হাওয়া বদলের সঙ্গে তাল মেলাতে পূর্বাভাসের ধাঁচে পরিবর্তনের ঢেউ। অল্প সময়ে বেদম বৃষ্টিতে চেন্নাই-মুম্বইয়ের মতো বেহাল দশা যাতে কোথাও না হয়, মৌসম ভবন সে দিকেও নজর দিচ্ছে।
আবহবিদেরা বহু দিন ধরে বলে আসছেন, আবহাওয়া তার চরিত্র বদলাচ্ছে। মৌসম ভবনের খবর: গোটা দেশে বর্ষা এক ভাবে নামছে না। কোথাও কম ঝরছে, কোথাও আবার মাত্র ক’ঘণ্টার বৃষ্টিতে বানভাসি হয়ে যাচ্ছে। অপ্রস্তুত নাগরিকদের দুর্ভোগের সীমা-পরিসীমা থাকছে না। গত ডিসেম্বরে যেমন চেন্নাইবাসীর ছিল না। মুম্বইও একাধিক বার এ হেন অভিজ্ঞতার সাক্ষী।
আবহবিদেরা বলছেন, বর্ষায় আচমকা নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হলে বৃষ্টির জোর বাড়ে। অল্প এলাকা জুড়ে অতিবৃষ্টি হতে পারে। যার ফল এমন মারাত্মক হয়। তাই এ বার নজর রাখা হবে, কোথাও তেমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে কি না। সেই মতো পূর্বাভাস ঘোষণা করা হবে।
কেন্দ্রীয় ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রকের খবর: বর্ষার পূর্বাভাস ব্যবস্থা নিখুঁত করে তুলতে চারশো কোটি টাকা খরচে চালু হয়েছে ‘মনসুন মিশন’ প্রকল্প। উদ্যোগটি সফল করার লক্ষ্যে সম্প্রতি পুণের আবহবিজ্ঞান দফতরে বৈঠকে বসেছিলেন মৌসম ভবনের হর্তাকর্তারা। মন্ত্রকের বিভিন্ন আঞ্চলিক অফিসের পদস্থ বিজ্ঞানীরাও ছিলেন। বর্ষার পূর্বাভাসে নতুন কয়েকটা বিষয় জোড়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে সেখানেই। কী রকম?
স্থির হয়েছে, যেখানে যেখানে অল্প সময়ে অতিবৃষ্টির আশঙ্কা, সেই অঞ্চলগুলোকে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করে স্থানীয় প্রশাসনকে হুঁশিয়ার করা হবে। পরিস্থিতি একান্ত প্রতিকূল হয়ে উঠলে অন্তত তিন ঘণ্টা আগে জারি হবে চূড়ান্ত সতর্কতা। সে ক্ষেত্রে আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দেবে, কোন কোন জায়গা থেকে মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া দরকার। কিন্তু মাত্র তিন ঘণ্টা আগে সতর্ক হলে বিপদ রোখা সম্ভব?
আবহবিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, এই ধরনের বৃষ্টির পরিস্থিতি আচমকা তৈরি হয়। তাই এক-দু’দিন আগে পূর্বাভাস দেওয়া যায় না। ওঁদের আশা, বর্ষায় বিপর্যয় মোকাবিলার কিছু আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে সঙ্কট সামলাতে প্রশাসনের বাড়তি সুবিধা হবে।
পাশাপাশি মৌসম ভবনের দাবি, ব্লকস্তরেও বর্ষার নিখুঁত পূর্বাভাস দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এতে চাষিরা বিস্তর উপকৃত হবেন। প্রসঙ্গত, এখন চাষিদের সুবিধার্থে চার-পাঁচটি জেলা ধরে সামগ্রিক পূর্বাভাস ও আনুসঙ্গিক কৃষি-পরামর্শ দেওয়া হয়। ‘‘এ বছর কয়েকটা ব্লকে পরীক্ষামূলক ভাবে এই জাতীয় পূর্বাভাস চালু হচ্ছে। ধীরে ধীরে তার পরিধি বাড়ানো হবে।’’— বলছেন কেন্দ্রীয় আবহমন্ত্রকের পূর্বাঞ্চলীয় ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গোকুলচন্দ্র দেবনাথ। শহরাঞ্চলে বাতাসের গতিবেগের আঁচও মিলবে।
তবে বৃষ্টির পূর্বাভাসের কিছু ক্ষেত্রে ব্যর্থতাও চোখে পড়েছে মৌসম ভবনের কর্তাদের। যার কারণ খুঁজে বার করার প্রয়াস চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy