Advertisement
১৭ মে ২০২৪

ছাত্র ২০ জনেরও কম! বন্ধ করা হোক স্কুল, সুপারিশ শিক্ষা দফতরে

পড়ুয়ার সংখ্যা ২০ জনেরও কম। ভবিষ্যতে পড়ুয়া বাড়ার লক্ষণও নেই। জেলার এমন ছ’টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে চিহ্নিত করে বন্ধ করার সুপারিশ করেছে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। মাস দু’য়েক আগে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের কাছে এই সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৫৫
Share: Save:

পড়ুয়ার সংখ্যা ২০ জনেরও কম। ভবিষ্যতে পড়ুয়া বাড়ার লক্ষণও নেই। জেলার এমন ছ’টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে চিহ্নিত করে বন্ধ করার সুপারিশ করেছে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। মাস দু’য়েক আগে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের কাছে এই সুপারিশ করা হয়েছে। ওই বিদ্যালয়গুলিকে বন্ধ করে অন্য বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাবে অবশ্য এখনও সিলমোহর দেয়নি রাজ্য।

মুর্শিদাবাদ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান তথা জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) নীহারকান্তি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘২০ জনেরও কম পড়ুয়া আছে জেলায় এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২০টি। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, তার মধ্যে ৬টি বিদ্যালয়ে কোনও ভাবেই পড়ুয়া বাড়ার সম্ভাবনা নেই। তাই ওই বিদ্যালয়গুলি বন্ধ করে কাছাকাছি অন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত করার বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে।’’

অভিভাবকদের একাংশের দাবি, এলাকায় বেসরকারি ইংরেজি বা বাংলা মাধ্যমের একাধিক স্কুল গড়ে উঠছে। অনেক অভিভাবক সেখানে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করাচ্ছেন। এ ছাড়া একই ক্যাম্পাসে প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় চলে এমন একাধিক স্কুল রয়েছে। পঞ্চম শ্রেণিতে সহজে ভর্তি করার জন্য অনেকে ওই সব স্কুলের প্রাথমিক বিভাগে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করান।

শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, শহরের একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া সংখ্যা কমছে। বহরমপুরের ইন্দ্রপ্রস্থে রয়েছে নবপল্লি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পাশেই নামকরা প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ফলে ওই স্কুলে দিনের পর দিন পড়ুয়া কমছে। খাগড়ার যতীন্দ্রনাথ সিংহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ও বন্ধ করার সুপারিশের তালিকায় আছে। ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অতনু হালদার বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের কাছাকাছি দু’টি উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয় একই ক্যাম্পাসে চলে। সেখানে পড়ুয়াদের ভর্তি করতে চান অভিভাবকরা। ফলে আমাদের স্কুলের পড়ুয়া তলানিতে ঠেকেছে। আমরাও চাই, অন্য স্কুলের সঙ্গে এই স্কুলকে যুক্ত করা হোক।’’

জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ৩ হাজার ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। তার মধ্যে ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (ভরতপুরে ৫টি, কান্দিতে ২টি, বড়ঞা, খড়গ্রাম ও মুর্শিদাবাদে ১টি করে এবং বহরমপুর সদরে ৭টি, নবগ্রামে ৩টি) ২০ জনেরও কম পড়ুয়া আছে। ওই বিদ্যালয়গুলিতে ২-৩ জন করে শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ২০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৪টি বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে। সেই বিদ্যালয়গুলিকে পড়ুয়া বাড়ানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

কোন স্কুলগুলিকে বন্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে? বহরমপুর শহরের তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ করার সুপারিশের তালিকায় রয়েছে। স্বর্ণময়ীর স্পোর্টিং ক্লাব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬ জন পড়ুয়া আছে, শিক্ষক-শিক্ষিকা দু’জন। বহরমপুর শহরের নবপল্লি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৬ জন পড়ুয়া আছে, শিক্ষক-শিক্ষিকা ২ জন। বহরমপুরের খাগড়ার যতীন্দ্রনাথ সিংহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়া সংখ্যা ১৩ জন, শিক্ষক ১ জন। বড়ঞার যুগশ্বরা জুনিয়র বেসিক স্কুলে ১০ জন পড়ুয়া আছে। শিক্ষক আছেন এক জন। সমীক্ষা রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, বিদ্যালয়টি গ্রামের বাইরের দিকে রয়েছে। অন্য দিকে গ্রামের ভিতরে থাকা শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে গ্রামের পড়ুয়ারা ভিড় জমাচ্ছে। তাই বিদ্যালয়টি বন্ধ করা যেতে পারে।

কান্দি শহরের মোহনবাগান জিএসএফপি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৭ জন পড়ুয়া, শিক্ষক আছেন দু’জন। সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই বিদ্যালয়টি বন্ধ করে পাশের একটি বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত করা যেতে পারে। মুর্শিদাবাদ শহরের পিলখানা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ১২ জন। শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন তিন জন। প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এই বিদ্যালয়টিকেও বন্ধ করে কাছাকাছি বিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত করা যেতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE