পড়শি জেলার তেহট্টে ভয়াবহ দুর্ঘটনার দাগ এখনও দগদগে। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নয়ানজুলিতে পড়েছিল বাস। মুহূর্তে চলে গিয়েছিল ন’নয়টি তাজা প্রাণ। সেই ঘটনার প্রায় পুনরাবৃত্তি ঘটল নবগ্রামে। কোনও প্রাণহানি না হলেও ঘটনায় জখম হয়েছেন বহু যাত্রী।
শনিবার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বেসরকারি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে উল্টে যায়। বাসের ভিতর তখন শ’খানেক যাত্রী। হুড়মুড়িয়ে একে অন্যের ঘাড়ে এসে পড়েন। জখম হন ১৭ জন শিশু ও মহিলা-সহ কমবেশি ৪০ জন। তাদের ৩০ জনকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বাসটি আটক করা হয়েছে। তবে চালক পলাতক।
পুলিশ বহরমপুর থেকে যাত্রী নিয়ে বাসটি রঘুনাথগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। বাসটির দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। নবগ্রামের কাছে চানকের মোড়ের রাস্তা খারাপ থাকায় চালক লেন ভেঙে ডান দিকে ঘুরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বেশি গতি থাকায় নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি চালক। আচমকা বাসটি রাস্তার উপরেই উল্টে যায়।
ওই বাসে ছিলেন রঘুনাথগঞ্জ মডেল স্কুলের শিক্ষক ধনঞ্জয় মণ্ডল। তিনি জানান, ফোর লেনের ওই রাস্তার চাণকের মোড়ে কাছের রাস্তা খারাপ থাকায় বাসটি দ্রুত গতিতে লেন ভেঙে ডান দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করেন চালক। ওই সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি উল্টে যায়।’’ উদ্ধারের কাজে হাত লাগান স্থানীয় বাসিন্দারা। একে একে জখমদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সম্প্রতি নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে পলাশিপাড়া যাওয়া সময় তেহট্টের কাছে এক বাস উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছিলেন আট জন। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পথে মারা যান আরও একজন। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে বাসে যাত্রী তোলার ব্যাপারে খানিক কড়াকড়ি দেখিয়েছিল প্রশাসন। বাসের ছাদ থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিতেও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু ওই পর্যন্তই। মাস গড়ানোর আগেই ফের অতিরিক্ত যাত্রী তোলা শুরু হয়েছে। কেন এ ব্যাপারে আরও কড়াকড়ি পদক্ষেপ করছে না প্রশাসন? মুর্শিদাবাদ জেলা আরটিও চিরন্তন প্রামাণিকের সাফাই, ‘‘আমাদের পরিকাঠামো যা সেই মতো টহলদারি চালাই।’’ কিন্তু সেই টহলদারির ফাঁক গলে কী ভাবে বাসে অতিরিক্ত যাত্রী উঠছে তার ব্যাখ্যা অবশ্য মেলেনি।