Advertisement
১৮ মে ২০২৪

চাঁদা না পেয়ে মার শিক্ষককে, অভিযুক্ত তৃণমূল

‘ত্রাণ’ তহবিলে চাঁদা না দেওয়ায় এক হাইস্কুলের শিক্ষককে মারধর করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে মুর্শিদাবাদ থানার ডাঙাপাড়ার ওই ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল অঞ্চল কমিটির সভাপতি ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গেরা।

হাসপাতালে প্রহৃত শিক্ষক।

হাসপাতালে প্রহৃত শিক্ষক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৬ ০২:০১
Share: Save:

‘ত্রাণ’ তহবিলে চাঁদা না দেওয়ায় এক হাইস্কুলের শিক্ষককে মারধর করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে মুর্শিদাবাদ থানার ডাঙাপাড়ার ওই ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল অঞ্চল কমিটির সভাপতি ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গেরা।

শুধু মারধরই নয়, বেল্লাল শেখ নামে সিপিএম সমর্থক ওই শিক্ষকের কাছ থেকে মোটা টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। তিনি আপাতত মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। যদিও রাত পর্যন্ত পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।

গত ১ মে ভগবানগোলা থানার সুলতানপুর গ্রামে শ’খানেক বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। ওই গ্রামে ত্রাণ দেওয়ার জন্য ডাঙাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার হুলাসপুর মোড়ে এ দিন সকালে রাস্তা আটকে চাঁদা তুলছিল তৃণমূল। মোটরবাইকে ছেলে রসিব লতিফকে নিয়ে মোড়ের কাছেই নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন স্থানীয় গুধিয়া হাইস্কুলের শিক্ষক বেল্লাল।

বেল্লাল জানান, তাঁর মোটরবাইক আটকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির সভাপতি সাজু মণ্ডল ও তাঁর দলবল। বেল্লালের অভিযোগ, ‘‘সুলতানপুরের জন্য কিছু দিন আগেই আমি অর্থ সাহায্য করেছি বলতেই ওরা চুলের মুঠি ধরে আমাকে মারধর করে। টানাটানি করে জামা ছিঁড়ে দেয়। আমার কাছে তিন হাজার টাকা ছিল। তা-ও ওরা ছিনিয়ে নিয়েছে। স্থানীয় লোকজনের চেষ্টায় আমি কোনও মতে প্রাণে বেঁচে গিয়েছি।’’

অভিযোগ অস্বীকার করে সাজু অবশ্য দাবি করেন, ‘‘আমরা মাত্র ১০ টাকা সাহায্য চেয়েছিলাম। তাতেই বেল্লাল মাস্টার গালিগালাজ করেন। তাঁর ছেলে নেমে আমাদের ছেলেদের মারধর করে। আমি ছুটে গিয়ে ঝামেলা মিটিয়ে দিই। টাকা ছিনতাই-এর অভিযোগ স্রেফ গল্প।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি মান্নান হোসেনের দাবি, ‘‘চাঁদা তোলা নিয়ে সামান্য ধস্তাধস্তি হয়েছে। সিপিএমের ওই কমরেড নাটক করছেন।’’

তবে এ ভাবে গা-জোয়ারি করে চাঁদা তোলাটা যে অন্যায়, তা মান্নান মেনে নিয়েছেন। জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি অশেষ ঘোষের নির্দেশে ওখানে চাঁদা তোলা হচ্ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে চাঁদা তোলাটা অন্যায়। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। সে কথা আমি অশেষকে বলেছি।’’বেল্লাল অবশ্য দাবি করেন, চাঁদা তোলাটা বাহানা। পুষে রাখা রাগেই তাঁকে মারধর করা হয়েছে। এই ভোটে তিনি এক বুথে প্রিজাইডিং অফিসার ছিলেন জানিয়ে বেল্লালের অভিযোগ, ‘‘আমার ভোট ছিল পোস্টাল ব্যালটে। সাজু মণ্ডল সেই ব্যালট চেয়েছিল। তা ছাড়া, আমাকে তৃণমূলের হয়ে প্রচার করতে হবে বলে দাবি করেছিল। তা না মানায় সে খেপে যায়। এ দিন সেই রাগই পুষিয়ে নিল।’’

সাজু পাল্টা বলেন, ‘‘বেল্লাল মাস্টার বরাবরের ঝামেলাবাজ। এখন আষাঢ়ে গল্প বলে সহানুভূতি পেতে চাইছে।’’ রসিবের বক্তব্য, বেল্লালের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে পারেননি। পরে তা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC subscription
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE