তখন প্রাণান্তকর দশা। মে মাসের গোড়াতেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড ছাড়িয়ে যায়। তারপর টানা ৪০-৪২ ডিগ্রিতেই ঘুরে বেরিয়েছে তাপমাত্রা। যদিও এ দিন এক ধাক্কায় তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মেদিনীপুর কলেজের এন সি রাণা আকাশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্তা মাখনলাল নন্দগোস্বামী বলেন, “সোমবারও এই রকম আবহাওয়া থাকতে পারে।”
এ দিন আকাশ মেঘলা ছিল দিনভর। বাতাসে গরম হলকা নেই। উল্টে আরামের ছোঁয়া। সাবধানীরা কেউ কেউ ছাতা নিয়ে বেরোলেও বেশিরভাগ মানুষই ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে ভিজেছেন। অনেকে আবার আনন্দে পিকনিক করেছেন। সকলের মুখে এক কথা, অবশেষে গরমের হাত থেকে রেহাই মিলল। তবে ঠান্ডা পানীয় বিক্রেতাদের আক্ষেপ, “সারাদিনে এক গ্লাস লস্যিও বিক্রি করতে পারিনি।” তেমন রোজগার না হওয়ায় আক্ষেপ থাকলেও আরামে দোকানে বসে খোশগল্প করেছেন তাঁরাও।
মাঝেমধ্যে কয়েক পশলা বৃষ্টিও হয়। ছবি: কিংশুক আইচ।
এ ক’দিন কাঠফাটা গরমেও কাজের তাগিদে মানুষের ঘরে বসে থাকার জো ছিল না। টুপি, ছাতা মাথায় তোয়ালে-গামছায় মুখ ঢেকে লোকজন বাইরে বেরিয়েছেন। কিছুক্ষণ কাজ করার পরেই ক্লান্তি। রোদের তাপে পুড়তে পুড়তে এক সময় মনে হত, আর টানা যাচ্ছে না। তাই চাতক পাখির মতো সকলেই তাকিয়ে ছিলেন আকাশের দিকে। এক পশলা বৃষ্টির অপেক্ষায়। চড়া রোদে ক্ষতি হচ্ছিল চাষেরও। গাছেই শুকিয়ে যাচ্ছিল আম, ফেটে যাচ্ছিল লিচু, সেচ দিয়েও সুরাহা হচ্ছিল না। ক্ষতি হচ্ছিল সব্জির। জলস্তর দ্রুত নেমে যাওয়ায় শুকিয়ে যেতে বসছিল পুকুর। পুকুরের জল দ্রুত কমতে থাকায় মাছ মরে যাওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছিল। নলকূপ থেকে জল উঠছিল না। অবশেষে ছবিটা বদলালো। বেশি বৃষ্টি হলে পেকে যাওয়া তিল ও বাদামের ক্ষতি হতে পারে। বাকি সব ক্ষেত্রেই এই বৃষ্টি সহায়ক হবে বলে কৃষি আধিকারিক দুলাল দাস অধিকারী জানান।
আফশোস অবশ্য কিছুটা থাকছে কারণ ভারী বৃষ্টির দেখা মেলেনি। এ দিন যেটুকু বৃষ্টি হয়েছে, তা মাটিতে পড়তে না পড়তেই শুকিয়ে গিয়েছে। সকলেই তাই চাইছেন, শুধু মেঘলা আকাশ নয়, বৃষ্টি নামুক ঝমঝমিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy