Advertisement
E-Paper

নগদ বাড়ন্ত, মজুরি মিলছে চালে

কারও মজুরি দিনে পঞ্চাশ টাকা। কারও আবার একশো থেকে বড়জোর ১৮০ টাকা। একদিকে, নগদ বাড়ন্ত। অন্য দিকে, খুচরো মিলছে না। তাহলে শ্রমিকদের মজুরি হবে কী ভাবে?

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:৩২
বন্ধ তাঁত। কপালে ভাঁজ শ্রমিকদের। — নিজস্ব চিত্র

বন্ধ তাঁত। কপালে ভাঁজ শ্রমিকদের। — নিজস্ব চিত্র

কারও মজুরি দিনে পঞ্চাশ টাকা। কারও আবার একশো থেকে বড়জোর ১৮০ টাকা। একদিকে, নগদ বাড়ন্ত। অন্য দিকে, খুচরো মিলছে না। তাহলে শ্রমিকদের মজুরি হবে কী ভাবে?

বহু ভেবেচিন্তে একটা উপায়ও বের করেছেন হরিহরপাড়া তাঁতিপল্লির মহাজনেরা। নগদের পরিবার্তে শ্রমিকদের চাল দিচ্ছেন তাঁরা। তাঁদেরই একজন মহম্মদ আলি। তিনি বলছেন, ‘‘এ ছাড়া আর তো কোনও উপায় নেই। ধারে-নগদে চালের বস্তা কিনছি। সেই চাল মজুরদের ভাগ করে দিচ্ছি।’’

একসময় নবদ্বীপেও রমরমিয়ে চলত গামছার কারবার। তবে গত কয়েক বছরে সেই ছবিটা বদলে গিয়েছে। এখন যন্ত্রচালিত তাঁত ও ভিন রাজ্য থেকে আসা গামছার বাঁধনে স্থানীয় গামছা কারবারিদের অবস্থা খুব খারাপ। মজুরি কী ভাবে মেটাচ্ছেন?

প্রশ্নটা শুনেই ঝাঁঝিয়ে উঠলেন স্বরূপগঞ্জের গোপাল দেবনাথ, ‘‘গামছাই বোনা হয় না। তার আবার মজুরি।’’ তবে যাঁরা এখনও কষ্ট করে হস্তচালিত তাঁতে গামছা বোনেন তাঁরা কবুল করছএন, ‘‘নোট বাতিলের বাজারে সব দিক থেকেই তাঁরা ভুগছেন।’’

সেই বাপ-ঠাকুর্দার আমল থেকে আলিদের গামছার কারবার। বেলডাঙা হাটের যে গামছা এত জনপ্রিয় সেই গামছার জোগান দেন হরিহরপাড়ার মহম্মদ আলি-সহ অনেকেই। এ দিকে নোট বাতিলের পর থেকে নগদের অভাবে সুতো কেনা যাচ্ছে না। হরিহরপাড়ায় বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি তাঁত। বিয়ের মরসুমে ব্যবসা প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে বলে দাবি গামছার কারবারিদের।

যে দু’একটি বাড়িতে তাঁত চলছে তাঁরাও সমস্যায় পড়েছেন শ্রমিকদের মজুরি দিতে। হরিহরপাড়ার বহু পরিবার ওই গামছা তৈরির সঙ্গে যুক্ত। কেউ সুতো পাকান, কেউ তাঁত চালান। কেউ আবার ওই কাজে নানা ভাবে সাহায্যও করেন। তাঁদের মজুরিও আলাদা আলাদা।

নগদ বাড়ন্ত হওয়ায় সব থেকে মুশকিলে পড়ছিলেন দিন আনা দিন খাওয়া লোকজন। তাঁদের কথা ভেবেই মহম্মদ আলির মতো অনেকেই টাকার বদলে চাল দেওয়া শুরু করেন।

হরিহরপাড়ার মণ্টু বিশ্বাস যেমন বলছেন, ‘‘মজুরির টাকায় চাল-ডাল কিনে আনার পরে ঘরে উনুন জ্বলে। নোট বাতিল হওয়ার পরে খুব সমস্যায় পড়েছিলাম। এখন টাকার বদলে চালটা পাওয়াতেও কিছুটা রক্ষে। প্রয়োজন মতো চাল বাড়িতে আনছি। বাকিটা বিক্রি করে আনাজ ও মশলা কিনছি।’’ গামছা ব্যবসায়ী রাজেশ আনসারি যেমন বলছেন, ‘‘ব্যবসার অবস্থা সত্যিই খারাপ। টাকার সমস্যা দ্রুত না মিটলে আমাকেও মহম্মদ আলির পথই বেছে নিতে হবে।’’

Tant crisis Demonetisation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy