Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

লাঠি বাগিয়ে ছুটল বাহিনী, খুশি জনতা

বিজেপির তরফে চরের গ্রামগুলির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কৃষ্ণ মাহাতো বললেন, ‘‘ভোট শেষে এলাকার লোক তৃপ্ত। সক্রিয় ছিল বাহিনী।’’

বুথের কাছ থেকে অবাঞ্ছিত লোকজনকে সরিয়ে দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। সোমবার গয়েশপুরে। ছবি: প্রণব দেবনাথ

বুথের কাছ থেকে অবাঞ্ছিত লোকজনকে সরিয়ে দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। সোমবার গয়েশপুরে। ছবি: প্রণব দেবনাথ

নিজস্ব প্রতিবেদন 
শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৯ ০২:১৪
Share: Save:

ভোট শুরুর পর তখন কয়েক ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। সোমবার চর যাত্রাসিদ্ধির স্কুলের আশপাশে অহেতুক কিছু লোক জড়ো হয়েছিল। সেখানে গোলমালের পরিস্থিতি তৈরি হতেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর দুই জওয়ান মোটা লাঠি নিয়ে তেড়ে গেলেন। মূহূর্তে এলাকা ফাঁকা। তার পর সারা দিন ওই বুথে আর কোনও সমস্যা হয়নি। এলাকার লোক জন উচ্ছ্বসিত। বহুদিন পরে তাঁরা শান্তিতে ভোট দিলেন। বিজেপির তরফে চরের গ্রামগুলির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কৃষ্ণ মাহাতো বললেন, ‘‘ভোট শেষে এলাকার লোক তৃপ্ত। সক্রিয় ছিল বাহিনী।’’

দুপুর আড়াইটে নাগাদ ফতেপুর হাইস্কুলে তৃণমূল কর্মীদের উপরে লাঠি চালানোর অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় পার্থ পাল, সাদ্দাম মণ্ডল এবং সুপ্রিয় দে নামে তিন তৃণমূল কর্মী আহত হয়েছে বলে অভিযোগ। আহত সুপ্রিয় দাবি করেন, ‘‘আমরা ভোট দিতে যাচ্ছিলাম। সেই সময় দেখি, কয়েক জন বিজেপি কর্মীকে বুথে নিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আমরা প্রতিবাদ করতে ওরা আমাদের উপর হামলা চালায়।” হরিণঘাটা ব্লক তৃনমূলের সভাপতি চঞ্চল দেবনাথও দাবি করেন, ‘‘এ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী ভূমিকা মোটেও ভাল ছিল না। কোথাও তারা বিজেপি-কে ভোট দিতে বলেছে। কোথাও আবার বুথের ২০০ মিটারের বাইরে গিয়ে আমাদের কর্মীদের মেরেছে। ফতেপুরে আমাদের কর্মীদের উপর লাঠি চালিয়েছে।’’

দিন কয়েক ধরেই বিরোধীরা, বিশেষ করে বিজেপি আশঙ্কা করছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীকে হয়তো কোনও ভাবে নিষ্ক্রিয় করে রাখবে তৃণমূল। রবিবার দুপুরে বনগাঁ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের ঘনিষ্ঠ নেতা তারকনাথ সরকার বলছিলেন, ‘‘হয়তো নানা ভাবে তৃণমূল কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিজেদের পক্ষে টানার চেষ্টা করবে। নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে দেবে না।’’ কিন্তু সোমবার কার্যত সেই আশঙ্কা ভুল প্রমানিত হল। এ দিন সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতা চোখে পড়ল। সব পোলিং স্টেশনেই কেন্দ্রীয় বাহিনী উপস্থিত ছিল।

এ দিন কল্যাণী শিল্পাঞ্চল স্টেশন-সংলগ্ন এলাকার কেন্দ্রীয় বাহিনী বুথের বাইরের দোকান বন্ধ করে দেয়। বিকেলে কল্যাণী শহীদপল্লীতে জওয়ানেরা মোড়ে-মোড়ে বিনা কারণে জমায়েত হওয়া লোকজনকে হঠিয়ে দেন। পান-বিড়ির একটি দোকান বন্ধ করেন। দুপুরে গয়েশপুরের চার নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কর্মীদের নিজেদের মধ্যে গোলমাল বাঁধলে আধাসেনা লাঠি চালিয়ে তাঁদের হঠিয়ে দেয়।

গয়েশপুর রবীন্দ্রপল্লি ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বহু মানুষ ভোট দিতে পারেন বাহিনীর হস্তক্ষেপে। সেখানে জওয়ানেরা তবে কাঁটাগঞ্জের একটি বুথে শাসকদলের লোকজন ঝামেলা করছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। সেখানে অভিযোগ উঠেছে যে, উপস্থিত বাহিনী তেমন সক্রিয় হয়নি। গয়েশপুরে বহু মানুষ অবশ্য জানাচ্ছেন, ভোটের আগে জওয়ানেরা এলাকা টহল দিয়ে আশ্বস্ত করলে পরিস্থিতি আরও ভাল হত। তবে, বাহিনীর বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল পরিচালিত গয়েশপুর পুরসভার প্রধান মরণকুমার দে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Election 2019 Phase 5 CRPF
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE