Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Coronavirus

স্যানিটাইজ়ার খুঁজে হন্যে, নেই জোগান

প্রতি দিন অন্তত একশো খরিদ্দার এসে স্যানিটাইজ়ার না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন কৃষ্ণনগর সদর হসপিটাল মোড়ের এক বড় স্টেশনারি দোকানের মালিক।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সুদীপ ভট্টাচার্য ও প্রণব দেবনাথ
শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২০ ০১:৩২
Share: Save:

মাস দেড়েক আগেও যেখানে জেলার অনেক মানুষের কাছে ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার’ নামটা অপরিচিত ছিল, দোকানে সারা সপ্তাহে মেরে-কেটে গোটা কয়েক বিক্রি হতো, সেখানে গত দিন পনেরোর মধ্যে বাজার থেকে সব মাল উধাও। দোকান থেকে শপিং মল, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার কিনতে এসে, না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন ক্রেতা।

সৌজন্যে, করোনা আতঙ্ক।

নোভেল করোনাভাইরাস প্রতিহত করতে বারবার হাত ধোয়ার পরামর্শ দিচ্ছে সরকার। ব্যবহারের সুবিধার কারণে বিভিন্ন দফতর থেকে, স্কুল-কলেজ সব জায়গায় তাই হঠাৎ চাহিদা বেড়ে গিয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের। যে দোকানে যে ক’টা পড়ে ছিল, তা-ও দ্রুত বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর ডিলারের কাছে অর্ডার দিয়েও এক বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার পাচ্ছেন না বলেই জানাচ্ছেন কল্যাণী থেকে কৃষ্ণনগর সব জায়গায় দোকানিরা।

প্রতি দিন অন্তত একশো খরিদ্দার এসে স্যানিটাইজ়ার না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন কৃষ্ণনগর সদর হসপিটাল মোড়ের এক বড় স্টেশনারি দোকানের মালিক। আবার নেদেরপাড়ার এক ওষুধের দোকানি বলেন, ‘‘দুটো বড় কোম্পানির হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার রাখতাম, তবে চাহিদা প্রায় কিছুই ছিল না। সপ্তাহে বড় জোর চারটে বিক্রি হতো। দিন পনেরো হলো চাহিদাটা এক লাফে বেড়ে দিনে পাঁচ-ছ’টায় এসে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু কোথাও মাল পাচ্ছি না।’’

শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের মুখে এক স্টেশনারি দোকানেও একই চিত্র। দোকানি জানান, গোটা মাসে তাঁর কাছে বড় জোর জনা ছয় ক্রেতা এসে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের খোঁজ করতেন, সেখানে এখন দিনে ১০ জন করে আসছেন আর হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।’’ কল্যাণীর এক দোকানদার নির্মল বিশ্বাস আবার বলেন, ‘‘আগে কোনও দিন হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার বিক্রি করিনি, হঠাৎ করে চাহিদা দেখে ভেবেছিলাম এ বার বিক্রি করব, কিন্তু কোনও কোম্পানির ঘরেই মাল নেই!’’ রানাঘাটের এক দোকানির অভিজ্ঞতা অবশ্য একটু অন্য। তিনি জানান, চারদিকে চাহিদার কথা শুনে তিনি বেশ কিছু দোকান ঘুরে কয়েকটা হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের বোতল সংগ্রহ করে এনেছিলেন, কিন্তু ক্রেতা পাচ্ছেন না।

স্যানিটাইজ়ার না পেয়ে অনেকে লিকুইড হ্যান্ডওয়াশও কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বলে জানালেন দোকানিরা।

তবে স্যানিটাইজ়ার না পেলেও বিকল্প পথ বাতলেছেন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক কৌশিক ভট্টাচার্য। তিনি জানান, ‘‘হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার হল অ্যালকোহল-যুক্ত জীবাণুনাশক। তা না পেলে ৭০% অ্যালকোহলের দ্রবণ দিয়ে হাত ধুলেও চলবে।’’

তিনি জানান, লিকুইড হ্যান্ডওয়াশিং সোপ আসলে সাবান-জল। তা ব্যবহার করলেও কিছুটা কাজ হবে। তবে সেই সঙ্গেই তিনি যোগ করেন, ‘‘জীবাণু তথা ভাইরাস প্রতিহত করতে সাবান জলের চেয়ে অ্যালকোহল অনেক বেশি কার্যকর। তাই স্যানিটাইজ়ার না পেলে হ্যান্ডওয়াশের চেয়ে ৭০% অ্যালকোহলের দ্রবণই ভাল।’’ তবে হাত নোংরা থাকলে আগে সাবান জলে ভাল করে হাত ধুয়ে তবে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Hand Sanitizer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE