যোগদানের পরে শুভেন্দুর সঙ্গে কাঞ্চন মৈত্র।— নিজস্ব চিত্র
তিনি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন।
দলবদলের অনুষ্ঠানে ভিড় দেখে আপ্লুত হলেন।
ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানালেন সেই জমাট ভিড়কে।
এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক ছিল। হাতে ধরা কর্ডলেস মাইক্রোফোনের স্যুইচও তিনি বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
কিন্তু মুর্শিদাবাদের জেলা পর্যবেক্ষেক, শুভেন্দু অধিকারী তাঁর কানে কানে কিছু একটা বলতেই ফের তাঁকে মাইক ধরতেই হল।
এবং তিনি অমায়িক ভাবে বললেন, ‘‘মা-মাটি-মানুষ জিন্দাবাদ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ।’’
তুমুল হাততালি। হাওয়ায় উড়ল সবুজ আবির। সেই সঙ্গে উড়ে এল টিপ্পনিও, ‘‘সদ্য কংগ্রেস থেকে এলেন তো। জিভ সড়গড় হতে আরও একটু সময় লাগবে বৈকি!’’
তিনি, বহরমপুরের সদ্য দলত্যাগী কাউন্সিলর, সুব্রত মৈত্র ওরফে কাঞ্চন বলছেন, ‘‘এত লোকের ভিড়, তৃণমূলের তাবড় লোকজন—এ সব দেখে একটু ঘাবড়েই গিয়েছিলাম, বুঝলেন। তবে খেইটা শুভেন্দুদা কিন্তু গুরুর মতো ধরিয়ে দিলেন।’’
বহরমপুর মোহনের মোড়ে রবিবার কাঞ্চন ছাড়াও বড়ঞা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি-সহ ২৬ জন, বেলডাঙা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি-সহ ২১ জন, দেবকুণ্ডু গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যেরা, নবগ্রাম ব্লকের বেশ কয়েক জন নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং প্রাক্তন জেলা পরিষদ কর্মধ্যক্ষ আতিবুর রহমান তৃণমূলে যোগ দেন।
গত অগস্টে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাঞ্চন দল ত্যাগ করার কথা জানিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী ও জেলা তৃণমূলের সভাপতি মান্নান হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন। তখনই ঠিক হয় বহরমপুরে সভা করার। কিন্তু দলবদলকে ঘিরে এ দিন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রায় সকলেই হাজির ছিলেন। যা দেখে তৃণমূলের এক জেলা নেতা বলছেন, ‘‘দলে যোগ দেওয়ার আগেই তৃণমূলের সব নেতাকে এক মঞ্চে হাজির করে কাঞ্চন কিন্তু অসাধ্য সাধন করল!’’
তবে জেলার শতাধিক গ্রামপঞ্চায়েত, ১০টি পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের সদস্য ১ থেকে ৩৯-এ নিয়ে যাওয়া, জেলার ছ’টি পুরসভার মধ্যে চারটি পুরসভা দখল, বিধায়কের সংখ্যা চার থেকে পাঁচে পৌঁছে দেওয়া—সবই হয়েছে গত ১৪ মাসে। এই তথ্য তুলে ধরে শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘২০১৫ সালের ৬ জুন নজরুল মঞ্চের সভায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক করেছিলেন। এখন মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস দুর্গের অস্তিত্ব আছে কি না মুর্শিদাবাদের জনগণ বলবে, মিডিয়া বলবে আর ছিন্নমূল কংগ্রেসের নেতারা বলবেন।’’
শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূলে যারা যাচ্ছে তারা নাকি সকলেই পুলিশের ভয়ে, অর্থের ভয়ে চলে যাচ্ছে। তারা নাকি নীতিহীন কাজ করছে। কিন্তু এই অধীর চৌধুরীর মুখে নীতির কথা মানায়! যিনি ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিএম, আরএসপির দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, পরে মান্নান হোসেনকে ঠকিয়েছেন।’’
যা শুনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বলছেন, ‘‘আমি কোনও দিন মানুষের রায়কে অপমান করিনি। নীতিহীন কাজ কারা করছে তার উত্তর একদিন জেলার মানুষই দেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy