Advertisement
E-Paper

জালে ধরা মাছ নেটে বেচবে নিগমের অ্যাপ

রোম্যান্টিকতা দূরের কথা, কারও কারও অবশ্য নোংরা পূতিগন্ধময় বাজারে হানা দেওয়াটাই না-পসন্দ। তা ছাড়া চাকরির চাপে অনেকের পক্ষে সাতসকালে বাজার-অভিযান চালানোটাও কঠিন।

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:২৩
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

বদলটা মালুম হচ্ছে কয়েক বছর ধরে। ব্যস্ত নাগরিক জীবনে বাজারে ঘুরে ঘুরে সময় নিয়ে মাছ বাছাইয়ের রোম্যান্টিকতাটুকু ইদানীং বিসর্জন দিতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক বাঙালিই।

রোম্যান্টিকতা দূরের কথা, কারও কারও অবশ্য নোংরা পূতিগন্ধময় বাজারে হানা দেওয়াটাই না-পসন্দ। তা ছাড়া চাকরির চাপে অনেকের পক্ষে সাতসকালে বাজার-অভিযান চালানোটাও কঠিন। এই পরিস্থিতিতে কারও গন্তব্য, সন্ধ্যার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ‘হাইপারমার্কেট’, কারও বা ভরসা নেট মারফত ‘অর্ডার’ দেওয়া প্যাকেট-বন্দি তাজা মাছ, কাটা মাছ। নতুন যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ বার বদলাচ্ছে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমও। নিছকই রকমারি মাছ উৎপাদনের প্রসারে আটকে না-থেকে বছর তিনেক হল খুচরো বিপণনে ঢুকে পড়েছে তারা। নিগমের নতুন টেক্কা এ বার মোবাইল অ্যাপ।

অ্যাপের সৌজন্যে ঘরে বসে চাল-ডাল-আটা-ময়দা-তেল-মশলা-মাছ, মায় আনাজপাতি বাজার করা এখন জলভাত। বাজার করার একটি সর্বভারতীয় অ্যাপের কলকাতার প্রতিনিধির দাবি, ‘‘চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। শুধু মাছ বিক্রির হার বৃদ্ধিই মাসে মাসে ১৫-২০ শতাংশ।’’ রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের কর্তাদের দাবি, তাঁদের খুচরো কারবারের ২০ শতাংশই অনলাইনে চলে। বাজার করার দু’তিনটি অ্যাপের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধায় পসার আরও বেড়েছে। নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ দাসের কথায়, ‘‘রাজ্যে অনলাইন বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ এখনও কম। ব্যবসার সম্ভাবনা বুঝেই আমরা অ্যাপ আনছি।’’ নতুন অ্যাপটির নাম ‘স্মার্ট ফিশ’। তার লোগো ও কাঠামো তৈরি হয়ে গিয়েছে। ৫ জানুয়ারি রাজ্য মৎস্য উৎসবে এই প্রকল্পের উদ্বোধনের কথা। এই অ্যাপ-উদ্যোগে মাছের স্মার্টনেসের থেকে নিগমের অধিকতর স্মার্ট হয়ে ওঠার তাগিদ স্পষ্ট।

কী সুবিধা মিলবে মেছো অ্যাপে?

মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, ২৭ রকমের তাজা মাছ, ১৫ রকমের হিমায়িত প্যাকেট-বন্দি মাছের তালিকায় রয়েছে কিছু বিদেশি মাছও। রুই-কাতলা-মৃগেল-ভেটকি-চিংড়ি-শিঙি-ফ্যাসা-শোল-আড়-বোয়াল-গুগলি থেকে এ রাজ্যে চাষ করা ভিন্‌দেশি কোবিয়া, প্যামপিনো, চ্যানোজও থাকবে। জোগাড় করা হবে ইলিশও। আর থাকবে নিগমের শুঁটকি, ‘রেডি টু ফ্রাই’ মাছের পদ। নিগম-কর্তৃপক্ষের দাবি, নলবন ফুড পার্ক, বিকাশ ভবন, রাজারহাটের নবদিগন্ত মার্কেট, নবান্ন, বিধান শিশু উদ্যান, সন্তোষপুরের আউটলেট, এন্টালি মার্কেট-ফুলবাগানের পুরসভার বিপণি থেকে বেলগাছিয়া-রাজবল্লভ পাড়া-সহ শহরের সাতটি জায়গায় নিগমের গাড়ি থেকে অ্যাপ-এর অর্ডারে মাছ সরবরাহ করা হবে। কেউ অর্ডার করার ছ’ঘণ্টার মধ্যে আউটলেট থেকে মাছ নিয়ে যেতে পারবেন। কেউ অনলাইনে টাকা মিটিয়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে মাছ তুলতেও পারবেন। প্রথম তিন মাস, হোমডেলিভারির সুবিধে মিলবে, সল্টলেক-লেক টাউন-রাজারহাট-নিউ টাউনে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মিলবে পরিষেবা।

নিগমের দাবি, গত পাঁচ বছরে পরিকাঠামোর উন্নয়নের ফলে তাদের হেক্টর-পিছু মৎস্য উৎপাদন বেড়েছে ৬০ শতাংশ। নিজস্ব মাছের ভাঁড়ারের জন্যই অন্যান্য অ্যাপের থেকে সস্তায় মাছ দিতে পারবে তারা। তিন বছরে নিগমের খুচরো ব্যবসা ৭৪ লক্ষ থেকে এখন সওয়া দু’‌কোটি টাকা। আগামী আর্থিক বছরে তা আড়াই কোটি হবে বলে কর্তারা আশাবাদী। তবে অন্য একটি বেসরকারি অ্যাপ-এর সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকের মতে, ‘‘নিগমের সরবরাহের তৎপরতা বাড়াতে হবে। হোম ডেলিভারির পরিকাঠামোও বাড়ানো চাই।’’

Mobile App State Fisheries Development Corporation Limited রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম Online Fish Store
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy