মাজদিয়ার টুঙি-দৌলতগঞ্জ স্থল বন্দর কি তাহলে ফের চালু হচ্ছে?
শুক্রবার নদিয়ায় প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাসে বুক বাঁধছে নদিয়া। মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে নদিয়া জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের সম্পাদক গোকুলবিহারী সাহা ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে টুঙ্গি–দৌলতগঞ্জ স্থল বন্দর চালুর দাবি জানান। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, ‘‘আমরাও চাই ফের এই বন্দর চালু হোক। বিষয়টি রাজ্যের মুখ্যসচিব দেখছেন।”
এক দিকে নদিয়ার মাজদিয়ার টুঙি। উল্টো দিকে বাংলাদেশের দৌলতগঞ্জ। ব্রিটিশ আমলে এই স্থল বন্দর চালু হয়েছিল। তার পর বেশ কয়েক বছর এই বন্দর দিয়ে দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যও চলত। কিন্তু ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় এই স্থল বন্দর বন্ধ হয়ে যায়।
ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দারাও চান, পুনরায় এই স্থল বন্দর চালু হোক। তাঁদের দাবি, ওই বন্দর ফের চালু হলে নদিয়ার আরও আর্থিক বিকাশ ঘটবে। বাড়বে কর্মসংস্থান। কৃষ্ণগঞ্জের বার্নপুরের বাসিন্দা তাপস মিত্র বলেন, “এক সময় এই রাস্তা দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য চলত। উপকৃত হতেন দু’দেশের মানুষ। ফের সেটা চালু হলে সকলেরই উপকার হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্দর চালুর বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে একাধিক বার বৈঠক হয়েছে। কিন্তু এখনও তা চালু করা যায়নি। ২০১৫ সালে দুই দেশের ডেপুটি কমিশনার-জেলাশাসক পর্যায়ে বৈঠকও হয়। সেই বছরেরই ২৫ নভেম্বর ফের রাজশাহিতে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে নদিয়া-মুর্শিদাবাদের তৎকালীন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার যোগ দিয়েছিলেন। সেখানেও এই স্থল বন্দর চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল।
গত বছর ২৫ জুন কৃষ্ণনগরে জেলাশাসকের অফিসেও ফের বন্দর চালুর ব্যাপারে বৈঠকে বাংলাদেশ এবং নদিয়ার বেশ কয়েক জন ব্যবসায়ীও উপস্থিত ছিলেন। তবে বাংলাদেশের দৌলতগঞ্জের দিকে রাস্তা-সহ স্থল বন্দরের পরিকাঠামো থাকলেও ভারতের দিকে নতুন করে পরিকাঠামো গড়তে হবে।
নদিয়া জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সম্পাদক গোকুলবিহারী সাহা জানান, এই স্থল বন্দর চালু হলে দু’দেশের ব্যবসায়ীদের উপকার হবে। রাজ্যের বেনাপোল সীমান্ত পর্যন্ত যেতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়। নদিয়া হলে দু’দেশের বাসিন্দাদেরই পথের দূরত্ব প্রায় ৮০ কিলোমিটার কমে যাবে। ফলে পরিবহন খরচ যেমন কমবে, তেমনি বেনাপোলেরও চাপ কমবে।”
বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘বন্দর চালু হলে এলাকার চেহারা পাল্টে যাবে।” জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলছেন, “স্থল বন্দর চালু করার জন্য রাজ্যে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। তবে এখনও অনুমোদন মেলেনি।” করিমপুর ফার্মার্স সঙ্ঘের সম্পাদক বিশ্বনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘‘একসময় নিউ শিকারপুর-প্রাগপুরে একটি স্থল বন্দর চেয়েছিলাম। কিন্তু সে ব্যাপারে কোনও সাড়া মেলেনি। টুঙি-দৌলতগঞ্জেও যদি ওই বন্দর চালু হয় তাহলেও পানচাষিরা উপকৃত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy