Advertisement
১১ মে ২০২৪
Heavy Rainfall

heavy rainfall: কয়েক মিনিটের ঝড়ে বিপুল ক্ষতি

ভেঙে পড়েছে বহু বাড়ির দেওয়াল। উপড়েছে বহু গাছ। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে খেতের ফসলের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সুতি শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২২ ১০:১৮
Share: Save:

মিনিট কয়েকের ঝড়ের তাণ্ডবে বুধবার রাতে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হল সুতি ২ ব্লকের ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪টিরও বেশি গ্রাম। সঙ্গে মিনিট পাঁচেকের শিলাবৃষ্টি। ক্ষতি হয়েছে অন্তত ২৬টিরও বেশি বাড়ির। উড়ে গেছে বহু বাড়ির টিনের ছাদ। ভেঙে পড়েছে বহু বাড়ির দেওয়াল। উপড়েছে বহু গাছ। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে খেতের ফসলের।

ইতিমধ্যেই দিনভর কৃষি দফতরের একটি টিম এ দিনই এলাকা ঘুরে দেখে ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক যে হিসেব পেয়েছেন তাতে প্রায় ১৩৭৯০ বিঘে জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে পেঁয়াজের ক্ষতি প্রায় ৪৬৮৫ বিঘের। কৃষি দফতরের হিসেবে সব মিলিয়ে প্রাথমিক ভাবে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫৫ কোটি টাকারও বেশি।আনাজ বিশেষত পেঁয়াজ, রসুন, কপি, সর্ষে, খেসারি, মুসুর, কপি,ঢেঁড়শ সহ যাবতীয় আনাজের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত কাশিমনগর ও মহেশাইল ১ ও ২ নম্বর পঞ্চায়েতের এই গ্রামগুলি।

এদিনের ঝড়ে কার্যত বিধ্বস্ত লোকাইপুর, বামুহা, হাজিপুর, একাটিয়া, আমুহা, ফরিদপুর, ভাবকি, উমরাপুর, বাহাগলপুর, মহেশাইল। এলাকার সমস্ত ফসলের গাছ শিলার দাপটে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এদিন যেদিকেই চোখ গেছে সর্বত্রই ঝড়ের তাণ্ডবের ছবি নজরে এসেছে।

লোকাইপুরের মাডাং এলাকায় বহু বাড়ির টিনের চালা উড়ে গিয়েছে, না হয় ধসে পড়েছে। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ যখন ঝড় আসে তখন অনেকেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন, না হয় রাতের খাওয়া দাওয়া সারছিলেন। এদেরই এক জন দোকড়ি সরকার ঘুমিয়ে থাকায় তার উপরই চালা ভেঙে পড়ায় তার নীচে চাপা পড়েন তিনি। স্থানীয় প্রতিবেশীরা তাঁকে চালা সরিয়ে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেন।

ফটিক মণ্ডল বলছেন, “ঘরের মধ্যেই খাওয়া দাওয়া সারছিলাম। হঠাৎই শুরু হয় প্রচন্ড বেগে ঝড়। সেই সঙ্গে প্রচণ্ড শিলা। নিমেষে উড়ে গেল টিনের চাল। রাত থেকে জেগে রয়েছে প্রায় গোটা মাডাং গ্রাম। কে কার বাড়িতে আশ্রয় নেবেন? সবারই প্রায় একই অবস্থা।”

উজ্জ্বল মণ্ডল বলছেন, “তখন বড় জোর সন্ধে সাড়ে ৮টা বাজে। ঝড়, বৃষ্টি শুরু হতেই ঘরে গিয়ে ঢুকে পড়লাম। কিন্তু একটু পরেই দেখি ঝড়ের দাপটে গোটা বাড়ি যেন কাঁপছে। হঠাৎ বিকট শব্দে উপরে তাকিয়ে দেখি টিনের চাল উধাও। বাইরে বেরিয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেব কি, তাঁরও টিনের চালা আগেই উড়েছে ঝড়ের দাপটে।” কার্তিক মণ্ডল বলছেন, “নিমেষের মধ্যে টিনের চালা উড়ে গেল। সকালে গিয়ে দেখি মাঠের পর মাঠ সব ফসল শেষ। তবে বেশি চাষ ছিল পেঁয়াজের। ৫৮ বছর বয়স আমার। শীতের সময় এমন দুর্যোগের মুখে কখনও পড়িনি।”

তবে সব চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়ে চাষের। জঙ্গিপুরের সহকারি কৃষি অধিকর্তা উত্তম কোনাই জানান, শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক আনাজের ক্ষতি হয়েছে সুতি ২ ব্লকের ৬টি পঞ্চায়েতের অন্তত ১৪টি গ্রামে। কৃষি দফতরের অফিসারদের ওই এলাকায় পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় বিডিও সমীরণ কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, “কয়েকটি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চাষের। পঞ্চায়েতগুলিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। ব্লক অফিস থেকে কর্মীরা গেছেন এলাকায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Heavy Rainfall
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE