তমলুক জেলা হাসপাতালে শোকস্তব্ধ নন্দিতা মালের স্বামী প্রশান্ত। —নিজস্ব চিত্র।
হলদিয়া-মেচেদা জাতীয় সড়কে ১০ কিলোমিটারের ব্যবধানে দু’টি পৃথক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল চার জনের। আহত হলেন ১৮ জন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, “লরি নিজের লেন ভেঙে অন্য লেন ধরে আসার ফলেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ওই লরি চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” চালক পলাতক।
সোমবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ নন্দকুমারের কামারদা গ্রামে যাত্রী বোঝাই বাসের সঙ্গে বিপরীতমুখী লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে এক মহিলা-সহ ৩ জনের মৃত্যু হয়। ১৬ জন গুরুতর জখম হন। আহতদের তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অন্য দিকে, এ দিনই সকালে ওই একই সড়কে ১০ কিলোমিটার দূরে তমলুক থানার নেতাজী নগরের কাছে একটি যন্ত্রচালিত ভ্যানের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনকে দিঘা-হাওড়া রুটের একটি সরকারি বাস ধাক্কা মারলে একজনের মৃত্যু হয়। ২ জন আহত হন। ৩ জনকেই তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে একজনের মৃত্যু হয়।
সোমবার বিকেলে হলদিয়া-মেচেদা রুটের একটি বেসরকারি বাস মেচেদা থেকে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে হলদিয়ার দিকে যাচ্ছিল। নন্দকুমারের কামারদা গ্রামে স্থানীয় দক্ষিণ নারিকেলদা অফিসের কাছেই বাসটি অন্য একটি গাড়িকে অতিক্রম করার সময় লেন ভেঙে উল্টো দিক থেকে আসা একটি লরির সামনে পড়ে। বাস চালক লরিকে পাশ কাটানোর চেষ্টা করলেও মুখোমুখি ধাক্কা এড়াতে পারেননি। ঘটনাস্থলেই ৩ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন ১৬ জন। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন নন্দিতা মাল (৩০)। অন্য দু’জনের পরিচয় রাত অবধি জানা যায়নি। নন্দিতাদেবীর স্বামী প্রশান্ত মাল তমলুকের চাঠরা কুঞ্জরানি বাণীভবন হাইস্কুলের শিক্ষক। তাঁদের বাড়ি কোলাঘাটের দেউলিয়া এলাকার বাড়বারিট গ্রামে। তাঁরা নন্দকুমারে ভাড়ায় থাকতেন। প্রশান্তবাবু বলেন, “নন্দিতা কোলাঘাট থেকে ফিরছিল। আমি অন্য একটি বাসে ফিরছিলাম। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় লোকেরা স্ত্রী-র ফোন থেকে দুর্ঘটনার কথা জানান।”
তমলুক জেলা হাসপাতালে আহতদের মধ্যে রয়েছেন হলদিয়ার ডালিম্বচক গ্রামের রামপদ দাস, আরতি দাস। আহত হয়েছে তাঁদের ন’য় বছরের মেয়ে রিয়াও। চালকের পিছনের আসনেই বসেছিলেন তমলুকের চাতরাদাঁড়ি গ্রামের বছর পঞ্চাশের গোপাল ঘোড়ই। মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে তাঁর। গোপালবাবু বলেন, “বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আত্মীয়বাড়ি যাচ্ছিলাম।” তাঁর অভিযোগ, বাসটি দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল। নন্দকুমারের দুর্ঘটনায় বাসের খালাসি গুরুতর আহত হয়েছেন। কমল সাউ নামে আহত এক ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়।
এ দিন তমলুকের নেতাজী নগরের কাছে একটি ভ্যানে কাঠ বোঝাইয়ের সময় একটি যাত্রী বাস ওই মেশিন ভ্যানে ধাক্কা মারে। এতে ভ্যানের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ৩ জন গুরুতর আহত হন। পরে তমলুক হাসপতালে মারা যান দিলীপ মাইতি (৪৩)। বাড়ি সোয়াদিঘি গ্রামে। আহতদের দেখতে সন্ধ্যায় হাসপাতালে আসেন জেলা স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম দাস, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়, তমলুক পুরসভার কাউন্সিলর রবীন্দ্রনাথ সেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy