Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Bond Paper

মুচলেকা দিয়ে ফের বিয়ে নাবালিকাদের

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তেহট্ট মহকুমা এলাকার নাজিরপুর, বিনোদনগর, প্রতাপনগর, করিমপুর, বেতাই এমনকি তেহট্ট এলাকাতেও নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করতে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, প্রশাসনকে।

—প্রতীকী ছবি

—প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
তেহট্ট শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:২৯
Share: Save:

বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তথা প্রশাসনের সহযোগিতায় একাধিক নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করা হয়। অভিভাবকদের থেকে নেওয়া হয় মুচলেখা। কিন্তু তার পর ওই বিষয়ে প্রশাসনের আর কোনও নজরদারি থাকে না বলে অভিযোগ। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুচলেখা দেওয়ার পরেও ফের বিয়ে হয়ে যায় ওই সমস্ত নাবালিকার।

এই ধরনের প্রচুর অভিযোগ রয়েছে তেহট্ট মহকুমা এলাকায়। শুধু তাই নয়, বিয়ে হয়ে যাবার পরে ওই সকল নাবালিকার বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে, এমন নিদর্শনও রয়েছে এলাকায় বলে অভিযোগ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তেহট্ট মহকুমা এলাকার নাজিরপুর, বিনোদনগর, প্রতাপনগর, করিমপুর, বেতাই এমনকি তেহট্ট এলাকাতেও নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করতে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, প্রশাসনকে। কিন্তু সমস্যা হল, নাবালিকার পরিবার নানা অজুহাতে সাময়িক ভাবে বিয়ে বন্ধ করে মাত্র। আবার, অনেক ক্ষেত্রে বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখে দেয়।

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে অভিযোগ, মুচলেখা দেওয়ার পরেও দেখা যাচ্ছে নাবালিকার ফের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওই সব নাবালিকার অভিভাবকেরা অজুহাত দেন, তাদের নাবালিকা মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষে বেতাই দাসপাড়া নবম শ্রেণিতে পাঠরত এক নাবালিকার বিয়ে হয় বেতাই তেলপাম্পের এক পাত্রের সঙ্গে। ওই নাবালিকার বাবা সঞ্জয় দাস বলেন, ‘মেয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। বিয়ের বিষয়টি প্রথমে আমাদের জানা ছিল না।’’

এই ঘটনায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা জানাচ্ছেন, দাসপাড়ার ওই নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করতে যাওয়া হয়েছিল প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়েই। কিন্তু গোটা বিষয়টি গোপন করে পরিবারের সদস্যরা। পরে জানা যায়, ওই দিন রাতেই মেয়েটির বিয়ে হয়। গত বুধবার বেতাই ছানাতলা এলাকায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পাঠরত এক নাবালিকার বিয়ে দেয় তার বাবা-মা। বাবা সাগর রায় বলছেন, ‘‘আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করি। বাড়িতে চারটে মেয়ে। আর্থিক টানাপড়েন মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতে হয়েছে।’’

নাজিরপুর মা সারদার স্বয়ংসিদ্ধা কমিটির সভাপতি প্রদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘আমাদের সংগঠন ২৩টি নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করে। যার মধ্যে মুচলেখা দেওয়া সত্ত্বেও ১০ জনের বিয়ে হয়ে যায় গোপনে। তাদের মধ্যে আবার তিন জনের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।’’তাঁর দাবি, প্রশাসনের অবশ্যই এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত। সঙ্গে নিয়মিত নজরদারিও জরুরি।

এই বিষয়ে তেহট্ট মহকুমা শাসক মৌমিতা সাহা বলেন, ‘‘নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করার পাশাপাশি সচেতনতা এবং ওই নাবালিকার পুনর্বাসনের বিষয়টি নিয়েও ব্যবস্থা নিতে হবে।’’

জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আরও নজরদারি চালানো হবে। প্রত্যেককেই সচেতন থাকার কথা বলা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bond Paper Minors Girl marriage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE