সারদা এবং রোজভ্যালির বাড়বাড়ন্তের সময়েই চালু হয়েছিল ‘গোল্ডেন পরিবার হাউজিং ডেভেলপার’ নামে একটি ছোট লগ্নি সংস্থা। বুধবার কলকাতায় তাদের সদর দফতর ছাড়াও নদিয়াতেও অভিযান চালাল সিবিআই।
এক সময়ে কল্যাণী শহরের এ-২ ব্লকে খোলা হয়েছিল সংস্থার অফিস। ভবিষ্যতে ফ্ল্যাট-বাড়ি বা চড়া সুদে টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলা হত বলে অভিযোগ। কল্যাণীর অফিসে মূলত কল্যাণী, গয়েশপুর, মদনপুর, চাকদহের টাকা জমা পড়ত। সেই অফিস অনেক দিন ধরেই বন্ধ।
গত বছর ১৩ জুন সংস্থার কর্ণধার সুকল্যাণ বিশ্বাসের নামে মামলা রুজু হয়। আদতে তিনি বগুলার বাসিন্দা। পরে গয়েশপুরে সঙ্গম সিনেমা হল লাগোয়া অটো স্ট্যান্ডের সামনে তাঁর দোতলা বাড়ি ছিল। আগেই সেটি একক চিকিৎসকের কাছে বিক্রি করে তিনি এলাকা ছেড়ে চলে যান। কল্যাণীর অফিসও ছেড়েছেন বছর তিনেক আগেই। এখনও বেপাত্তা।
সিবিআই সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন রাজ্যের ন’টি জায়গায় হানা দেওয়া হয়। মধ্যপ্রদেশেরও একটি জায়গায় অভিযান চালানো হয়। বেশ কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে, টাকা নয়ছয়ের পরিমাণ ১০০ কোটির কম বলেই জানা গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ সুকল্যাণের বিক্রি করে দেওয়া বাড়ির সামনে একটি গাড়ি এসে দাঁড়ায়। তাতে চার জন ছিলেন। গাড়ি থেকে বেরিয়ে এক মহিলা বাড়ির ছবি তোলেন। চাকদহে সুকল্যাণের বন্ধ পড়ে থাকা ঘড়ির দোকানও সিল করে দিয়ে গিয়েছে সিবিআই। তবে তারা জেলা পুলিশকে কিছু জানায়নি।
মোটামুটি ২০১৫ সাল নাগাদই সংস্থাটি পাততাড়ি গোটায়। তার আগে থেকেই আমানতকারীরা ক্ষোভ জানাতে শুরু করেছিলেন। সংস্থা বন্ধ হওয়ার মাসখানেক আগে টাকা না পেয়ে শ’খানেক গ্রাহক কল্যাণী শহরের মূল রাস্তা অবরোধও করেন। পুলিশ গিয়ে তাঁদের সরিয়ে দেয়। পুলিশেরই এক কর্তার দাবি, কিছু অফিসারের সঙ্গে সুসম্পর্কের ফায়দা তুলছিলেন সুকল্যাণ।
কল্যাণীর বাসিন্দা আশুতোষ বিশ্বাস জানান, তাঁর পাড়ারই এক বন্ধু ওই সংস্থার এজেন্ট ছিলেন। তাঁর কথায় ভরসা করে তিনি ওই সংস্থায় ২০ হাজার টাকা রাখেন। দু’বছর পরে ৩০ হাজার টাকা ফেরতের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। সেই টাকা আর পাওয়া যায়নি। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘এখন তো সংস্থার অফিসই বন্ধ। আর আমার সেই বন্ধু আমানতকারীদের ক্ষোভ থেকে বাঁচতে এবং টাকা শোধ করার তাগিদে মুম্বইয়ে কাজ করতে গিয়েছে। কল্যাণীর মাঝের চরের এক যুবক ওই সংস্থায় এজেন্ট হওয়ার জন্য কিছুদিন ঘোরাঘুরি করেছিলেন। কিন্তু শেষমেশ কাজে যোগ দেননি। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘ভাগ্যিস! ওখানে কাজ করলে এখন বাড়িছাড়া হতে হত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy