Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Coronavirus

সতর্কতা উড়িয়ে রমরমিয়ে চলছে হাট

 গ্রামীণ এলাকার হাটগুলি এখনও গ্রামের প্রাণ। সপ্তাহে দু'’দিন কোথাও আবার তিন দিনও বসে এই হাট। আনাজ থেকে চালডাল কাপড় সবই মেলে সেখানে।

হাটে জমজমাট ভিড়। মঙ্গলবার ডোমকলে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

হাটে জমজমাট ভিড়। মঙ্গলবার ডোমকলে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস
ডোমকল শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২০ ০১:৫৯
Share: Save:

জেলার বড় হাট বেলডাঙা হাট। দিন কয়েক আগে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ডোমকল শহর লাগোয়া দু’টো বড় কাপড়ের হাট সহ গ্রামীণ এলাকার হাটগুলি জমজমাট ভাবেই চলছে। হাটের মালিকদের দাবি প্রশাসনের তরফে এখনও পর্যন্ত তাঁদের কাছে হাট বন্ধ করা নিয়ে কোনও নির্দেশ আসেনি, ফলে তাঁরা হাট বন্ধ করেননি। প্রশাসনের তরফে নির্দেশ পেলেই তাঁরা হাট বন্ধ করে দেবে। ডোমকল পুরসভার পুরপ্রধান জাফিকুল ইসলাম বলছেন, ‘‘মঙ্গলবার বিকেলে আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেছিলাম পুরসভায়। পুর এলাকায় যে দু’টো কাপড়ের হাট বসে তাঁদের কাছে এ দিনই নির্দেশ পাঠানো হবে হাট বন্ধ রাখার জন্য। কিন্তু আনাজের হাটগুলো নিয়ে আমরা এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

গ্রামীণ এলাকার হাটগুলি এখনও গ্রামের প্রাণ। সপ্তাহে দু'’দিন কোথাও আবার তিন দিনও বসে এই হাট। আনাজ থেকে চালডাল কাপড় সবই মেলে সেখানে। আর সেই হাট থেকেই মানুষ কেনাকাটা করেন তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের সামগ্রী। বুধবার ডোমকলের বানিয়াখালি এলাকায় হাট বসেছে ভৈরবের পাড়ে। সেখানে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। হাটে দাঁড়িয়েই এলাকার বাসিন্দা কালাম মণ্ডল বললেন, ‘‘হাটে না এলে হাঁড়ি চড়বে কী করে, আমাদের হাট থেকে আনাজ সামগ্রী নিয়ে গেলে তবেই খাবার জুটবে। ফলে করোনার ভয়ে ঘরে গুটিয়ে থাকলে আমাদের মত সাধারণ মানুষদের না খেয়ে মরতে হবে।’’ ওই হাটের মালিক ইউনুস মণ্ডল বলছেন, ‘‘হাট বন্ধ করা নিয়ে প্রশাসনের তরফে আমাদের কাছে এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দেশ আসেনি, নির্দেশ পেলেই সঙ্গে সঙ্গে হাট
বন্ধ করে দেব।’’

শহরের মতো গ্রামে ভিন্ দেশ থেকে লোকজনের আনাগোনা না থাকলেও ভিন্ রাজ্য থেকে ঘরে ফেরা মানুষের সংখ্যা কম নয় ডোমকলের মতো গ্রামীণ এলাকায়। এখানকার হাজার হাজার শ্রমিক ভিন রাজ্যে থাকে পেটের টানে, তাঁরা প্রায় দিনই ঘরে ফিরছেন। এই ঘরে ফেরা শ্রমিকদের নিয়ে একটা আতঙ্ক থাকছে সাধারণ মানুষের মনে। ডোমকলের বাসিন্দা আতাহার আলী বলছেন, ‘‘ভিন্ রাজ্য থেকে যদি কেউ আক্রান্ত হয়ে ঘরে ফেরেন, বোঝার কোনও উপায় নেই, স্বাস্থ্য দফতরের খুব বেশি হেলদোল নেই। তা ছাড়া, গ্রামীণ এলাকায় জ্বর সর্দি কাশি হলে সাধারণত হাতুড়ের কাছেই যায় গ্রামের মানুষ। সেক্ষেত্রে একটা বড় ভয়ের কারণ থেকেই যাচ্ছে। তাছাড়া গ্রামীণ এলাকায় মানুষের মধ্যে হাত ধোওয়া মাক্স ব্যবহার করার প্রবণতা নেই, ফলে হাটের মতো জনবহুল এলাকা থেকে রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা প্রবল ভাবে থেকে যাচ্ছে।’’

প্রশাসনের অবশ্য দাবি, অন্য কোনও জমায়েত নির্দেশ দিয়ে বন্ধ করা সম্ভব হলেও গ্রামীণ হাটগুলি বন্ধ করা খুব কঠিন কাজ। কারণ গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই হাট। আবার অন্য দিকে ভিন্ রাজ্য থেকে যদি কেউ করোনা সংক্রমণ নিয়ে গ্রামে ফেরেন, তা হলেও সেটা হাট থেকেই ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রবল থেকে যাচ্ছে। ফলে হাটগুলি নিয়ে অবিলম্বে সিদ্ধান্তের দাবি উঠেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Domkal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE