প্রতীকী ছবি।
নাকাশিপাড়ার সৌমেন সরকার ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে।
ডাক্তারেরা জানান, দ্রুত প্লেটলেট না দিলে প্রাণ সংশয় হবে রোগীর। কিন্তু সারা জেলায় কোথাও প্লেটলেট পাননি তাঁর আত্মীয়-বন্ধুরা। প্রাণ বাঁচাতে চিকিৎসকেরা শেষমেশ এক ইউনিট রক্ত দিয়ে তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে রেফার করেন।
গত বছরের ঘটনা। কিন্তু নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় এই ধরনের ঘটনা ফি বছরই ঘটে। কারণ, এই দুই জেলার কোনও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কেই রক্তের উপাদান পৃথক করার ব্যবস্থা নেই। ফলে বেশ কিছু রোগীর রক্তের কোনও একটি বিশেষ উপাদান দরকার হলেও তাঁকে পুরো রক্ত (হোল ব্লাড) দিতে হয়।
তবে এ বার বোধহয় সেই সমস্যা মিটতে চলেছে। শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল এবং মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কে ‘ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেটর’ বসানো হচ্ছে। দু’টি হাসপাতালেই যন্ত্রপাতি এসে গিয়েছে। তবে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কয়েক কদম এগিয়ে রয়েছে। সেখানকার ব্লাড ব্যাঙ্কে এই ব্যবস্থা ইতিমধ্যে প্রায় সম্পূর্ণ। দিন কয়েকের মধ্যেই ‘ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেটর’-এর উদ্বোধন হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার সুবিকাশ বিশ্বাস। চিকিৎসকরা জানান, এই ব্যবস্থা চালু হলে রক্তের অপচয় অনেক কমবে। এক ইউনিট রক্ত অন্তত তিন-চার জন রোগীকে দেওয়া যাবে।
শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, তাদের ব্লাড ব্যাঙ্কে মাসে ১২০০-১৪০০ প্যাকেট রক্ত জমা পড়ে। তা থেকেই রোগীদের দেওয়া হয়। গ্রীষ্মে রক্তের আকাল দেখা দেয়। অথচ এই সময়েই ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ে। ফলে রক্তেরও প্রয়োজন বাড়ে পাল্লা দিয়ে। নদিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় জানান, জেলা হাসপাতালে এই ব্যবস্থা চালু করার জন্য ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ যন্ত্রপাতি চলে এসেছে। তিনি বলেন, ‘‘আশা করছি, এই বছরের মধ্যেই রক্তের উপাদান পৃথগীকরণ ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে। তার জন্য ড্রাগ কন্ট্রোল দফতরের অনুমোদনও দরকার। সেই আবেদনও করা হয়েছে। জেএনএম হাসপাতালের সুপার বলেন, ‘‘রক্তের বিভিন্ন উপাদান থাকে। ডেঙ্গি রোগীর যেমন প্লেটলেট প্রয়োজন হয়, তেমনই অনেক রোগীর রক্তরস বা রক্তের অন্য উপাদানের দরকার হয়। কিন্তু উপাদান আলাদা করা যায় না বলে বাধ্য হয়ে ‘হোল ব্লাড’ দিতে হয়।’’
রক্তের উপাদান পৃথক করার যন্ত্র এসে গিয়েছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজেও। এই ইউনিট বসাতে গেলে ড্রাগ কন্ট্রোল দফতরে আবেদন করতে গেলে স্বাস্থ্য দফতরের যে ‘নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট’ প্রয়োজন, তা হাতে পাওয়ার কাজ অনেকটাই এগিয়েছে বলে জানান মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার প্রভাসচন্দ্র মৃধা। তাঁর আশা, মে মাসের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।
নতুন পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন পদে সাত জন কর্মী নেওয়া প্রয়োজন। তার জন্য নিয়োগ পরীক্ষায় সফলদের তালিকাও তৈরি হয়েছে। শীঘ্রই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy