Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বিজেপিতেই যাবেন কি, নাকি নতুন দল করছেন? নিরুত্তর মুকুল

১৮১, সাউথ অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে মুকুল রায়ের দিকে একের পর এক প্রশ্নবাণ ছুড়লেন সাংবাদিকেরা। কিন্তু রহস্যের পর্দা উন্মোচিত হলো না। মুকুল জানিয়েছেন, সামনের সপ্তাহে যে কোনও দিন তিনি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:০১
Share: Save:

আপনি কি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন?

আপনি কি নতুন দল করছেন?

পুজো তো শেষ। সাংসদ পদ ছাড়বেন কবে?

১৮১, সাউথ অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে মুকুল রায়ের দিকে একের পর এক প্রশ্নবাণ ছুড়লেন সাংবাদিকেরা। কিন্তু রহস্যের পর্দা উন্মোচিত হলো না। মুকুল জানিয়েছেন, সামনের সপ্তাহে যে কোনও দিন তিনি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে ইস্তফা দেওয়ার প্রথা। তাই তিনি সময় চেয়েছেন বেঙ্কাইয়া নায়ডুর কাছে। কিন্তু বিজেপিতে যোগ দেবেন কিনা সেই প্রশ্নে তাঁর জবাব, ‘‘অপেক্ষা করুন। সবুরে মেওয়া ফলে।’’

আরও পড়ুন: হোর্ডিংয়ে মুকুলের শুভেচ্ছা, ধৃত দুই

সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় আজ মুকুলের বাড়িতে এসে বৈঠক করেন। মুকুল আবার যান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বাড়ি। প্রায় দু’ঘণ্টা একান্তে কথা হয় দু’জনের। দুপুরের খাওয়াও সেখানেই সারেন মুকুল।

এহেন ঘটনাপ্রবাহে মুকুলের ভবিষ্যৎ ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে রাজধানীর অলিন্দে। মূল প্রশ্ন হল, নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ কী চাইছেন? আরএসএস তথা সঙ্ঘ পরিবার কী চাইছে। বিজেপি সূত্র বলছে, অমিত শাহের প্রথম প্রস্তাব মুকুল আঞ্চলিক দল গঠন করুন। গুজরাতের শঙ্কর সিংহ বাঘেলা, মহারাষ্ট্রের নারায়ণ রানের ধাঁচে দল গঠন করে আপাতত এনডিএ-র শরিক হন তিনি। গুজরাত নির্বাচনের পরে বাকি দলগুলির মতো তাঁর দলকেও বিজেপি-তে মিশিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের সাংসদ-বিধায়েকরা কেউই আসতে প্রস্তুত নয় দেখে মুকুল এখন আলাদা দল না করে বিজেপিতে যোগ দিতে চাইছেন। অমিত শাহ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, ভূপেন্দ্র যাদবের মতো নেতাদের সঙ্গে মুকুলের কথা হয়েছে। যা দেখেশুনে মুকুল বিরোধী এক তৃণমূল নেতার বক্তব্য, ‘‘মুকুল এখন বিজেপির কৃপাপ্রার্থী।’’

যদিও মুকুলকে নেওয়া নিয়ে বিজেপির মধ্যে দু’টি মত রয়েছে। একটি মত হল— মুকুল সারদা ও নারদ দুর্নীতির তদন্তে বিচারাধীন। সিদ্ধার্থনাথ সিংহ এক সময়ে ‘ভাগ মুকুল ভাগ’ স্লোগান তুলেছিলেন। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো জনপ্রিয়ও নন। ফলে বিজেপিতে নিলে কতটা লাভ হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কিন্তু অন্য মতটি হল, রাজ্যের প্রায় আশি হাজার বুথ পরিচালনার কৌশল মুকুলের আয়ত্তে। তৃণমূলের হয়ে ওই কাজটিই তিনি এত দিন করে এসেছেন। ঘনিষ্ঠ মহলে মুকুলের দাবি, এই মুহূর্তে যে রাজনৈতিক সমর্থন তাঁর সঙ্গে রয়েছে, তাতে তিনি পঞ্চায়েত পর্যায়ে অনায়াসে লড়াইয়ে নামতে পারেন। তাই বিজেপির ওই অংশের দাবি, মুরলীধর লেনে দলের নির্বাচনী ম্যানেজার করে পঞ্চায়েতের লড়াইয়ের দায়িত্ব দিয়ে মুকুলের দক্ষতার লিটমাস টেস্ট করা যেতে পারে। মুকুলপন্থীদের বক্তব্য, একদা সুখরাম বা বুটা সিংহের মতো নেতাদের দিয়ে যখন কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার রাজনীতি করেছেন বাজপেয়ী-আডবাণীরা, তখন মুকুলকে দিয়ে কেন তা করবেন না মোদী-অমিত শাহেরা।

মুকুলকে দলে নেওয়ার প্রশ্নে এ দিনই কলকাতায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপি-কে শক্তিশালী করতে মুকুল রায়কে আমাদের লাগবে, এই ধারণা ঠিক নয়। কিন্তু মুকুলবাবুর মতো দক্ষ নেতা বিজেপিতো যোগ দিলে তাঁকে যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE