ছবি প্রতীকী।
ঘণ্টা পড়ে গিয়েছে। ক্লাস শুরু হল বলে। স্টাফরুমে বসে বিড়িতে একটা সুখ টান দিয়েছিলেন শিক্ষক মশাই, আচমকা সপাটে থাপ্পড়।
হেঁচকি-টেঁচকি তুলে একসা অবস্থা। একটু ধাতস্ত হয়ে তাকিয়ে দেখেন, প্রধান শিক্ষক।
‘এটা কেমন হল!’
প্রশ্ন শুনে ফের হাত উঠেছিল তাঁর। কোনওরকমে দ্বিতীয় চড়টা এড়িয়ে মোটর সাইকে হাঁকিয়ে সটান থানায়।
বিড়ি খেয়ে প্রধান শিক্ষকের ধমক-ধামক খেয়েছেন এমন ছাত্রের সংখ্য়া স্কুলে কম নয়। তা বলে শিক্ষক? খসখস করে অভিযোগ দায়ের করে বসেছেন ওই শিক্ষক।
আর এই ঘটনাকে ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ফুটছে রানিনগরের চর মুন্সিপাড়ার হাইস্কুলে।
চড়-চাপাটির মাঝে থমকে গিয়েছে ক্লাসও।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন সকালে প্রার্থনার পরে শিক্ষকরা স্টাফ রুমে এসে বসেছেন। হালকা মেজাজে একটা বিড়ি ধরিয়ে সবে টান দিয়েছেন সহ-শিক্ষকক আদিত্য দে। তখনই সেখানে আবির্ভাব গোপালচন্দ্রবাবুর।
কোনও কথা না বলেই সপাটে চড় কষিয়ে দেন আদিত্যবাবুর গালে। আর তার পরেই গণ্ডগোল শুরু হয়। গোপালবাবু তখন উত্তেজিত হয়ে বলছেন, ‘‘বহুবার আপনাকে সাবধান করেছি।’’
উল্টোদিকে চড় খাওয়া শিক্ষক আদিত্যবাবুর কয়েকজন সহকর্মী তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে পড়েছেন। উত্তেজিত হয়ে গোপালবাবুকে তাঁরা বলেন, ‘‘তাই বলে আপনি গায়ে হাত তুলবেন? ছাত্রদের গায়ে হাত দিতে গেলে আদালতের কথা মনে পড়ে পিছিয়ে আসতে হয়। আর আপনি চড় কষিয়ে বসলেন এক সিক্ষককেই!’’
ঝগড়া তখন সপ্তমে। স্টাফরুমের জানলায় ভিড় করে রয়েছে পড়ুয়ারা। শিক্ষকদের মধ্যে ঝগড়া বলে কথা!
হট্টগোলের মাঝে ক্লাশ ওঠে মাথায়। অধিকাংশ ছাত্রই বাড়ির পথ ধরে।
ঘটনার পরে মোটর বাইক হাকিয়ে সোজা রানিনগর থানায় হাজির হন আদিত্যবাবু এবং তাঁর কয়েক জন সহকর্মী। তাঁদের দাবি, ‘‘মানছি অফিসে বসে বিড়ি খাওয়া অন্যায়, তা বলে এমন চড়!’’
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোপালবাবু অবশ্য চড় মারার কথা স্বীকার করেননি। তিনি বলেন, ‘‘ওই শিক্ষক প্রায়ই অফিসে বসে বিড়ি টানেন। আমি একটু উত্তেজিত হয়ে ধমকে ছিলাম। ওই আমার উপরে চড়াও হয়।’’
স্কুল পরিচালন সমিতি শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসে। তাঁদের দাবি সমস্যা মিটে গিয়েছে। সমিতির সম্পাদক প্রহল্লাদ মণ্ডলও চড় মারার বিষয়টি স্বীকার করেননি। তিনি বলেন, ‘‘সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। মিটে গিয়েছে।’’
আর পুলিশ? তারা বলছে— ‘শিক্ষকেরা পরস্পরকে একটু শিক্ষা দিয়েছেন, আমরা আর কী বলব!’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy