E-Paper

গরমে গনগনে আঁচ আনাজ বাজারেও, জোগানে ঘাটতি

একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গ্রীষ্মকালীন আনাজের দাম। পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়শ, উচ্ছে থেকে এঁচোড়, ডাঁটা সবেরই দাম ওঠানামা করছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৪১
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

শুরু হয়েছিল আলু দিয়ে। সপ্তাহ দুয়েকের ব্যবধানে আলুর দাম কিলোগ্রাম প্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু দামের এই ঊর্ধ্বগতি ছোঁয়াচে অসুখের মতো এক এক করে বাড়ছে। আদা, রসুন হয়ে অন্য আনাজের দামের ক্ষেত্রেও তা দেখা যাচ্ছে।

বৈশাখ মাসের প্রথম দিকে যা একেবারেই স্বাভাবিক নয়। অথচ, গত ক’দিনে আলুর দাম যেন তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চড়েছে। ২৫ টাকার চন্দ্রমুখী আলুর দাম বেড়ে প্রতি কিলোগ্রামে হয়েছে ৩৫ টাকা। জ্যোতি আলু ১৮ টাকা থেকে হয়েছে ২৫ টাকা। এই ধাক্কা সামলানোর আগেই দাম চড়তে শুরু করেছে আদা, রসুন-সহ প্রায় সব আনাজের। দিন চারেকের ব্যবধানে প্রতি একশো আদার দাম ১৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৫ টাকা।

একই অবস্থা রসুনের দামেও। কিছু দিন আগে নজিরবিহীন ভাবে রসুনের দাম পৌঁছে ছিল ৫০০ টাকা কেজিতে। সেই ধাক্কার পর ভাল রসুনের দাম ২০০ টাকার নীচে নামেনি সাম্প্রতিক কালে। তুলনায় নিম্ন মানের রসুনের একশো গ্রাম বিক্রি হচ্ছিল ১৫ টাকা দরে। এক সপ্তাহের মধ্যে রসুনের দর ১৫-২০ টাকা থেকে চড়ে ২৫ টাকা, ক্ষেত্রবিশেষে ৩০ টাকা দরে প্রতি একশো গ্রাম বিক্রি হচ্ছে। তবে এখনও দামের হেরফের হয়নি পেঁয়াজের। স্থানীয় পেঁয়াজ ২০ টাকা কিলোগ্রাম দরে বিক্রি হচ্ছে। ভিন্‌ রাজ্যের পেঁয়াজের দাম অবশ্য কিছুটা বেশি।

একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গ্রীষ্মকালীন আনাজের দাম। পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়শ, উচ্ছে থেকে এঁচোড়, ডাঁটা সবেরই দাম ওঠানামা করছে। খুচরো আলু ব্যবসায়ী বাপন সাহা বলেন, “আলুর ক্ষেত্রে আমরা পছন্দমতো জিনিসই পাচ্ছি না। এ বার চাষির কাছে এখন আলু নেই বললেই চলে। জোগানের টান পড়ায় দাম বাড়ছে।” আর এক খুচরো বিক্রেতা বলাই দাস বলেন, “আদা বা রসুনের দাম এখন কেন বাড়ছে, আমরাও ঠিক বুঝতে পারছি না। চাইলে ভাল জিনিস পাওয়া যাচ্ছে না। বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।”

সব মিলিয়ে ফলন ঘাটতির বিষয়টি পরিষ্কার। কিন্তু কেন সব আনাজের ঘাটতি হচ্ছে?

জবাবে অভিজ্ঞ চাষি পরেশ বিশ্বাস বলেন, “প্রবল গরমে আনাজের খেত শুকিয়ে যাচ্ছে। এই প্রচণ্ড রোদের তাপে গাছের ফুল জালি খসে পড়ছে। গাছ ঝলসে যাচ্ছে। পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়শ গাছ সব নেতিয়ে পড়ছে। দ্রুত বৃষ্টি না হলে এই দাম আরও চড়তে পারে।”

বাজারে আনাজের দামের এই ঊর্ধ্বগতির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সরকারি কৃষিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “সবই হচ্ছে আবহাওয়ার কারণে। দক্ষিণবঙ্গের সর্বত্র গড় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ওপরে রয়েছে কয়েক দিন যাবৎ। কোথাও তারও বেশি। এই প্রবল তাপমাত্রায় গাছের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা কমে যায়। তাই ফলন কমে যায়। যত দিন না বৃষ্টি হচ্ছে বা তাপমাত্রা হ্রাস পাচ্ছে তত দিন জোগান ঘাটতি চলতেই থাকবে। ফলে, আনাজের দামও কিছুটা বেশিই থাকবে। কেননা, বিক্রেতারা চাইলেই পর্যাপ্ত আনাজ পাবেন না।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Summer

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy