ত্রাস। যার দাপাদাপিতে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষেরা। নিজস্ব চিত্র
তখনও সন্ধ্যা নামেনি। বৃষ্টি পড়ছে। সাইকেলে নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরছিলেন ফুলিয়া কলোনির সুধীর দাস। আচমকা ঝোপের আড়াল থেকে ছুটে এল সাদা রঙের ঘোড়া, ধাক্কা মারল সাইকেলে। সুধীরবাবু ছিটকে পড়েন মাটিতে। কিছু বোঝার আগেই ঘোড়াটা কামড়ে ধরে ওই বৃদ্ধের পা।
গত কয়েক দিনে একই ভাবে স্কুল যাতায়াতের পথে আক্রান্ত একাধিক পড়ুয়া। তাদের সবাইকেই অ্যান্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন দিয়ে চিকিৎসা শুরু হয়েছে। ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পাঁচ দিনে বারো জনকে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
শান্তিপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিয় দাস জানান, বিষয়টা বিপজ্জনক অবস্থায় পৌঁছে যাচ্ছে। জানা গিয়েছে, ঘোড়াটাকে কুকুরে কামড়েছিল। সেই থেকেই অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে সেটি। ব্লক স্বাস্থ্য দফতর থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে শান্তিপুরের বিডিওকে।
অভিযোগ, তার পরেও ঘোড়ার ব্যাপারে প্রশাসন পদক্ষেপ করেনি। ঘোড়াটি ফুলিয়ার ৩টি হাইস্কুল সংলগ্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করায় পড়ুয়ার ও শিক্ষক শিক্ষিকা রীতিমতো আতঙ্কে। ফুলিয়া বিদ্যানিকেতন, ফুলিয়া বিদ্যা মন্দির ও ফুলিয়া গার্লস হাইস্কুল পাশাপাশি। সকাল থেকে রাত ঘোড়াটি দেখা যাচ্ছে ওই এলাকাতেই।
ফুলিয়া শিক্ষানিকেতন হাইস্কুলের শিক্ষক নিধিরকুমার দাস বলছেন, “ঘোড়াটা প্রায়ই লোকজনকে কামড়ে দিচ্ছে। সেটি আমাদের স্কুলের দু’জন ছাত্রকেও কামড়েছে। তাড়া করেছিল এক শিক্ষককেও।” সোমবার স্থানীয় এক হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক গাড়ি আটকে সামনের কাচের উপরে পা তুলে ঘোড়াটা কিছুক্ষণ দঁড়িয়ে ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ রকম বেশ কয়েকটি বাতিল ঘোড়া এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। এত দিন কিছু লোকজন নানা ভাবে তাদের উত্ত্যক্ত করত। এ বার উল্টোটা ঘটছে!
বিডিও ছন্দা জানা এই প্রসঙ্গে বলেন, “প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের কর্মীরা দিন তিনেক আগে ঘোড়াটাকে ধরেছিলেন। তারপর কী ভাবে ছাড়া পেয়ে গেল বুঝতে পারছি না। আমি আবার ওঁদের সঙ্গে কথা বলব।” ফুলিয়া টাউনশিপ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের উৎপল বসাক বলছেন, “ঘোড়াটা একের পর এক মানুষকে কামড়ে চলেছে। জানি না আর কত মানুষ আক্রান্ত হলে নড়ে বসবে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy