বাঁশলই নদীর জলোচ্ছ্বাসে জলবন্দি হয়ে পড়ল সুতির এগারোটি গ্রাম। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
বর্ষার আগে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপারে বিডিওদের সতর্ক করে দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু ঝাড়খণ্ড থেকে আসা বাঁশলই নদীর জলোচ্ছ্বাসে বুধবার বিকেলে সুতির ১১টি গ্রামে জল ঢুকল। ওই ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পরেও গ্রামবাসীদের কাছে কাছে ত্রাণ তো দূরকথা, বৃষ্টি ও জল থেকে বাঁচতে নৌকো ও ত্রিপলের ব্যবস্থাও করতে পারেনি সুতি ১ ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। সব নলকূপ জলে ডুবে যাওয়ায় এলাকায় পানীয় জলেরও তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
ওই ১১টি গ্রামের ৯টি গ্রামই সুতির বহুতালি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাইমা ইয়াসমিন বেনজির জানান, আচমকা গ্রামে জল ঢুকে গিয়ে এমন বিপত্তি। বহুতালির একটি এলাকা ছাড়া প্রায় সব গ্রামই জলবন্দি হয়ে পড়েছে। অন্তত ৭০০ মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে সমস্যায় ফেলেছে বৃষ্টি। নাদাইয়ে একটি কালভার্ট ভেঙে গিয়ে রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। গ্রামে ঢোকার সড়ক পথ কোমর জলের তলায়। খাবারের চেয়েও বেশি দরকার ত্রিপল, নৌকো ও পানীয় জলের। এলাকার সমস্ত স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিডিওকে বলেও ত্রাণের ব্যবস্থা হয়নি।
সুতি ১ বিডিও দীপঙ্কর রায় বলেন, ‘‘বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার সকালে ওই এলাকা ঘুরে দেখে এসেছি। পঞ্চায়েত প্রধানদের বলা হয়েছে তালিকা তৈরি করতে। নৌকো, ত্রিপলের জন্য জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তবে জলও নামতে শুরু করেছে।’’ তবে বৃহস্পতিবার বিকেলে সুতি এলাকায় গিয়ে চারপাশে জলমগ্ন এলাকার ছবিই দেখা গিয়েছে। ফসল, রাস্তাঘাট সবই জলের তলায়।
গোপালনগরের বাসিন্দা সুদেব মণ্ডল চাকরি করেন কলকাতা পরিবহণ সংস্থায়। গ্রামের এমন খবরে তড়িঘড়ি ছুটে এসেছেন গ্রামে। তাঁর কথায়, ‘‘নদীর খাত মজে যাওয়ায় এমন ঘটনা ঘটছে। বহু বার নদী সংস্কার করে বাঁধ দেওয়ার দাবি জানিয়েও কোনও ফল মেলেনি। প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব না দিলে ফি বছরই এমন ঘটনা ঘটবে।’’
স্থানীয় বাসিন্দা প্রসন্ন মণ্ডল জানান, গোটা গ্রাম ভয়ে রাতে ঘুমোতে পারছে না। খাবারের চেয়েও এখন বেশি দরকার যাতায়াতের নৌকোর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy