Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

উঠল কর্মবিরতি, স্বস্তি মেডিক্যালে

হাসপাতালের এমএসভিপি দেবদাস সাহা বলছেন, ‘‘জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে যোগ দিয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে হাসপাতালের সব পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে।’’

ছন্দে ফিরছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। মঙ্গলবার। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

ছন্দে ফিরছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। মঙ্গলবার। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯ ০২:০৫
Share: Save:

চেনা ছন্দে ফিরল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এনআরএস কাণ্ডের প্রতিবাদে ও নিরাপত্তার দাবিতে গত এক সপ্তাহ ধরে ধর্নায় বসেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। জরুরি পরিষেবা ও অন্তর্বিভাগ ছাড়া অন্য সব পরিষেবা বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছিলেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসা রোগীরা। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে আন্দোলন প্রত্যাহার করে সোমবার গভীর রাতে জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে যোগ দেন। মঙ্গলবার সকালে বহির্বিভাগও চালু হয়েছে। তবে এ দিন বহির্বিভাগে রোগীর চাপ ছিল বেশ কম।

হাসপাতাল ছন্দে ফেরায় রোগী থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সকলেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। হাসপাতালের এমএসভিপি দেবদাস সাহা বলছেন, ‘‘জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে যোগ দিয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে হাসপাতালের সব পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে।’’

মাসখানেক আগে মোটরবাইক থেকে পড়ে গিয়ে পায়ে চোট লেগেছে নওদার পোতাডাঙ্গার রাজ্জাক শেখের। মঙ্গলবার তিনি মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে এসেছিলেন। রাজ্জাক বলেন, ‘‘ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে এর আগে চিকিৎসা করাতে এসে ফিরতে হয়েছে। এ দিন অবশ্য চিকিৎসা করাতে পেরেছি।’’

সূত্রের খবর মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের বহির্বিভাগের ২০টি বিভাগে প্রতিদিন গড়ে প্রায় চার হাজার রোগী আসেন। প্রায় এক সপ্তাহ বাদে মঙ্গলবার বহির্বিভাগ চালু হওয়ায় ২০১৭ জন রোগী এসেছিলেন। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় যেখানে গড়ে প্রায় ৪০০ রোগী ভর্তি হন, সেখানে গত ১০ ঘণ্টায় ২১০ জন রোগী অন্তর্বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। মেডিক্যাল কলেজের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর যেহেতু এ দিন প্রথম বহির্বিভাগ খুলেছে, তাই সেখানে রোগী কিছুটা কম এসেছে। তবে অন্তর্বিভাগে আর পাঁচ দিনর মতো রোগী ভর্তি হয়েছেন।

এ দিন সকালে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষ থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বয়েজ হস্টেলে সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। আন্দোলনকারীদের পক্ষে জুনিয়র ডাক্তার তুহিন খান, পারভেজ আলম জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় তাঁরা খুশি। তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

রোগীর পরিজনদের ওয়ার্ডে ঢুকে রোগীর সঙ্গে দেখা করার বিষয়ে নোটিস দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের পক্ষ থেকে। নোটিসে বলা হয়েছে— মঙ্গলবার থেকে সকাল ৭টায় দেখা করা বা রোগীর বাড়ির লোকজনের ঢোকা নিষিদ্ধ। রোগীর সঙ্গে দেখা করার সময় বেলা ১১টা থেকে ১২টা এবং বিকেল ৪টে থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত। রোগী ভর্তির সময় বাড়ির দু’জন লোক সঙ্গে ঢুকতে পারবেন। সবুজ কার্ডে কর্তব্যরত চিকিৎসকের সই থাকতে হবে।

এই নির্দেশিকা মানা হচ্ছে কি না তা দেখতে মঙ্গলবার সকালে জরুরি বিভাগের সামনে গেটে চলে আসেন এমএসভিপি। তাঁর সামনে রোগীর পরিজনরা হাসপাতালের ভিতরে ঢুকতে গেলে তিনি তাঁদের বাধা দেন। এমএসভিপি মাইকে ঘোষণা করেন— ‘‘রোগীর সঙ্গে দেখা করার জন্য যে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে তা মেনে চলতে হবে। রোগীকে দেখা করার সময় সঙ্গে থাকা সাদা কার্ড দেখিয়ে মাত্র এক জন ভিতরে ঢুকতে পারবেন। অন্যথায় রোগীর পরিজনদের কাছ থেকে কার্ড কেড়ে নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bengal Doctors Strike Murshidabad Medical College
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE