পাট-কাটা: জলাশয়ে পড়ার আগে। নিজস্ব চিত্র
শুরুটা হয়েছিল কালবৈশাখীর বৃষ্টি দিয়ে। তার পর নিন্মচাপ এবং মরসুমি বৃষ্টি মিলিয়ে বহু দিন পরে একেবারে স্বাভাবিক ছন্দে রয়েছে বর্ষা। নিয়মিত বৃষ্টি হচ্ছে। এমন আবহআওয়া চলতে থাকলে রাজ্যের পাট চাষিরা লাভবান হবেন বলেই মনে করছেন পাট উৎপাদক জেলাগুলির কৃষি আধিকারিকেরা। বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক হওয়ায় এ বার পাট পচানোর জল নিয়ে চাষিদের সমস্যায় পড়তে হবে না গত দু’বছরের মতো।
ইতিমধ্যেই বৃষ্টিতে থইথই মাঠঘাট। নদিয়া, মুর্শিদাবাদ বা বর্ধমানের সর্বত্র পাটের ফলনও ভাল। এমন খুশির মরসুমে দানা বাঁধছে অন্য আশঙ্কা। জল সহজলভ্য হওয়ায় যেখানে সেখানে পাট পচানো অন্য কোনও সমস্যা ডেকে আনবে না তো!
আসলে বছরভর প্রায় শুকনো ডোবা, মজা খাল কিংবা মূল স্রোত থেকে বিছিন্ন নদী খাতগুলি বর্ষার জলে ভরে উঠলেই সেগুলি দেশজ মিঠে জলের মাছের প্রজনন ক্ষেত্র হয়ে ওঠে। প্রায় হারিয়ে যেতে বসা সরপুঁটি, মৌরলা, চাঁদা, ফলুইয়ের ভরসা ওই সব জলা। যা তাদের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা হাতের কাছে প্রচুর জলে পেয়ে যেখানে সেখানে পাট পচানো হলে, হারিয়ে যেতে বসা ওইসব মাছের প্রজনন দারুন ভাবে ব্যহত হবে।
সিঙ্গুর সরকারি মহাবিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর দেবজ্যোতি চক্রবর্তী জানান, জলে পাট পচানোর কাজটি করে বেশ কিছু অণুজীব। এদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ‘ক্লসট্রিডিয়াম টিটেনি’। যা জলের অক্সিজেন শোষণ করে পরিমাণ এতই কমিয়ে দেয়, যে ওইসব মাছদের পক্ষে বাঁচা দুষ্কর হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, “মাছকে বাঁচতে হলে এক লিটার জলে কমপক্ষে ৩ মিলিগ্রাম অক্সিজেন থাকতেই হয়। জলাশয়ের জলে সাধারণ ভাবে ১২ থেকে ১৬ মিলিগ্রাম অক্সিজেন থাকে। কিন্তু পাট পচালেই তা কমে শূন্য হতে পারে।’’
যদিও মুর্শিদাবাদ জেলার উপকৃষি অধিকর্তা তাপস মণ্ডল মনে করেন, “পাট সাধারণত নদী কিংবা বড় নয়ানজুলিতে ভেজানো হয়, সেখানে ওই সব মাছ নষ্ট হওয়ার শঙ্কা কম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy