রবিউল আলম চৌধুরীর হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দিচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে।— নিজস্ব চিত্র।
খোদ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর গড়ে হানা দিল তৃণমূল! এ বার কংগ্রেস ছেড়ে শাসক দলে যোগ দিলেন রেজিনগরের বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী। যে রেজিনগর থেকে অধীর-ঘনিষ্ঠ বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে ভাঙিয়েছিল তৃণমূল এবং উপনির্বাচনে হুমায়ুনকে হারাতে রবিউলকে বাজি ধরেছিলেন কংগ্রেস নেতারা। রেজিনগর অধীরেরই লোকসভা কেন্দ্র বহরমপুরের অন্তর্গত।
রবিউল বৃহস্পতিবার তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে শাসক দলে যোগ দেওয়ায় কংগ্রেসের বিধায়ক কমে দাঁড়াল ৪২। তবে বিধায়ক-পদে ইস্তফা দিয়ে উপনির্বাচনে তিনি লড়বেন কি না, তা নিয়ে রহস্য রেখেই রবিউল বলেন, ‘‘এটা ভবিষ্যতের ব্যাপার।’’ কংগ্রেসেরই সতীর্থ বিধায়কদের কেউ কেউ বলছেন, কয়েক মাস আগে বিধানসভা ভোটে রেজিনগরে হুমায়ুন সমাজবাদী পার্টির টিকিটে প্রার্থী হয়ে কঠিন লড়াইয়ে ফেলেছিলেন রবিউলকে। সেই লড়াই জিতেও কেন কংগ্রেস ছাড়লেন? রবিউলের জবাব, ‘‘আমি তো বিরোধী দলের বিধায়ক ছিলাম। ৬০ লক্ষ টাকার যে বিধায়ক তহবিল পেতাম, তাতে গোটা এলাকার উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছিল না। উন্নয়নের জন্যই তৃণমূলে এলাম।’’ শাসক দলের সদস্য কি তা হলে অতিরিক্ত টাকা পাবেন? এ প্রশ্নে রবিউলের স্বীকারোক্তি, ‘‘শাসক দলে থেকে চাপ দিতে পারব। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরা উন্নয়নের জন্য আমাদের সাহায্য করবেন।’’
তা হলে বিরোধী দলে থাকলে উন্নয়নে সাহায্য মিলছে না, এই অভিযোগই কি স্বীকৃতি পাচ্ছে? পরিস্থিতি সামলাতে অভিষেক বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব জেলায় সার্বিক উন্নয়ন করেছেন। জেলাগুলিকে আরও অগ্রণী ভূমিকায় আনতে স্বেচ্ছায় রবিউলেরা তৃণমূলে আসছেন। আসলে কাজ করার মানসিকতা থাকা দরকার।’’ এর আগে তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে গিয়েছিলেন বিষ্ণুপুরের কংগ্রেস বিধায়ক তুষার ভট্টাচার্য। তিনি এখনও বিধায়ক-পদে ইস্তফা দেননি। কংগ্রেসকে এখন ফের দলত্যাগ-বিরোধী আইনের কথা বলে বিধায়ককে চিঠি পাঠানোর তোড়জোড় করতে হচ্ছে!
রবিউল অবশ্য এ দিন অধীরবাবুর বিরুদ্ধে মন্তব্য করেননি। তবে অধীরবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘বেলডাঙার হাটে বলদ বিক্রির মতোই রবিউল বিক্রি হয়েছেন! ওঁকে ৫ কোটি টাকা দিয়ে তৃণমূল কিনেছে। ওঁকে সরকার-নিয়ন্ত্রিত একটি বাজারের চেয়ারম্যান করা হচ্ছে। বাপের ব্যাটা হলে পদত্যাগ করে ভোটে জিতে দেখান!’’
প্রদেশ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দাগার এমন সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি দলের বিক্ষুব্ধ বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। তাঁর মন্তব্য, ‘‘অধীরবাবু ও আব্দুল মান্নান যে ভাবে দল চালাচ্ছেন, তাতে কংগ্রেস ক্রমে আইসক্রিমের মতো গলে যাবে! অবিলম্বে এই দু’জনের পদ ছেড়ে দেওয়া উচিত।’’ ক’দিন আগেই মানসবাবুকে ‘কুনকি হাতি’র সঙ্গে তুলনা করেছিলেন অধীরবাবু। মানসবাবু এ বার পাল্টা প্রদেশ সভাপতিকে ‘কুনকি হাতি’র সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, ‘‘তিনি যে কংগ্রেসের গড়কে রোজই তৃণমূলের হাতে তুলে দিচ্ছেন, তা স্পষ্ট। তা হলে কি অধীরবাবু নিজেই তৃণমূলের কাছ থেকে সুপারি নিয়েছেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy