Advertisement
০৫ মে ২০২৪

জঞ্জালে ঢেকেছে শহর, ক্ষুব্ধ করিমপুর

সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন করিমপুর ১ পঞ্চায়েতের প্রধান প্রভাবতী চৌধুরী। নাগরিকদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন কল্লোল প্রামাণিক। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন করিমপুর ১ পঞ্চায়েতের প্রধান প্রভাবতী চৌধুরী। নাগরিকদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন কল্লোল প্রামাণিক। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।

বাসস্ট্যান্ডে জমেছে নোংরা-আবর্জনা। — নিজস্ব চিত্র

বাসস্ট্যান্ডে জমেছে নোংরা-আবর্জনা। — নিজস্ব চিত্র

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৬ ০২:২১
Share: Save:

করিমপুরে পানীয় জলের খুব কষ্ট। টিউবয়েলের জল পানের অযোগ্য। আশেপাশে অনেকে আর্সেনিকে আক্রান্ত। বাসিন্দাদের কাছে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কোনও চিন্তাভাবনা পঞ্চায়েতের আছে কি?

জয়লাল শেখ, রামকৃষ্ণপল্লি

করিমপুরে পানীয় জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। আমরা আইএসজিপি স্কিমে ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি সজলধারা প্রকল্প তৈরি করেছি। তবে এখনই সকলের বাড়িতে বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার মত আর্থিক ক্ষমতা পঞ্চায়েতের নেই। এই সমস্যা সমাধানের জন্য রাজ্য সরকারের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে জানানো হয়েছে।

পঞ্চায়েত এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে রাস্তার পাশেই বাড়ির উচ্ছিষ্ট খাবার, নোংরা আবর্জনা ফেলেন। দুর্গন্ধ ছড়ায়। রাস্তায় নাকে কাপড় চাপা দিয়ে চলতে হয়। বাড়ির ওই সব জঞ্জাল ফেলার জন্য পঞ্চায়েত কি নির্দিষ্ট কোনও জায়গা করে দিতে পারে না?

আশিস মণ্ডল, নবপল্লি

নোংরা আবর্জনা ফেলার জন্য অভয়পুরে একটা প্ল্যান্ট তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। এই কাজের জন্য পঞ্চায়েত পনেরো লক্ষ টাকা পেয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে। এ ছাড়াও পঞ্চায়েতের প্রতি বুথে লাল ও সবুজ রঙের দু’টি গাড়ি থাকবে। সেই গাড়ি বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করে প্ল্যান্টে ফেলবে। আবর্জনা পচে সার তৈরি হবে। সেই সার কৃষি জমিতে দেওয়া হবে। মাস তিনেকের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।

রামকৃষ্ণপল্লির রাস্তায় বর্ষা কালে জলে ডুবে যায়। ছোটদের স্কুলে যেতে খুব সমস্যা হয়। পঞ্চায়েত এলাকার নিকাশি নালা করলে খুব ভাল হয়।

বিশ্বম্ভর মণ্ডল, থানামোড়

গত দশ বছরে পঞ্চায়েত বহু টাকা ব্যয়ে নিকাশি নালা বানিয়েছে। ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে রামকৃষ্ণপল্লি ও কয়েক জায়গায় বৃষ্টির পর জল জমে। হাসপাতালেও আমরা উঁচু ঢালাই রাস্তা বানিয়েছি। থানার পাশের রাস্তায় বর্তমানে পায় আঠারো লক্ষ টাকা ব্যয়ে নালা তৈরির কাজ চলছে। রামকৃষ্ণপল্লির জমা জল নিকাশির জন্য বড় নালা তৈরি প্রয়োজনীয় অর্থ পঞ্চায়েত বহন করতে পারছে না। সেটা ব্লক প্রশাসন করতে পারে। আমরা আগেও তাদের জানিয়েছি। এ বছর বর্ষার জল জমলে পাম্পসেট চালিয়ে জল বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা পঞ্চায়েত করেছে।

বহু মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতাল। সেখানে শয্যার থেকে অনেক বেশি মানুষ প্রতিদিন ভর্তি থাকেন। এখানে সিজারিয়ান প্রসব চালু হলেও তা বন্ধ হয়ে রয়েছে। ফলে বেশিরভাগ প্রসূতিকে দুরের হাসপাতালে পাঠানো হয়। অন্য রোগী পরিষেবায় পঞ্চায়েতের ভূমিকা কি?

পিঙ্কি মণ্ডল, সেনপাড়া

হাসপাতালের উন্নয়নে পঞ্চায়েত থেকে উচু ঢালাই রাস্তা, পানীয় জলের জন্য সজলধারা ও শৌচাগার করা হয়েছে। কুকুরে কামড়ানোর ভ্যাকসিন পঞ্চায়েত থেকে বিনামূল্যে দেওয়া হয়। আর স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি করার লক্ষ্যে বর্তমান বিধায়ক সচেষ্ট হয়েছেন। সম্প্রতি তার উদ্যোগে জেলাশাসক ও জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। আরও কিছু নতুন চিকিৎসক আনা ও অপারেশন চালুর চেষ্টা চলছে।

করিমপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির মোট পনেরোটি ওয়ার্ডে কম বেশি জল বেরোনো নিয়ে সমস্যা রয়েছে। বিশেষ করে পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে হাটঘরে প্রায় দেড়শো ব্যবসায়ী ব্যবসা করেন। তাদের জন্য কোনও শৌচাগার নেই। পঞ্চায়েত ওই ব্যবসায়ীদের কথা কি ভাবছে?

শঙ্কর সরকার, থানা রোড

ব্যবসায়ীদের সমস্যার কথা ভেবে ওখানে একটা শৌচাগার তৈরির পরিকল্পনা করেছে পঞ্চায়েত। ওখানে জমি দেখা হয়েছে। বিধানসভা ভোটের কারণে ওই শৌচাগার তৈরির কাজ পিছিয়ে গিয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি ওই কাজ শুরু হবে।

এলাকার প্রাতর্ভ্রমণকারী থেকে বিভিন্ন খেলার একমাত্র জায়গা করিমপুর রেগুলেটেড মার্কেট মাঠ। আগে সেখানে বর্ষাকালেও জল জমত না। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সেখানে জল জমছে। অসুবিধায় পড়তে হয় সকলকে। এই ব্যাপারে পঞ্চায়েত কি করছে?

রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল, নবপল্লি

মার্কেট সরকারের একটি দফতরের নিয়ন্ত্রণাধীন। পঞ্চায়েতের সেখানে কিছু করার নেই। তবে ওই মাঠের পাশে একটি পুকুর রয়েছে। মাছ চাষ করার জন্য সেই পুকুরের পাড়ে মাটি তুলে বাঁধ দেওয়ার কারণে জল জমছে। পঞ্চায়েত থেকে মার্কেট দফতরকে বিষয়টি জানাব। প্রয়োজনে ওই বাঁধ সরানোর জন্য দফতরকে সব রকম সহযোগিতা করবে পঞ্চায়েত।

করিমপুর থেকে কৃষ্ণনগর ও বহরমপুর রুটে প্রতিদিন প্রায় দু’শো বাস চলাচল করে। অথচ কোনও স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড নেই। একটা স্থায়ী বাসস্ট্যান্ডের জন্য এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি। এই ব্যাপারে পঞ্চায়েতের কোনও উদ্যোগ নেই?

তন্ময় সরকার, বাজারপাড়া

বছর পাঁচেক আগে রেগুলেটেড মার্কেটের মধ্যে ৩.৩ একর জমিতে বাসস্ট্যান্ড করা হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছিল। সেই সময় ওই জমিতে একশো দিনের কাজ করে পঞ্চায়েতের খরচে মাটি তোলা হয়েছিল। সেখানে বাসগুলো বাসস্ট্যান্ড হিসাবে থাকতে শুরু করলে টিউবয়েল বা শৌচাগারের মতো প্রাথমিক পরিষেবা পঞ্চায়েত দেবে। তবে সরকার মাস কয়েক আগে বিপণন দফতরের ওই জমি পরিবহণ দফতরকে দিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। নতুন বিধায়কের উদ্যোগে খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হতে পারে।

দিনের পর দিন টোটোর সংখ্যা বাড়ছে। সঙ্গে রয়েছে ছোটগাড়ির দাপট। অনিয়ন্ত্রিত যান চলাচলের ফলে সব সময় যানজট তৈরি হচ্ছে। অফিস সময়ে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যেতে অসুবিধায় পড়ছে। যান নিয়ন্ত্রণে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?

অসিতোষ বিশ্বাস, অভয়পুর

অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ডে বাস দাঁড়ানোর জায়গা হয় না। তার মধ্যে অসংখ্য টোটো আর ছোট গাড়ির চাপে রাস্তায় যানজট হয়। যানজট নিয়ন্ত্রণে আগে পঞ্চায়েত থেকে জনা কয়েক ছেলেকে ট্র্যাফিকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। একশো দিনের কাজের টাকা থেকে তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হত। আইনগত জটিলটায় তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এলাকার অনেক বেকার ছেলেরা টোটো আর ছোট গাড়ি চালাচ্ছে। মানবিক কারণে তাদের কোনও ব্যবস্থা না করে সরানো যাচ্ছে না। বিডিওকে জানানো হয়েছে তাদের জন্য অন্য কথাও একটা স্ট্যান্ডের ব্যবস্থা করার জন্য। স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড হয়ে গেলে এই সমস্যা হবে না।

সেনপাড়ায় পাশাপাশি দু’টি স্কুল আছে। সেখানে দূর দুরান্তের বহু ছাত্রছাত্রী পড়তে আসে। তাদের অনেকেই বাসে যাতায়াত করে। কিন্তু স্কুলের মোড়ে রাস্তার ধারে তাদের দাঁড়ানোর কোনও জায়গা নেই। গরমের রোদে বা বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজতে হয়। একটা বিশ্রামাগারের খুব দরকার। কিন্তু আজ অবধি পঞ্চায়েত তা করেনি।

শিখারানি মণ্ডল, সেনপাড়া

ওখানে পড়ুয়াদের ও যাত্রীদের জন্য একটা বিশ্রামাগারের খুব প্রয়োজন। পঞ্চায়েত থেকে বড় বিশ্রামাগার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই সেই কাজ শুরু হবে।

পঞ্চায়েত এলাকার বাজার থেকে আনন্দপল্লি যাওয়ার রাস্তায় রাতে কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। ছোট-বড় সকলেই ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে সন্ধ্যার পর যে কোনও সময় অঘটন ঘটতে পারে। পঞ্চায়েত থেকে কী আলোর ব্যবস্থা করা যায় না?

মন্টুকুমার বিশ্বাস, অভয়পুর

ইতিমধ্যে নতিডাঙা মোড় ও বাসস্ট্যান্ডে প্রায় বারো লক্ষ টাকা ব্যয়ে দুটি উচ্চ বাতিস্তম্ভ করা হয়েছে। আধা শহরকেন্দ্রিক পঞ্চায়েতের আর্থিক ক্ষমতা কম। রাস্তার আলোর জন্য বিদ্যুৎ বিল বাবদ বছরে প্রায় আড়াই লক্ষ বা তার বেশি টাকা দিতে হয়। কিছু এলাকায় এখনও আলো নেই। আনন্দপল্লির রাস্তার বামদিক আমাদের পঞ্চায়েতের মধ্যে আর ডানদিক পড়ে করিমপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে। ওখানে বাম দিকে কোনও বিদ্যুৎ খুঁটি নেই। সব খুঁটিই রয়েছে ডানদিকে। তাই আমরা ওখানে আলো দিতে পারিনি।

সরকারের বহু টাকা ব্যয়ে রাস্তার পাশে বেশ ধুমধাম করে কয়েক হাজার গাছ লাগানো হয়েছিল। তার মধ্যে প্রায় কোনও গাছ এখন জীবিত নেই। গাছ লাগানোর জন্য সরকারের এত প্রচার। এ বছর পঞ্চায়েতের গাছ লাগানোর কি পরিকল্পনা আছে?

দুর্গা সাহা, কলেজ রোড

সরকারি পরিকল্পনা মতোই রাস্তার পাশে গাছ লাগানো হয়েছিল। কিন্তু মানুষের সচেতনতার অভাবে রাস্তার পাশের জলাশয়ে পাট পচানো আর আঁশ ছাড়ানোর সময় অনেক গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ বছর মালিয়ানতলায় বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। আগামী দিনেও অনেক গাছ লাগানো হবে। গাছ লাগিয়ে লোক দিয়ে পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়। কোনও সংস্থা গাছ লাগাতে উদ্যোগী হলে আমরা পঞ্চায়েত থেকে তাদের গাছ দিয়ে সাহায্য করব। এখন কোনও বাড়িতে ০-৫ বছরের শিশুকন্যা ও এক বিঘা জমি থাকলে জেলা প্রশাসন শিশুর মাকে ১০১ টি গাছের চারা ও সার দেবে। সেই গাছ বড় হলে অর্ধেক কাঠ ও অর্ধেক ফল পাবে তারা। সাথে মহিলাকে বৃক্ষপাট্টাও দেবে সরকার। যাতে ভবিষ্যতে সেই গাছ বিক্রি করতে কোনও সমস্যা না হয়।

করিমপুরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া জলঙ্গি নদীতে জল নেই। আগে বর্ষাকালে এই নদীই জলে ভরা থাকতো। বড় বড় নৌকাতে মালপত্র আসা যাওয়া চলত। সেই নদীতে পলি পড়ে আজ পাট চাষ হচ্ছে। পঞ্চায়েত কেন নদী সংস্কার করছে না?

মঞ্জুরা খাতুন, অভয়পুর।

একশো দিনের কাজ করে পঞ্চায়েত এত বড় নদী সংস্কার করতে পারবে না। নদী সমস্যার কথা প্রশাসনকে অনেকবার জানানো হয়েছে। নদী সংস্কার নিয়ে জেলা ও মহকুমা প্রশাসন এর আগে বহুবার বৈঠক করেছে। এখানে জলঙ্গি নদী যেহেতু দুই জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তাই দুই জেলা প্রশাসন উদ্যোগী হয়ে সংস্কার করার জন্য আমরা অনুরোধ জানাবো।

করিমপুরে নিকাশি ব্যবস্থা এমনিতেই খারাপ। জল নিকাশির জন্য যে কয়েকটি নালা রয়েছে সেগুলোও নোংরা আবর্জনায় ভরে থাকে। সেই নালাতে জল যেতে পারে না। নালা উপচে জল উঠে আসে রাস্তায়। পঞ্চায়েত কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?

গোবিন্দ তিওয়ারি, সুকান্তপল্লি

বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির জল বের হওয়ার জন্য নালাগুলো তৈরি করা হয়েছে। সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব শুধু পঞ্চায়েতের নয়। ওই এলাকার বাসিন্দাদেরও খেয়াল রাখতে হবে। নালাগুলিতে প্লাস্টিক ও ক্যারিব্যাগে ভর্তি হয়ে যায়। সবাই সচেতন না হলে খুব মুশকিল। আমরা বারবার প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের কথা বলেছি। যেখানে সেখানে প্লাস্টিক বা কোনও আবর্জনা নালায় না ফেলার জন্য মাইকে প্রচার করে মানুষকে সচেতন হওয়ার কথা বলব।

বছরভর করিমপুরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। শীতকালে একাধিক নাট্য সংস্থার বহু নাটক মঞ্চস্থ হয়। তবুও করিমপুরে একটি স্থায়ী নাট্যমঞ্চ নেই। নাট্যমঞ্চ তৈরির ব্যপারে পঞ্চায়েত কি ভাবছে?

গৌতম সরকার, হাসপাতালপাড়া

এমন একটি নাট্যমঞ্চ হওয়া খুব দরকার। এখানে একটি নাট্য সংস্থার জমিও রয়েছে। কিন্তু নাট্যমঞ্চ তৈরি করতে প্রায় লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন। যা আমাদের পঞ্চায়েতের সাধ্যের বাইরে। এর আগেও অনেক বার ব্লক ও জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। নতুন করে এই প্রস্তাব আবার পাঠাব।

অভয়পুর মুসলিমপাড়ার রাস্তা যাতায়াতের অযোগ্য। পঞ্চায়েতকে বারবার বলেও সেই রাস্তা হয়নি। আগামী দিনে কি পঞ্চায়েত ওই রাস্তা তৈরি করবে?

রাজীব শেখ, অভয়পুর

মুসলিমপাড়ার রাস্তার কাজ কিছু দিনের মধ্যেই শুরু করবে পঞ্চায়েত। তারপর আর সমস্যা থাকবে না।

এলাকায় বহু মহিলা বিভিন্ন ভাবে নির্যাতিত হন। কিন্তু তাদের মধ্যে বেশিরভাগ গরিব মহিলা সব সময় বিচার চেয়ে আদালতে যেতে পারে না। ফলে তারা কোনও দিন সঠিক বিচার পান না। পঞ্চায়েত তাদের জন্য কিছু করতে পারবে?

অসিতোষ বিশ্বাস, অভয়পুর

প্রশাসনের সাথে অনুমতি নিয়ে পঞ্চায়েতে সপ্তাহে অন্তত একদিন এমন সভা করা যেতে পারে। এই বিষয়ে সমস্যার কথা প্রশাসনকে আমরা জানাব। তাদের অনুমতি পেলে ওই গরিব মানুষরা সত্যিই উপকৃত হবেন।

পরিবারের এলাকার অনেকের এখন আধার কার্ড হয়নি। স্কুলের মেয়েদের কন্যাশ্রী প্রকল্প কিংবা ব্যাঙ্ক, ডাকঘর, গ্যাস অফিসের কাজে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সকলকে। পঞ্চায়েত কি আধার কার্ডের ব্যবস্থা করবে না?

যোগমায়া প্রামাণিক, বাথানপাড়া

ব্লক প্রশাসনের কাছে জেনেছি, যে সংস্থা আধার কার্ড সরবরাহ করত সরকারের সঙ্গে তাদের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই এখন নতুন আধার কার্ড তৈরির কাজ বন্ধ রয়েছে। পরবর্তীতে নতুন কার্ড তৈরি শুরু হলে সকলকে জানানো হবে।

অনেক বিধবা, প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধ ভাতা পান না। তাদের জন্য পঞ্চায়েত কি ভাবছে?

মিনতি হালদার, বাজিতপুর

পঞ্চায়েত এলাকার বিপিএল তালিকায় যাদের স্কোর ২৭ অবধি রয়েছে তাদের প্রায় আটশো জনকে বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও বার্ধক্য ভাতা দিচ্ছে সরকার। তা ছাড়াও এলাকার একশো জন দুঃস্থ মানুষকে আমদের পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রতি মাসে দু’শো টাকা দেওয়া হয়। আগামি দিনে আর বেশি সংখ্যক মানুষকে দেওয়া হবে।

অনেক গরিব মহিলা আছেন যাদের কোনও আয় উপায় নেই। তাদের জন্য পঞ্চায়েত কিছু করতে পারে?

সোমা মণ্ডল, রামকৃষ্ণপল্লি

এখন গরিব মহিলাদের জন্য অনেক প্রকল্প করেছে রাজ্য সরকার। এলাকায় অনেক গরিব মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করেছেন। তারা তাদের গোষ্ঠীর কাজ সঠিক ভাবে চালালে বিভিন্ন রকম সুবিধা পাবেন। পোলট্রি ফার্ম, হাতে সেলাই শেখার পর ব্লক প্রকল্প আধিকারিক ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ঋণ দিচ্ছেন। দেয় ঋণের পরিমাণ ২৫ হাজার থেকে সর্বাধিক দু’লক্ষ টাকা। আমরাও এলাকার অনেক মহিলাকে মেশিনে সেলাই প্রশিক্ষণের পর বিনামূল্যে সেলাই মেশিন ও সাইকেল দিয়েছি। এ ভাবেই পঞ্চায়েতের বহু মহিলা আজ স্বনির্ভর হয়েছেন।

গরিব মানুষদের মাথা গোঁজার জায়গা না থাকলে তাদের কি পঞ্চায়েত ঘর বানিয়ে দেবে?

গৌতম মণ্ডল, বাজিতপুর

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা গ্রামীণ প্রকল্পে ঘরের জন্য এ বছর পঞ্চায়েতে ১৪৪৯ জনের তালিকা এসেছে। তালিকা অনুযায়ী তাদের তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে তাদের ঘর দেওয়া হবে। তাছাড়া গীতাঞ্জলি, এমএসডিপি প্রকল্পে প্রতি বছর ঘর দেওয়া হয়।

সীমান্ত শহর করিমপুরে এখন বহু বহিরাগত মানষ কর্মসূত্রে আসেন। কেউ কেউ নতুন বাড়ি করলেও বেশিরভাগ কারও বাড়িতে ভাড়ায় থাকছেন। এর আগে দেখা গিয়েছে অপরাধী করিমপুরে থেকে গিয়েছেন। পরে তা জানা গিয়েছে। পঞ্চায়েত এই বিষয়ে কতটা কঠোর?

বাপন স্বর্ণকার, বাজারপাড়া

এলাকার সকল বাড়ির মালিককে যারা তাদের ঘর ভাড়া দেন পঞ্চায়েত থেকে তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেই ভাড়াটিয়ার পরিচয়ের সমস্ত তথ্য পঞ্চায়েতে ও থানায় জমা রাখতে। মাইকে মাঝে মাঝে প্রচারও করা হয়। এখন সকলেই সেই তথ্য পঞ্চায়েতে জমা দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Karimpur Garbage Offended
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE