Advertisement
E-Paper

মুখ্যমন্ত্রীর প্রার্থীকে ডাকলই না কেন্দ্র

কলকাতা বন্দরের নতুন চেয়ারম্যান পদে রাজ্যের প্রস্তাবিত প্রার্থীর সাক্ষাৎকারই নিল না কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রক! এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৬ ০৩:০৫
 বি পি গোপালিকা  ও সুব্রত গুপ্ত

বি পি গোপালিকা ও সুব্রত গুপ্ত

কলকাতা বন্দরের নতুন চেয়ারম্যান পদে রাজ্যের প্রস্তাবিত প্রার্থীর সাক্ষাৎকারই নিল না কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রক! এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

গত প্রায় ছ’মাস ধরে বন্দরের চেয়ারম্যান পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে কাজ চালাচ্ছেন বিশাখাপত্তনম বন্দরের চেয়ারম্যান টি কে কৃষ্ণবাবু। নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ করতে চেয়ে মাস কয়েক আগে বিজ্ঞাপন দেয় জাহাজ মন্ত্রক। সেই বিজ্ঞাপন দেখে রাজ্যের উদ্যানপালন সচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকার নাম প্রস্তাব করে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী নীতীন গডকড়ীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই মনে করেছিলেন গোপালিকাকে মেনে নেবে কেন্দ্র। কিন্তু গত জুন মাসের মাঝামাঝি ১১ জন আবেদনকারীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হলেও ডাকই পাননি গোপালিকা।

সাক্ষাৎকার-পর্ব শেষে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান হিসাবে মহারাষ্ট্র ক্যাডারের এক আইপিএস এবং পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের আইএএস তথা বর্তমানে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের অধীনে জুট কমিশনার হিসাবে কলকাতায় কর্মরত সুব্রত গুপ্তর নাম নিয়েই বেশি চর্চা চলছে। তবে জাহাজ মন্ত্রক সূত্রের খবর, সুব্রতবাবুর নামে ইতিমধ্যেই সিলমোহর পড়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিয়োগ সংক্রান্ত মন্ত্রিগোষ্ঠীর ছাড়পত্রের পর বিষয়টি এখন শুধু প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনাধীন। তেমন নাটকীয় কিছু না ঘটলে সেপ্টেম্বরের গোড়াতেই এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়ার কথা। এ নিয়ে সুব্রতবাবুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ইন্টারভিউ দিয়েছি। তার পর কী হয়েছে, জানি না।’’

কিন্তু গোপালিকাকে ডাকাই হল না কেন? জাহাজ মন্ত্রকের বক্তব্য, তাঁর নাম নির্দিষ্ট সময়ে তাদের কাছে আসেনি। যা শুনে নবান্নের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘কিছু একটা গোলমাল হয়েছে। কারণ, রাজ্যের থেকে নাম যথা সময়েই মন্ত্রকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’’ বস্তুত, নবান্নের একাংশের অভিযোগ, গোপালিকাকে যে ডাকা হবে না তা এক রকম ঠিক হয়েই ছিল। তাই তাঁর নামের লিখিত প্রস্তাবটি রহস্যজনক ভাবে মন্ত্রক থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে। এই অভিযোগ আবার উড়িয়ে দিয়েছে জাহাজ মন্ত্রক। তাদের দাবি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যে ক’টি আবেদনপত্র এসেছে তার মধ্যে থেকে স্বচ্ছতা বজায় রেখেই পরবর্তী চেয়ারম্যান বাছা হবে। আর গোপালিকার মন্তব্য, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমি অন্ধকারে। কী হয়েছে বলতে পারব না।’’

নবান্নের খবর, বছরখানেক আগে কলকাতা বন্দরের তৎকালীন চেয়ারম্যান রাজপাল সিংহ কাহালোঁর নামে জাহাজমন্ত্রীর কাছে কিছু গুরুতর অভিযোগ জমা পড়ে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে রাজ্যের কাছে এক জন দক্ষ অফিসারের নাম চেয়ে পাঠান কেন্দ্রীয় জাহাজসচিব রাজীব কুমার। তখন, সরকারি ভাবে না হলেও, রাজ্যের বর্তমান পরিবেশ সচিব অর্ণব রায়কে ওই পদে পাঠাতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরেই ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে কলকাতা পুলিশের হাতে কাহালোঁ গ্রেফতার হন। কিন্তু অর্ণববাবুর ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি জাহাজ মন্ত্রক। ফলে চেয়ারম্যান পদ ফাঁকাই পড়ে থাকে।

নতুন চেয়ারম্যান যিনি হতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে, সেই সুব্রত গুপ্ত রাজ্য থেকে পাঁচ বছরের ডেপুটেশনে কেন্দ্রীয় সরকারি পদে গিয়েছেন। এর মধ্যে সাড়ে তিন বছর জুট কমিশনার হিসেবে কাজ করে ফেলেছেন তিনি। ফলে নিয়োগ হলে দেড় বছরের জন্য চেয়ারম্যান পদে থাকতে পারবেন তিনি। কিন্তু বন্দরের চেয়ারম্যান পদের মেয়াদ পাঁচ বছর। ফলে তার পর কী হবে? জাহাজ মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশ বলছেন, কেন্দ্র চাইলে ডেপুটেশনের মেয়াদ শেষের পরেও সুব্রতবাবুকে আরও দু’বছরের জন্য রেখে দিতে পারে। সে জন্য রাজ্যের অনুমোদনের কোনও প্রয়োজন নেই। কিন্তু তার পরেও চেয়ারম্যান পদের কার্যকাল দেড় বছরের মতো বাকি থাকবে। তখন কী হবে, সেই ধোঁয়াশা অবশ্য কাটাননি মন্ত্রকের কর্তারা।

Kolkata port Ministry of shipping
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy