Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Dengue

রক্ত দিয়ে অপেক্ষা রিপোর্টের

আর এই একই প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে নাজেহাল প্যাথোলজি বিভাগের কর্মীরা। এমনিতেই এখন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করাতে অন্য সময়ের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি রোগী আসছেন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:৪০
Share: Save:

চার বছরের নাতনিকে নিয়ে কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালের প্যাথোলজির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন শ্যামলী ঘোষ। বাড়ি মায়াপুরে। প্রায় দশ দিন ধরে নাতনিটা জ্বরে ভুগছে। কৃষ্ণনগরের এক ডাক্তারকে দেখাচ্ছিলেন। জ্বর না সারায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলেছেন তিনি। রক্তপরীক্ষার পরে তাঁর প্রশ্ন, “রিপোর্ট কি আজই পাওয়া যাবে?”

আর এই একই প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে নাজেহাল প্যাথোলজি বিভাগের কর্মীরা। এমনিতেই এখন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করাতে অন্য সময়ের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি রোগী আসছেন। যাদের বেশির ভাগই জ্বরের। অন্য সময়ে যেখানে গড়ে একশো জন রোগী আসে, এখন সেটা বেড়ে হয়েছে প্রায় আড়াইশো। রিপোর্ট তৈরি করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ডাক্তার থেকে কর্মীদের। জরুরি ভিত্তিতে ব্লাডব্যাঙ্কের কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে প্যাথোলজি বিভাগে।

ওই বিভাগের এক কর্মী জানান, নানা ব্লক থেকেও রক্ত আসছে পরীক্ষার জন্য। কারণ এই হাসপাতাল ছাড়া এক মাত্র কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে ডেঙ্গি ধরার ‘এলাইজা’ পরীক্ষার যন্ত্র আছে। করিমপুর থেকে শান্তিপুর, সব আসছে শক্তিনগরেই। সেই কারণেই জেলা হাসপাতালে ভর্তি থাকা জ্বরের রোগীদের রিপোর্ট দিনের দিন দিতে পারলেও অন্য ব্লক বা বহির্বিভাগ থেকে আসা রোগীদের রিপোর্ট দিতে গোটা একটা দিন লেগে যাচ্ছে। কারও রক্তে ডেঙ্গি ধরা পড়লে ভর্তি করে নেওয়া হচ্ছে।

গত বছর ডেঙ্গির চিকিৎসার জন্য ‘আইসোলেশন’ বিভাগে আলাদা ঘরের ব্যবস্থা হয়েছিল। এ বার ওই বিভাগ সংস্কারের কাজ চলায় তা আর করা যায়নি। ফলে মহিলা ও পুরুষ মেডিসিন বিভাগের পাশেই আলাদা ঘরে ২০টি করে শয্যা রেখে দেওয়া হয়েছে ডেঙ্গি রোগীদের জন্য। এ দিন মহিলা বিভাগে ৪৭ জন ও পুরুষ বিভাগে ২৫ জন জ্বরের রোগী ছিলেন। এর ৮ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত। কিন্তু মেডিসিন ওয়ার্ডের পাশে ডেঙ্গি রোগী রাখায় সংক্রমণ ছড়াতে পারে আতঙ্কও ছড়াচ্ছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় অবশ্য বলেন, “ডেঙ্গি নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছি।” রোগীদের মশারি দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও ডেঙ্গি রোগীদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা। তিন তলায় মহিলাদের ৪ নম্বর ও পুরুষদের ৫ নম্বর ঘরে রাখা হচ্ছে। সাধারণ জ্বরের রোগীদের রাখা হচ্ছে মেডিসিন বিভাগের তিনটে ঘরে। রোজই জ্বর নিয়ে গড়ে ৬০ জন রোগী ভর্তি থাকছেন। অধিকাংশই জঙ্গিপুর মহকুমার বাসিন্দা। এঁদের অনেকেরই বেসরকারি পরীক্ষাগারে করা রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির কথা বলা হয়েছে। তাঁদের ‘এলাইজা’ টেস্ট হচ্ছে। কিন্তু রিপোর্ট আসতে ২-৩ দিন লাগছে।

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের সুপার তথা সহ-অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল এ দিন বলেন, ‘‘শুধু মেডিক্যালেই প্লেটলেট কাউন্ট ও এলাইজা টেস্ট করা হয়। তাই চাপ থাকছে।’’ মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাসের দাবি, “শীত পড়তে শুরু করায় জ্বরের প্রকোপ কমতে শুরু করেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Malaria Blood Report
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE