কব্জায় এল এক ‘গুন্ডা’। আর এক ‘গুন্ডা’-কে গুলি করেই মারতে হল।
বাঁকুড়ার জঙ্গল ঘেঁষা গ্রামগুলিতে লাগাতার উপদ্রব চালানো এবং মানুষের প্রাণ নেওয়া ‘গুন্ডা’ হাতিগুলিকে ধরে উত্তরবঙ্গে নিয়ে যাওয়া হবে বলে কয়েক সপ্তাহ আগেই জেলায় এসে জানিয়েছিলেন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। সেই মতো উত্তরবঙ্গ থেকে কুনতি হাতি এনে ‘গুন্ডা’ ধরার অভিযানে নামে বন দফতর। রবিবার থেকে অভিযান শুরু হয়েছে। তিন দাঁতালকে চিহ্নিত করে তাদের অবস্থান জানতে ব্যবহার করা হয়েছে ড্রোনও।
শেষমেশ সোমবার মাঝরাতে মিলল প্রথম সাফল্য। বেলিয়াতোড় রেঞ্জের বারোমেস্যার জঙ্গলে একটি ‘গুন্ডা’-কে ঘুম-গুলি ছুড়ে বেহুঁশ করে কাবু করেন বনকর্মীরা। গভীর রাতে তাকে উদ্ধার করে রেঞ্জ দফতরে এনে একটি ট্রাকে রাখা হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের বাকি দুটি হাতির খোঁজে বারোমেস্যার জঙ্গলে তল্লাশি শুরু হয়। দুপুর পর্যন্ত অবশ্য দু’টি হাতির খোঁজ পাওয়া যায়নি। বিকেলে একটি হাতিকে বেলিয়াতোড় রেঞ্জের খাগবিটের জঙ্গলে দেখতে পাওয়া যায়। কুনকিতে চেপে তাদের ধাওয়া করেন বনকর্মীরা।
তখনই বিপত্তি। ডিএফও (বাঁকুড়া উত্তর বনবভাগ) পিনাকী মিত্র জানান, হাতিটিকে ঘুম-গুলি করা সত্ত্বেও সে কাবু হয়নি। উল্টে আরও গভীর জঙ্গলের দিকে পাগলের মতো ছুটতে শুরু করে। পিছু নেয় বনকর্মী ও হুলাপার্টিও। ডিএফও বলেন, ‘‘একটা সময় ওই হাতি পাগলা হয়ে আমাদের কর্মীদের উপরেই হামলা চালাতে ছুটে আসে। পালাতে গিয়ে দুই কর্মী পড়ে গিয়ে জখম হন। এক জনের প্রায় বুকের উপরে পা তুলেই দিচ্ছিল ওই হাতিটি! পরিস্থিতি বুঝে নিরুপায় হয়ে ওকে গুলি করে মারতে হয়েছে।’’ বন দফতর সূত্রের খবর, এই ‘রেসিডেন্সিয়াল’ হাতিটি অন্তত পাঁচ জনের প্রাণ নিয়েছে। জখম করেছে আরও অনেককে।
জেলা বন দফতরের এক কর্তার দাবি, ১৫ বছরের যে হাতিটিকে কব্জা করা গিয়েছে এবং বছর তিরিশের যে দাঁতালটিকে মারা হয়েছে, তারা একসঙ্গেই ঘোরাফেরা করত। তাদের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘বাপ-ব্যাটা’। অথচ সোমবারই রাত দু’টো নাগাদ বেলিয়াতোড় রেঞ্জের একাধিক গ্রামে ঢুকে ধান-চাল নষ্ট করে দু’টি হাতি। সব্জি খেত তছনছ করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, হামলাকারী দু’টি হাতির একটি ছোট, অন্যটি বেশ বড়। যা শুনে বনকর্মীদের একাংশ বলছেন, এ তো বাপ-ব্যাটার কীর্তি বলেই মনে হচ্ছে। কিন্তু, ‘ব্যাটা’ যদি সোমবার রাতেই ধরা পড়ে, তা হলে ওই হামলা চালাল কে?
সংশয় থেকেই গেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy