দ্রুত রক্তের প্রয়োজন— সে কথা একাধিকবার বলা সত্ত্বেও রক্ত আনতে দেরি হওয়ায় রোগীর আত্মীয়কে চড় মারার অভিযোগ উঠল এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানায় জেলা সদর হাসপাতালের ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেলে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন হোগলবেড়িয়া থানার তারাপুরের বাসিন্দা ঝুমা প্রামাণিক। অন্তঃস্বত্ত্বা ঝুমাদেবীর পেটের ভিতরে ভ্রুণের টিউব ফেটে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক সিদ্ধান্ত নেন, সেই মুহূর্তেই অস্ত্রোপচার করতে হবে। দ্রুত রক্তেরও প্রয়োজন। সেই মতো চিকিৎসক দু’বোতল রক্ত আনার জন্য লিখেও দেন।
বেশ কিছু সময় কেটে গেলেও রক্ত না আসায় ক্ষেপে যান কর্তব্যরত চিকিৎসক ভবতোষ ভৌমিক। অভিযোগ, তিনি সেই সময় রোগীর সঙ্গে থাকা এক মহিলাকে চড় মারেন। ঘটনার প্রতিবাদে হাসাপাতালে বিক্ষোভও দেখায় ঝুমাদেবীর পরিবার। ঝুমাদেবীর স্বামী গৌতম প্রামাণিকের অভিযোগ, ‘‘রক্ত আনতে প্রথমে শক্তিগর জেলা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে যাই। সেখানে ওই গ্রুপের রক্ত ছিল না। তখন রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে যাই। সেখানেও রক্ত পাইনি। পরে কলকাতা থেকে রক্ত আনতে হয়। চিকিৎসক আমাদরে হয়রানির কথা তো শুনতেই চাননি, বরং সকলের সামনে আমার দিদিকে চড় কষিয়ে দেন।’’
অভিযুক্ত চিকিৎসক ভবতোষবাবু চড় মারার কথা মেনেছেন। তাঁর কথায়, রোগীর অবস্থা খারাপ ছিল। দ্রুত অস্ত্রোপচার না করলে রোগী মারাও যেতে পারত। সেই অবস্থা বুঝিয়ে বলি। তারপরেও রক্ত আনতে অনেক দেরি হয়। তাঁর কথায়, ‘‘কয়েক দিন আগেই রক্তের অভাবে এই হাসপাতালে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছিল। ফের যদি একই ঘটনা ঘটত তা হলে তো সকলে আমাকে ধরত। তা ছাড়া রক্তের অভাবে রোগীর ওমন অবস্থা মেনে নিতে পারছিলাম না।’’ এরপরেই তাঁর সাফাই, রোগীর এক আত্মীয়া এক ওই অবস্থাতেও অদ্ভুত ভাবলেশহীন অবস্থায় রোগীর পাশেই শুয়েছিল! তিনি বলেন, ‘‘দ্রুত রক্ত আনার কথা বললেও ওরা এতটুকু উৎসাহ দেখাচ্ছিল না। অথচ তখনই অপারেশন না করলে রোগীর মৃত্যুও হতে পারত! এই অবস্থায় উত্তেজনার বশে এমনটা করে ফেলেছি।’’
কিন্তু শক্তিগর জেলা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে ফের রক্ত পাওয়া গেল না কেন?
হাসপাতালের সুপার হিমাদ্রী হালদার বলেন, ‘‘ওই মহিলার এ নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের দরকার ছিল। তা বিরল হওয়ায় ওই মুহূর্তে ছিল না।’’ তবে চিকিৎসকের চড় মারার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন হিমাদ্রীবাবু। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy