Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মন্ত্রী অনেক বেশি টাকা পেয়েছেন, বলছেন সুদীপ্ত

অস্বস্তির ফাঁসে বস্ত্রমন্ত্রী। একে নাম-বিভ্রাট। তার উপরে সারদা মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরটের (ইডি) জেরার মুখে পড়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে সোমবার। এ বার ওই মামলায় রাজ্যের বস্ত্রমন্ত্রী শ্যামাপদ (যাঁর আসল নাম শ্যামাপ্রসাদ) মুখোপাধ্যায়ের অস্বস্তি আরও বাড়ালেন খোদ সারদা-কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। সাংবাদিকদের কাছে সুদীপ্তবাবু বললেন, বস্ত্রমন্ত্রী কারখানা বিক্রির যে মূল্য দাবি করছেন, তার চেয়ে বেশি টাকা পেয়েছিলেন। মন্ত্রী অবশ্য সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৪৪
Share: Save:

অস্বস্তির ফাঁসে বস্ত্রমন্ত্রী।

একে নাম-বিভ্রাট। তার উপরে সারদা মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরটের (ইডি) জেরার মুখে পড়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে সোমবার। এ বার ওই মামলায় রাজ্যের বস্ত্রমন্ত্রী শ্যামাপদ (যাঁর আসল নাম শ্যামাপ্রসাদ) মুখোপাধ্যায়ের অস্বস্তি আরও বাড়ালেন খোদ সারদা-কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। সাংবাদিকদের কাছে সুদীপ্তবাবু বললেন, বস্ত্রমন্ত্রী কারখানা বিক্রির যে মূল্য দাবি করছেন, তার চেয়ে বেশি টাকা পেয়েছিলেন। মন্ত্রী অবশ্য সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন।

বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের ধবনী গ্রামে লোকসানে চলা একটি সিমেন্ট কারখানা ২০০৯ সালে সারদাকে বিক্রি করেছিলেন শ্যামবাবু। তা নিয়েই সোমবার তাঁকে বিধাননগরে তলব করেছিল ইডি। অভিযোগ উঠেছিল, বিষ্ণুপুরের এই তৃণমূল বিধায়ক নিজের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে, চাপ দিয়ে সুদীপ্ত সেনকে ওই ‘ল্যান্ডমার্ক সিমেন্ট’ কারখানা কিনতে বাধ্য করেছিলেন। শ্যামবাবুর দাবি, ২.৮১ কোটি টাকায় কারখানা বিক্রি হয়েছিল। ইডি-কে মন্ত্রী জানান, তিনি ছাড়া ওই কারখানার আরও ছ’জন মালিক ছিলেন। ব্যাঙ্কঋণ বাদ দিয়ে তাঁরা ৪৬ লক্ষ টাকা পান। তাঁর ভাগে পড়ে ৮ লক্ষ।

মঙ্গলবার বীরভূমের সিউড়ি আদালত চত্বরে সুদীপ্তকে প্রশ্ন করা হয়, ওই কারখানা কিনতে শ্যামবাবুকে কত টাকা দিয়েছিলেন? সুদীপ্ত দাবি করেন, “টাকার সঠিক অঙ্কটা মনে নেই। তবে, সাংবাদিকরা যে অঙ্কের (২ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা) কথা বলছেন, তার থেকে অনেক বেশি টাকা ওঁকে পেমেন্ট করা হয়েছে।” নগদ ও চেক, দু’ভাবেই সেই টাকা শ্যামবাবুকে মেটানো হয়েছে বলে তাঁর দাবি। সুদীপ্তবাবুর এই বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে বস্ত্রমন্ত্রী বলেন, “সুদীপ্ত সেন নিজেই প্রতারণায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তি। তিনি কী বললেন না বললেন, তাতে আমার কিছু যায় আসে না!” এর পরেই মন্ত্রীর পাল্টা দাবি, “২ কোটি ৮১ লক্ষ টাকাতেই কারখানা বিক্রির চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু, সেই পুরো টাকাটাও সুদীপ্ত দেননি! এমনকী, তিনি যে চেক (২ কোটি ৭১ লক্ষ) দিয়েছিলেন, সেটিও বার চারেক বাউন্স করার পরেই টাকা তুলতে পেরেছিলাম।”

সারদা-কেলেঙ্কারিতে শ্যামবাবু জড়িত অভিযোগ তুলে তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছে বাঁকুড়া জেলা সিপিএম। এ দিন বিকেলে এই দাবিতে বড়জোড়া ও বেলিয়াতোড় মোড়ে বিক্ষোভ-সভা করেন সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা।

আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের কাছে সারদা-কর্ণধার দাবি করেন, সংস্থার ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর’ হিসেবে বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়কে তিনি মাসে দু’ লক্ষ টাকা বেতন দিতেন। তবে, মুম্বই বা কলকাতায় কোনও সাংসদকে কোনও ফ্ল্যাট দেওয়া হয়নি বলেও তাঁর দাবি। সারদা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই ওই সংস্থার সঙ্গে তাঁর আর্থিক লেনদেনের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি করে এসেছেন শতাব্দী। এ দিন এ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ বলেন, “মিটিংয়ে ব্যস্ত আছি। পরে ফোন করুন।” পরে অবশ্য তিনি আর ফোন ধরেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE