Advertisement
০৫ মে ২০২৪
New Education Policy

নয়া নীতি যুগোপযোগী কতটা, মিশ্র প্রতিক্রিয়া 

এই প্রসঙ্গে এবিটিএ-এর নদিয়া জেলা সম্পাদক সৌমেন পাল বলেন, “এই শিক্ষানীতি আগেই প্রস্তাব আকারে পেশ করেছিল রাজ্য সরকার।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 
শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:৩৬
Share: Save:

প্রকাশিত হল রাজ্য শিক্ষানীতি। শনিবার প্রকাশিত ১৭৮ পৃষ্ঠার এক বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্যের নতুন শিক্ষানীতি বিস্তারিত ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সদ্য প্রকাশিত ওই শিক্ষানীতি কতটা যুগোপযোগী তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গিয়েছে শিক্ষক মহলে।

শিক্ষানীতি প্রসঙ্গে শিক্ষকদের একাংশের অভিমত, বর্তমানে বিদ্যালয় শিক্ষা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে গিয়ে চলেছে। কোভিড কালে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল বিদ্যালয়। তার মারাত্মক প্রভাব পড়েছে পড়ুয়াদের উপর। অনেক পড়ুয়ার লেখাপড়া ভুলেছে। অনেকের জ্ঞানের বিকাশ আশানরূপ হয়নি।

সেখানে নতুন শিক্ষানীতি কতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারবে তা সময় বলবে বলে জানাচ্ছেন শিক্ষকদের একাংশ। তাঁরা এও জানাচ্ছেন, অনেক কিছুই এখনও স্পষ্ট নয়। যেমন, সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা পদ্ধতির বদল হচ্ছে— এটা বলা হলেও তা কেমন হবে, স্পষ্ট নয়।

নদিয়ার গ্রামীণ অঞ্চল দেপাড়া-বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অজিত ভট্টাচার্য বলেন, “সিমেস্টার পদ্ধতি কেন আনতে হল তাও আবার অষ্টম শ্রেণি থেকে, তা বোঝা গেল না। বিদ্যালয়ের সার্বিক পরিকাঠামো উন্নতির যে প্রস্তাব শিক্ষানীতিতে দেওয়া হয়েছে তা কতটা বাস্তবায়িত হবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শিক্ষকদের পদোন্নতির বিষয়ে যে কমিটি তৈরি হবে সেখানে স্বচ্ছতা কতটা থাকবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মীদের বিষয়ে কোনও কথা বলা হয়নি। শিক্ষা বহির্ভূত যে সকল কাজে শিক্ষকদের নিযুক্ত থাকতে হয়, সেখান থেকে অব্যাহতিরও কোনও কথা উল্লেখ নেই।”

এই প্রসঙ্গে এবিটিএ-এর নদিয়া জেলা সম্পাদক সৌমেন পাল বলেন, “এই শিক্ষানীতি আগেই প্রস্তাব আকারে পেশ করেছিল রাজ্য সরকার। আমরা তখন থেকেই বলে আসছি, পিপিপি মডেলে স্কুল শিক্ষাকে বিক্রি করার চক্রান্ত করেছে রাজ্য সরকার। এই শিক্ষানীতি প্রকাশ হল সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিকে একধাপ এগিয়ে যাওয়া।” এবিটিপিটি-এর নদিয়া জেলা সম্পাদক অর্চনা বিশ্বাস বলেন, “আমরা আগেও বলেছি রাজ্য সরকার শিক্ষাকে বেসরকারি হাতে বিক্রি করে দিতে চায়। নতুন শিক্ষা নীতিতে বেসরকারিকরণের প্রথম পেরেক পোঁতা হল।”

বিজেপি শিক্ষা সেলের নদিয়া উত্তরের আহ্বায়ক অমিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের শিক্ষানীতি আসলে কাঁঠালের আমসত্ত্ব। সময়ের চাহিদাকে মাথায় রেখে জাতীয় শিক্ষানীতি গড়া হয়েছে। যাতে পরিবর্তিত এই সময়ের পড়ুয়াদের সুযোগ-সুবিধাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের আবার পৃথক শিক্ষানীতি কেন? শিক্ষা যুগ্মতালিকাভুক্ত। যেখানে মতবিরোধ হলে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।”

অন্য দিকে, নদিয়া জেলা তৃণমূল শিক্ষক সমিতির সভাপতি রমেন ঘোষ বলেন, “এই প্রথম রাজ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ শিক্ষানীতি প্রকাশিত হল। এত দিন যা ছিল না। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে একটি অত্যাধুনিক এবং বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষা নীতি রাজ্য সরকার গ্রহণ করেছে।’’

তাঁর আরও দাবি, ‘‘এই শিক্ষানীতিতে যেমন গ্রামীণ শিক্ষা ব্যবস্থার উপর সবথেকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তেমনই এই সময়ের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি সময়োপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nadia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE