বেহাল: রাস্তা না পুকুর চেনা দায়। নিজস্ব চিত্র
দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে প্রধানের। মাস দুয়েক ধরে ফেরার সাহিনা খাতুন নামে তৃণমূলের ওই প্রধান। এ দিকে তাঁর দেখা না মেলায় থমকে উন্নয়নের কাজ। সাগরদিঘির বন্যেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা।
ওই পঞ্চায়েতের একটি গ্রাম ফুলশহরি। গ্রামের চারটি রাস্তার বর্ষার পরে বেহাল হয়ে পড়েছে। গ্রামবাসীরা একাধিক বার রাস্তা সংস্কারের জন্যে কখনও বিডিও’র কাছে, কখনও পঞ্চায়েতে দরবার করেছেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। ফলে ক্ষোভে ফুঁসছেন তাঁরা।
গ্রামের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য হাবিবুর শেখও বলছেন, ‘‘গ্রামবাসীদের ক্ষোভ সঙ্গত। গত পাঁচ বছরে গ্রামের একটা রাস্তাও সংস্কার হয়নি। বহুবার বলেছি পঞ্চায়েতে, ব্লকে। কেউই আগ্রহ দেখায়নি। অথচ সাগরদিঘিতে কোথায় এখন আর মাটির রাস্তা চোখে পড়ে না।’’
গ্রামের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূল নেতা সবুর আলি বলছেন, ‘‘৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে জনসি হয়ে ফুলশহরি। রাস্তার যা অবস্থা কোনও অ্যাম্বুল্যান্স পর্যন্ত আসতে চায় না গ্রামে। প্রসূতি ও রোগীদের খাটে চাপিয়ে কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয় হাসপাতালে।’’
গ্রাম থেকে শতাধিক ছেলে মেয়ে শেখদিঘি হাইস্কুলে পড়ে। তাঁদেরই একজন মায়েদা খাতুন বলছেন,‘‘নামেই রাস্তা। পুকুকেও হার মানায়। নিছক ঠেলায় না পড়লে কেউই বাড়ি থেকে বের হতে চান না।’’ সে জানায়, সাইকেল পেয়েছে। কিন্তু তা সাজানো আছে বাড়িতেই। কাদা পথে তারাই হাঁটতে পারে না। সাইকেল নিয়ে চলবে কী করে! একই কথা আরও এক ছাত্রী সাহিনা খাতুনের।
কংগ্রেস নেতা আমিনুল ইসলাম বলছেন, ‘‘একবার মোটরবাইক নিয়ে ওই গ্রামে যেতে গিয়ে পড়ে যাই। সাগরদিঘিতে এত বেহাল রাস্তা কোনও গ্রামে নেই।’’
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের আকলেমা বিবিও মানছেন, ফুলশহরির মাটির রাস্তা খুব খারাপ। কিন্তু আইন আদালতের জটে তাঁরা দীর্ঘদিন কাজই করতে পারেননি। তাই ইচ্ছে থাকলেও কিছু করা যায়নি।
বিডিও দেবব্রত সরকার জানান, আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠেছে প্রধানের বিরুদ্ধে। তিনি পঞ্চায়েতে আসছেন না। উপ-প্রধানকেও দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে যাননি। তাই কাজে সমস্যা হচ্ছে। প্রায় দেড় কোটি টাকা ওই পঞ্চায়েতের তহবিলে জমা পড়ে রয়েছে।
তাঁর আশ্বাস, ‘‘জটিলতা কাটিয়ে বিশেষ উন্নয়ন পরিকল্পনা নিতে সময় লাগছে। ফুলশহরি গ্রামের রাস্তা যাতে দ্রুত সংস্কার করা যায় তার
চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy