Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Berhampore

কর্ণসুবর্ণের প্রাচীর মেরামত শুরু পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের

উদ্যোক্তারা জানান কর্ণসুবর্ণের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নক্ষেত্রগুলির সংরক্ষণ, রাজবাড়ি ডাঙা ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ অধিগৃহীত প্রাচীর মেরামতের দাবি জানান হয়।

প্রাচীর দেওয়া শুরু হয়েছে কর্ণসুবর্ণে। নিজস্ব চিত্র

প্রাচীর দেওয়া শুরু হয়েছে কর্ণসুবর্ণে। নিজস্ব চিত্র

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:২১
Share: Save:

বহরমপুরের কর্ণসুবর্ণ অঞ্চল ইতিহাস প্রসিদ্ধ ক্ষেত্র। সেই ইতিহাস সংরক্ষণ করে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে পর্যটকদের সামনে তুলে ধরতে হবে, এই দাবি ছিলই। এই প্রত্নক্ষেত্রে প্রাচীর দিয়ে সেই কাজ শুরু হয়েছে।

মুর্শিদাবাদ জেলা ইতিহাস ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের উদ্যোগে কর্ণসুবর্ণ প্রত্নক্ষেত্রে সমীক্ষা চালানো হয় ২০২২ সালের মার্চে। সেখানে কর্ণসুবর্ণ লাগোয়া নীলকুঠি প্রত্নক্ষেত্র হয়ে রাক্ষসিডাঙা ঢিবি এলাকার প্রত্নক্ষেত্র হয়ে রাজবাড়িডাঙা ঘুরে দেখা হয়। উদ্যোক্তারা জানান কর্ণসুবর্ণের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নক্ষেত্রগুলির সংরক্ষণ, রাজবাড়ি ডাঙা ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ অধিগৃহীত প্রাচীর মেরামতের দাবি জানান হয়।

উল্লেখ্য গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ থেকে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে, মুর্শিদাবাদ জেলা ইতিহাস ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের রায়গঞ্জ বিভাগ, পূর্বাঞ্চল বিভাগ এবং দেশের প্রধান সদর দপ্তর দিল্লিতে বিষয়টির সমাধান চেয়ে লিখিত চিঠি দেওয়া হয়।

গত বছরের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে সেই চিঠির ভিত্তিতে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের পূর্বাঞ্চল বিভাগ বিষয়টি নিয়ে তড়িঘড়ি রিপোর্ট চেয়ে পাঠায়। রাজবাড়ি ডাঙা প্রত্নক্ষেত্রটির দেখভালের দায়িত্বে রায়গঞ্জ বিভাগ।

কিন্ত তারপরেও কেটে যায় এক বছর। শেষ পর্যন্ত সেই দাবি মেনে অধিগৃহীত প্রাচীর মেরামতির কাজ শুরু করল পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ। এক সপ্তাহ ধরে সেখানে কাজ চলছে।

মুর্শিদাবাদ জেলা ইতিহাস ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের সম্পাদক অরিন্দম রায় বলেন,“আমরা দীর্ঘ দু’বছর ধরে মৌখিক ও চিঠির মাধ্যমে লেগে ছিলাম। শেষপর্যন্ত কার্যত অবহেলিত কর্ণসুবর্ণের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নক্ষেত্রের ভেঙে যাওয়া প্রাচীরটি মেরামতি হচ্ছে দেখে ভাল লাগছে। তবে আমাদের দাবি, পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ ও রাজ্য পর্যটন দপ্তরের যৌথ ভাবে এই প্রত্নক্ষেত্রটি সহ কর্ণসুবর্ণের নানা স্থানে ছড়িয়ে থাকা ঐতিহাসিক স্থানগুলোতে পরিকাঠামোর উন্নয়ন ঘটুক। একটি সামগ্রিক পর্যটন কেন্দ্র তৈরি হোক। এই দাবি নিয়ে আমাদের লড়াই চলবে।”

অরিন্দম বাবু জানান, প্রাচীরের অনেকটা কাজ এগিয়েছে। এতে খুশি এলাকার মানুষ ও ইতিহাস অনুরাগীরা। চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং এই কর্ণসুবর্ণ নগরী তার উপকণ্ঠে ‘রক্তমৃত্তিকা মহাবিহারে’র বিবরণ দিয়ে গিয়েছেন।

দীর্ঘ সময় ধরে অবহেলিত বলেই স্থানীয়দের মত। এই কর্ণসুবর্ণ মহানগরী ছিল স্বাধীন ও সার্বভৌম রাজা শশাঙ্কের সাম্রাজ্যের রাজধানী। কর্ণসুবর্ণ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা অভিষেক মণ্ডল বলেন, “গত কয়েক দিন সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ চলছে। খুব ভাল লাগছে।”

শিক্ষক প্রদীপনারায়ণ রায় বলেন, “স্কুলে যাওয়ার পথে এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাই। লক্ষ করেছি সীমানা প্রাচীর সুন্দর ভাবে তৈরি হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Berhampore Pre Historic Archaeological Sites
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE