মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রক্ষা কবচকে তোপ বিরোধীদের। — ফাইল চিত্র।
আগামী ১১ জানুয়ারি থেকে জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার ২,২২৩টি বুথে ১১,১১৫ জন ‘দিদির দূত’ অভিযান শুরু করবেন। আজ, সোমবার তাঁদের প্রশিক্ষণ শেষ হচ্ছে। রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, আবাস যোজনায় দলের তৃণমূল স্তরের নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় কিছুটা ‘বেকায়দায়’ রাজ্যের শাসক দল। পঞ্চায়েত ভোটে যাতে এর প্রভাব না পড়ে, মূলত তার জন্যেই ‘দিদির সুরক্ষা কবচে’র মোড়কে তৃণমূলের এই কর্মসূচি। সেই কর্মসূচি শুরুর আগেই এ নিয়ে ‘দিদির দূত’দের কিছু নির্দেশ দিয়েছেন দলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্ব। গ্রামে গ্রামে দলীয় সমর্থকদের পাশাপাশি বিরোধীদের বাড়িতেও যাওয়ার জন্যে তাঁদের পরামর্শদেওয়া হয়েছে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, ‘দিদির দূত’দের এই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তাঁরা যেন বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের বাড়িতেও যান। দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, তাঁদের অভাব-অভিযোগের কথাও শুনতে হবে। তাঁদের সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতেও সবরকম সাহায্য করতে হবে।
দলের ১১ হাজারেরও বেশি ‘দিদির দূত’কে শনিবার এই নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের জঙ্গিপুরের সাংগঠনিক জেলার নেতারা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ১১ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। এ নিয়ে প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে বিধায়ক বা ব্লক সভাপতিদের সাংবাদিক বৈঠক করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলায় ২,২২৩টি বুথ রয়েছে। প্রতিটি বুথের জন্যে পাঁচ জন করে ‘দূত’ বাছাই করা হয়েছে। তাঁদেরই হাতেকলমে প্রশিক্ষণ চলছে। তৃণমূলের জঙ্গিপুরের চেয়ারম্যান কানাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “প্রতিটি বিধানসভায় যত গ্রাম এবং সেই গ্রামে যতগুলি পরিবার রয়েছে, সকলের বাড়িতে পৌঁছতে হবে দূতদের। এমনকি, আমাদের সরকার বা আমাদের নেত্রীর প্রতি যাঁরা বিরূপ ধারণা পোষণ করেন, তাঁদের কাছেও জানতে হবে, সরকারের প্রতি তাঁদের ক্ষোভের কারণ। বিরোধীর ক্ষোভের কথা শুনুন। পরিষেবা পেতে কোথায় সমস্যা হচ্ছে? কী সাহায্য চান তাঁরা। সরকার তাঁদের সবরকম সাহায্য করতে চায়।” কানাই আরও বলেন, “সবটাই করতে হবে বিনয়ের সঙ্গে। তাঁরা দু’টো কথা শোনালে শুনতে হবে। দূতরা নিজেরা সংযত থাকবেন। আমাদের ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে। ধরিয়ে দিন, শুধরে নেব। কিন্তু পাশে থাকুন। ২০২৩ সালে নতুন তৃণমূল উঠে আসবে এই ভরসা দিতে হবে গ্রামের প্রতিটি পরিবারকে।”
তাঁর আরও দাবি, ‘‘যাঁরা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায়, তাঁদের কৃতকর্মের কথা মানুষকে বলতে হবে। আমাদের যা কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে, তার জন্যে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে মানুষের কাছে। সরকারের সাফল্যের কথাও আমাদের দূতেরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে বলবেন।’’
তিনি জানান, প্রতিটি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা চিঠি, একটি সুরক্ষা কবচের ক্যালেন্ডার। এই কর্মসূচিতে সারা দিন গ্রামেই কাটাতে হবে ‘দিদির দূত’দের। তাঁদের সঙ্গে থাকবেন দলের ব্লক, জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব এবং বিধায়কেরাও। গ্রামের ধর্মস্থান, ক্লাব, আইসিডিএস কেন্দ্র, স্কুল পরিদর্শন করবেন তাঁরা। সেখানেই কোনও কর্মীর বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া সেরে কর্মী-বৈঠক করবেন। এ ছাড়া, প্রতিটি গ্রামে ছ’জন অরাজনৈতিক ব্যক্তির বাড়িতেও যাবেন দূতরা। ৪৫ দিন ধরে চলবে এই কর্মসূচি চলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy