Advertisement
E-Paper

স্কুলে আদায় বাড়তি টাকা

এই হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও কল্যাণীর কয়েকটি স্কুল রীতিমতো বেশি টাকা নিয়েই ছাত্র ভর্তি করেছে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণও হয়েছে। শেষ পর্যন্ত জেলা স্কুল পরিদর্শক অতিরিক্ত টাকা ফেরানোর নির্দেশ জারি করেছেন।

সুপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৭ ০১:৫৬

ফি বেঁধে দিয়েছে সরকার। সরকারি স্কুলে পড়ুয়া ভর্তির ক্ষেত্রে ২৪০ টাকার বেশি কোনও ভাবেই নেওয়া যাবে না। দিন কয়েক আগে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া অঙ্কের থেকে বেশি টাকা নেওয়া হলে স্কুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও কল্যাণীর কয়েকটি স্কুল রীতিমতো বেশি টাকা নিয়েই ছাত্র ভর্তি করেছে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণও হয়েছে। শেষ পর্যন্ত জেলা স্কুল পরিদর্শক অতিরিক্ত টাকা ফেরানোর নির্দেশ জারি করেছেন। তার পরে দীর্ঘ দিন পার হয়ে গেলেও এখনও সেই টাকা ফেরায়নি স্কুলগুলি। শুধু তাই নয়, হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও ফের এ বছরও কয়েকজন ছাত্রের কাছ থেকে ডোনেশনের নামে ফের বেশি টাকা আদায় করা হয়েছে। সেই অভিযোগও জমা পড়েছে স্কুল পরিদর্শকের কাছে।

ভর্তির সময় বিভিন্ন স্কুল পড়ুয়াদের থেকে ইচ্ছে মতো টাকা আদায় করত বলে অভিযোগ। যা কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষার অধিকার আইনের পরিপন্থী। সেখানে সরকারি স্কুলে পড়ুয়া ভর্তির ক্ষেত্রে টাকা আদায়ের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারও পড়ুয়া ভর্তির ফি ২৪০ টাকা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। সরকার নির্দিষ্ট করে দিলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্কুল তা মানছে না বলেই অভিযোগ। অনেক স্কুল ভর্তির জন্য দু'টি রসিদ করেছে। একটিতে সরকার নির্ধারিত ২৪০ টাকাই নেওয়া হচ্ছে। অন্য রসিদে উন্নয়ন ফি বাবদ ইচ্ছেমতো অঙ্ক আদায় করা হচ্ছে।

কল্যাণীর পান্নালাল ইনস্টিটিউশন এবং ইউনিভার্সিটি এক্সপেরিমন্টাল হাইস্কুল গত বছর সব শ্রেণিতে ভর্তির সময় ছাত্রদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফি-এর থেকে অনেক বেশি টাকা আদায় করে। প্রায় সব পড়ুয়ার ক্ষেত্রে এক হাজারেরও বেশি টাকা করে আদায় করা হয়। কিছু অভিভাবক বিষয়টি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান। সে সব ধোপে টেকেনি। বেশ কয়েকজন পড়ুয়ার অভিভাবককে নিয়ে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে অভিযোগ করে। অভিযোগ জানানো হয় স্কুল শিক্ষা দফতরেও। এ বছরও পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য পান্নালাল ইনস্টিটিউশন নোটিস দেয় ৮২৫ টাকা করে জমা দিতে হবে। অভিভাবকদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে পিছু হটে স্কুল কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত সেই নোটিস প্রত্যাহার করে ২২৫ টাকা ফি নেয় তারা। কয়েকজন ছাত্রের অভিভাবক অভিযোগ করেন, তাঁদের কাছ থেকে ১২৯৫ টাকা করে নেওয়া হয়েছে।

গত বছর করা অভিযোগগুলির ভিত্তিতে এপ্রিলে স্কুলের প্রতিনিধিদের দফতরে ডেকে পাঠান স্কুল পরিদর্শক মিতালি দত্ত। ডেকে পাঠানো হয় অভিযোগকারীদেরও। স্কুল কর্তৃপক্ষ কার্যত দোষ স্বীকার করে নেন। স্কুল পরিদর্শক নির্দেশ দেন, পড়ুয়াদের কাছ থেকে আদায় করা বাড়তি টাকা ফেরাতে হবে। সেই টাকা ফেরায়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে ফের এ বছর বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগ।

নিয়ম বহির্ভুত জেনে কেন স্কুল পড়ুয়াদের কাছ থেকে বেশি টাকা আদায় করা হয়েছিল? ইউনিভার্সিটি এক্সপেরিমেন্টাল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ বিশ্বাস এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এ বছর আমরা ২৪০ টাকা করেই নিচ্ছি।’’ কিন্তু গত বছর কেন বেশি টাকা নেওয়া হয়েছিল? স্কুল পরিদর্শকের নির্দেশ সত্ত্বেও কেনই বা বাড়তি টাকা ফেরানো হয়নি?

নারায়ণবাবু বলেন, ‘‘সেই উত্তর এখনই দিতে চাইছি না।’’ পান্নালাল ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক অসিত সেন বলেন, ‘‘টাকা ফেরানোর জন্য কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। সে সব করা হচ্ছে। আর এ বছর যেটা বেশি নেওয়া সেটা ‘ক্লারিকাল মিসটেক’ ছাড়া কিছু নয়।’’ মিতালি দত্ত বলেন, ‘‘নির্দেশ না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

school Extra Fees Kalyani কল্যাণী পার্থ চট্টোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy