Advertisement
E-Paper

সিপিএম নেতৃত্বে বদল চেয়ে পোস্টার

বাঁকুড়ার পরে পূর্ব মেদিনীপুর। লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরে জেলা নেতৃত্বে বদল চেয়ে পোস্টার পড়ল সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা দফতরে। গোটা ছয়-সাতেক পোস্টার বৃহস্পতিবার সকালে দফতরে ঢোকার মুখে দেওয়ালে সাঁটানো ছিল। সেগুলিতে দাবি করা হয়েছে, জেলা নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে তৃণমূলের গোপন আঁতাঁতে ফল খারাপ হয়েছে। নীচে লেখা ‘সিপিএম বাঁচাও কমিটি’।

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৪ ০২:২৬

বাঁকুড়ার পরে পূর্ব মেদিনীপুর।

লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরে জেলা নেতৃত্বে বদল চেয়ে পোস্টার পড়ল সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা দফতরে। গোটা ছয়-সাতেক পোস্টার বৃহস্পতিবার সকালে দফতরে ঢোকার মুখে দেওয়ালে সাঁটানো ছিল। সেগুলিতে দাবি করা হয়েছে, জেলা নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে তৃণমূলের গোপন আঁতাঁতে ফল খারাপ হয়েছে। নীচে লেখা ‘সিপিএম বাঁচাও কমিটি’।

এমন নামে কোনও কমিটি গোটা রাজ্যে নেই। কিছু দিন আগেও লক্ষ্মণ শেঠের খাসতালুক বলে পরিচিত তমলুকের নিমতৌড়িতে কারা এই পোস্টার সাঁটাল, তা অস্পষ্ট। কিন্তু বাঁকুড়ায় যেমন ‘এসি গাড়ি ছাড়ুন, রোদে ঘুরুন’ পোস্টারে (ফেসবুকেও তা পোস্ট করা হয়েছিল) নেতাদের বার্তা দিতে চেয়েছিলেন কিছু সাধারণ কর্মী, এ ক্ষেত্রেও তেমনই হতাশা এবং রোষের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে দলের অনেকে মনে করছেন। ভোটের পরে এ দিনই প্রথম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক ছিল। বিষয়টি উঠলেও আলোচনা এগোয়নি।

রাজ্য জুড়ে নজিরবিহীন বিপর্যয়ের পরে যেখানেই নিচুতলার নেতা-কর্মীরা উঁচুতলার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছেন, প্রতি ক্ষেত্রেই শীর্ষ নেতারা হয় তা চেপে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন অথবা শাস্তির হুমকি দিয়ে চোখ রাঙিয়েছেন। বাঁকুড়ায় দাবি করা হয়েছিল, এমন কোনও পোস্টারই পড়েনি। দু’দিন আগে আলিমুদ্দিনের সামনে কিছু নেতা-কর্মীর বিক্ষোভের পরে আবার তাঁদের দল থেকে বহিষ্কারের কথা তোলেন রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু।

এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সকালে নিমতৌড়ির কার্যালয়ের বাইরের দেওয়ালে পোস্টারগুলি নজরে আসার পরেই জেলা নেতৃত্বের নির্দেশে সেগুলি ছিঁড়ে দেওয়া হয়। সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক কানু সাহু বলেন, “কোথায় কে পোস্টার মারল, এ ভাবে নেতৃত্বের বদল হয় না কি? আমাদের দলে এ সব হয় না। আগে আত্মমূল্যায়ন হয়। কারা এ সব করছে, দলীয় ভাবে তদন্ত করা হবে।” জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য নিরঞ্জন সিহি আবার দাবি করেন, তৃণমূলের লোকজন ওই সব পোস্টার সাঁটিয়ে থাকতে পারে।

পোস্টারগুলিতে নেতাদের প্রতি অনাস্থা ছাড়াও তোলা হয়েছে অন্তর্ঘাতের মতো গুরুতর অভিযোগ। দাবি করা হয়েছে, তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আঁতাঁতের কারণেই এক শ্রেণির সিপিএম নেতা-কর্মী দলের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। শুভেন্দুর প্রতিক্রিয়া, “এই জেলায় সিপিএমের তো অস্তিত্বই নেই। আমরা পাঁচ লাখেরও বেশি ভোটে এগিয়ে আছি। আসলে দলের কোন্দল চাপা দিতেই ওরা এখন অর্থহীন কথাবার্তা বলছে।”

বস্তুত, ভোটের আগে থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরে গোষ্ঠী কোন্দলে কার্যত ভাগ হয়ে গিয়েছিল সিপিএম। দলের একটা বড় অংশের বিরোধিতা সত্ত্বেও প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের বহিষ্কার তাতে আরও ইন্ধন জোগায়। কানুবাবু এবং দলের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক প্রশান্ত প্রধানের গোষ্ঠীর বিরোধও প্রকাশ্যে এসে যায়। রাজ্য নেতৃত্ব বহু চেষ্টা করেও ভোটের আগে পর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেননি। তার জেরেই এই সব পোস্টার কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্মল জানা শুধু বলেন, “এই নিয়ে পরে দলে আলোচনা হবে, তার পরে মন্তব্য করব।”

ananda mandal cpm
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy