মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের অন্দরে অব্যাহত রইল হুমায়ুন-বিতর্ক।
দলের কোনও কমিটিতে তাঁকে ঠাঁই দেওয়া হয়নি বলে রেজিনগরের প্রাক্তন বিধায়ক হুমায়ুন কবীর ‘বিক্ষুব্ধ’। জেলায় তৃণমূলের দেখভালের দায়িত্ব দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঠিয়েছেন গায়ক ইন্দ্রনীল সেনকে। মূলত তাঁর বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিতেই হুমায়ুন সোমবার কলকাতায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। নিজাম প্যালেসে এ দিন প্রায় আধ ঘণ্টা মুকুলবাবুর সঙ্গে হুমায়ুনের কথা হয়। পরে হুমায়ুন জানান, মুকুলবাবু ২১ জুলাইয়ের পরে মুর্শিদাবাদে গিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন। মুকুল-ঘনিষ্ঠ বলে দলে পরিচিত হুমায়ুনের কথায়, “এখন আমাকে অপেক্ষা করতেই হবে।” তবে অনন্তকাল যে তিনি অপেক্ষা করবেন না, সেটাও জানাতে ভোলেননি তিনি। বলেন, “এক-দু’মাস দেখব। তার পরে কোনও সুরাহা না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’’
হুমায়ুনের ক্ষোভের ইঙ্গিত যেমন তাঁর বক্তব্যেই স্পষ্ট হয়েছে, তেমনই আবার ইন্দ্রনীলও তাঁর অবস্থান থেকে এক চুলও সরেননি। তাঁর স্পষ্ট কথা,‘‘দলের কাজ করা তো পদের জন্যে নয়! নেতৃত্ব যা বলবেন, তা মেনেই কাজ করতে হবে।” পদ না পেয়ে ক্ষুব্ধ হুমায়নকে তাঁর কটাক্ষ, “জেলার তিন সভাপতি তো ঠিক করেছেন দলনেত্রী। এখন উনি (হুমায়ুন) কি পঞ্চায়েত বা অঞ্চলের সভাপতি হতে চান! তা হলে নেতৃত্বকে তা নিয়ে ভাবতে হবে!”
গত ১১ জুলাই মুর্শিদাবাদে দলীয় বৈঠকের পরে হুমায়ুন, সাগির হোসেনের মতো দলীয় নেতা বা বিধায়ক সুব্রত সাহাকে কোনও পদ না দেওয়াকে কেন্দ্র করেই দলীয় কোন্দল চরমে উঠেছে। হুমায়ুনরা প্রকাশ্যে ইন্দ্রনীলের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেছেন। ইন্দ্রনীল এ দিন পাল্টা অভিযোগ করেন, “দলনেত্রীর নির্দেশেই আমি মুর্শিদাবাদে দলের পর্যবেক্ষক হয়ে কাজ করতে গিয়েছি। যাঁরা দলের মধ্যে থেকে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কুৎসা করছেন, তাঁরা আসলে নেত্রীকে অপমান করছেন!” হুমায়ুন অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, “দিদির মধ্যে কোনও দিন অহঙ্কার দেখিনি। কিন্তু এখন যিনি পর্যবেক্ষক হয়ে এসেছেন, তিনি কথায় কথায় আমাদের অপমান করছেন! তাই আমি মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছি। জেলার তৃণমূলের কর্মীরাও এটা বরদাস্ত করছেন না।’’
ফলে, মুর্শিদাবাদে যুযুধান দুই গোষ্ঠীর বিতণ্ডায় তৃণমূলের অন্দর কার্যত অগ্নিগর্ভ। দলনেত্রীকে বিষয়টি জানাবেন কি না জানতে চাইলে এ দিন হুমায়ুন বলেন, “মুকুলবাবু যখন বিষয়টি দেখছেন, তখন দিদিকে কেন জানাব? দিদি ব্যস্ত থাকেন। মুকুলবাবুর উপরেও তো ভরসা রাখতে হবে।”
হুমায়ুন জানিয়েছেন, এ দিন নিজাম প্যালেসের বৈঠকে মুকুলবাবু তাঁদের ২১ জুলাই ধর্মতলার সমাবেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কবে তিনি মুর্শিদাবাদে যাবেন, ওই দিন সন্ধ্যাতেই মুকুলবাবু তাঁকে জানিয়ে দেবেন। তবে এ দিনের বৈঠক নিয়ে মুকুলবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। মুর্শিদাবাদে দলে কোন্দল নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তাঁর মন্তব্য, “ওখানে তো কোনও গোলমাল নেই!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy