Advertisement
E-Paper

সচেতন করতে স্কুল-কলেজে আইনি শিবির

পরিবারের লোকজন চেয়েছিলেন বছর ষোলোর মেয়ের বিয়ে দিতে। কিন্তু বিয়ে নয়, পড়াশোনা করতে চায় মেয়ে। বিয়ে হলে পড়াশোনা নষ্ট হবে, এই ভেবে দিন কয়েক ধরেই স্কুলের ক্লাসরুমে মনমরা হয়ে বসে থাকত সাঁকরাইলের এক স্কুলের ওই ছাত্রী। পরিস্থিতির কথা বুঝতে পারে তার এক সহপাঠিনী। দিন কয়েক আগে স্কুলে এক সচেতনতা শিবির করেছিলেন জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০৭

পরিবারের লোকজন চেয়েছিলেন বছর ষোলোর মেয়ের বিয়ে দিতে। কিন্তু বিয়ে নয়, পড়াশোনা করতে চায় মেয়ে। বিয়ে হলে পড়াশোনা নষ্ট হবে, এই ভেবে দিন কয়েক ধরেই স্কুলের ক্লাসরুমে মনমরা হয়ে বসে থাকত সাঁকরাইলের এক স্কুলের ওই ছাত্রী। পরিস্থিতির কথা বুঝতে পারে তার এক সহপাঠিনী। দিন কয়েক আগে স্কুলে এক সচেতনতা শিবির করেছিলেন জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা। বাল্য বিবাহ রোধ নিয়েও আলোচনা হয়েছিল। শিবির চলাকালীন একটি ফোন নম্বর উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের জানানো হয়েছিল। আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের পরামর্শ ছিল, কোনও প্রয়োজন মনে হলে এই ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা যেতে পারে। পরিস্থিতি দেখে ওই ফোন নম্বরেই যোগাযোগ করে সহপাঠিনী। সুফলও মেলে। এলাকায় পৌঁছে বছর ষোলোর ওই ছাত্রীর পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ- প্রশাসনের কর্তারা। ভুল বুঝতে পারেন পরিবারের লোকজন। শেষমেশ আর বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়নি ওই ছাত্রীকে। সেই দিন পুলিশ- প্রশাসনের কর্তাদের ওই ছাত্রী বলেছিল, “এখন পড়াশোনা করব। নিজের পায়ে দাঁড়াব। তারপর ও সব নিয়ে ভাবব।”

জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের এক কর্তা বলছিলেন, “সচেতনতাই পারে পুরনো ধারণা ভেঙে দিতে। আমরা তাই স্কুল- কলেজগুলোয় আরও বেশি সচেতনতা শিবির করার উদ্যোগ নিয়েছি।” জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের (ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথ্‌রিটি)-এর সম্পাদক সুজিতকুমার ঝা-এর কথায়, “কিছু সামাজিক সমস্যা রয়েছে। একমাত্র সচেতনতাই পারে এই সমস্যা দূর করতে।”

চলতি বছরের জানুয়ারির গোড়া থেকে নভেম্বরের গোড়া পর্যন্ত জেলায় ১৮৭টি শিবির করেছে জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে ৯৮টিই কলেজ-স্কুলে। এমন শিবিরের ফলেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে উঠতে পারে বলে মনে করেন শিক্ষকেরাও। ভাদুতলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিতেশ চৌধুরীর কথায়, “শিবিরের মাধ্যমে আইনি পরিষেবা সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা যায়।”

শিবিরে শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহের প্রসঙ্গ যেমন উঠে আসে, তেমন উঠে আসে অত্যাচারের প্রসঙ্গও। নাবালিকার বিয়ে বন্ধে সরকারি প্রচার, কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্পের সূচনাও ছবিটা খুব একটা পাল্টাতে পারছে না। নারীদের উপর অত্যাচারের ঘটনা বাড়ছে। জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের এক কর্তার কথায়, “আমরা জানাচ্ছি, অত্যাচারের শিকার হলে শিশু সহ কোনও ব্যক্তি বিশেষ সুরক্ষা আধিকারিকের কাছে অভিযোগ করতে পারেন। তখন তা খতিয়ে দেখে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। দরখাস্ত অনুসারে মামলা পরিচালনার জন্য আইনজীবী নিয়োগ করবে আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষই। আইনজীবীর পারিশ্রমিকও কর্তৃপক্ষ বহন করবে।”

medinipur awareness legal workshop
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy