Advertisement
১১ মে ২০২৪
নোটঙ্কি •নোটঙ্কি •নোটঙ্কি •নোটঙ্কি

ব্যাঙ্কেও নগদ অমিল, রাস্তা রুখল জনতা

প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী আর দিন দশেক কাটলেই টাকার সমস্যা মিটে যাওয়ার কথা। অথচ, নোট বাতিলের চল্লিশ দিন পরেও ব্যাঙ্ক বলছে, টাকা নেই।

জঙ্গিপুরে এসবিআইয়ের সামনে বিক্ষোভ গ্রাহকদের। নিজস্ব চিত্র ।

জঙ্গিপুরে এসবিআইয়ের সামনে বিক্ষোভ গ্রাহকদের। নিজস্ব চিত্র ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:৫৮
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী আর দিন দশেক কাটলেই টাকার সমস্যা মিটে যাওয়ার কথা। অথচ, নোট বাতিলের চল্লিশ দিন পরেও ব্যাঙ্ক বলছে, টাকা নেই।

মঙ্গলবার ব্যাঙ্ক খোলার কিছুক্ষণ পরেই টাকা ফুরিয়েছিল স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার সম্মতিনগর শাখায়। বুধবার ভোর ৪টে থেকে ফের লাইন দিয়েছিলেন গ্রাহকেরা। কিন্তু বেলা ৯টা নাগাদ এক কর্মী এসে জানান, এ দিনও টাকা আসেনি।

এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রাহকেরা। ব্যাঙ্ক ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো শুরু হয়। গোলমালের ভয়ে ম্যানেজারকে ঘরে ঢুকিয়ে গেটে তালা ঝোলান নিরাপত্তারক্ষীরা। কয়েকশো গ্রাহক জঙ্গিপুর-লালগোলা সড়ক অবরোধ করেন। বিকেল পর্যন্ত সেই বিক্ষোভ চলেছে। গ্রাহকদের ক্ষোভ, গত চার দিন ধরে ব্যাঙ্কের এটিএমেও টাকা নেই। ব্যাঙ্ক ম্যানেজার শুভেন্দু বিশ্বাস বলেন, “টাকা না এলে দেব কোথা থেকে? ঘেরাও করে রাখলেও আমার কিছু করার নেই।”

নদিয়ায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ না হলেও টাকা পেতে সমস্যা হয়েছে বহু জায়গাতেই। বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের রিজিওনাল ম্যানেজার সুব্রত পাল বলেন, “পর্যাপ্ত টাকার জোগান না থাকাতেই বারবার এই সমস্যা হচ্ছে। বহু কষ্টে সব শাখা চালু রেখেছি।” জেলার লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার সুগত লাহিড়িও বলেন, “চাহিদা মাফিক টাকা না আসাতেই সমস্যা হচ্ছে।’’

এ দিন সম্মতিনগরের ব্যাঙ্কে গিয়ে যাঁরা টাকা পাননি তাঁদের এক জন ইছাখালির শেখ মোর্তুজা। ভোর ৫টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। তাঁর আক্ষেপ, “ভাইঝির বিয়েতে ১০ হাজার টাকা দরকার। মঙ্গলবার ফিরে গিয়েছি। এ দিনও টাকা আসেনি। কার মেজাজ ঠিক থাকে?” চকপাড়ার বৃদ্ধা নুরনেহার বিবি এসেছিলেন তাঁর ছেলে, রাজমিস্ত্রির ঠিকাদার আনারুল শেখের হয়ে টাকা তুলতে। তিনি ক্ষুব্ধ, “১৫ জন মজুরের পরিবার টাকার জন্য হাপিত্যেশ করে বসে আছে। ২০ হাজার টাকা চাই। অথচ ব্যাঙ্ক বলছে, টাকা দেবে না। তামাশা পেয়েছে ?”

বাহুরার আরজেনা বিবি পরপর দু’দিন এসেছেন মায়ের অস্ত্রো‌পচারের জন্য ১০ হাজার টাকা তুলতে। তিনি বলেন, “রবিবার অপারেশন। সমস্ত প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে ম্যানেজারের থেকে অনুমতি নিয়েছি। কিন্তু টাকাই তো নেই।” খোদারামপুরের রাজমিস্ত্রি সামিরুল শেখ মজুরি বাবদ ৫০০০ টাকার চেক পেয়েছি। কিন্তু ভাঙাতে পারছেন না। হুদরাপুর গ্রামের সুরজ শেখ বলেন, “তিন হাজার টাকার জন্য তিন দিন ধরে ঘুরছি। বাড়িতে চারটে পেট, কুড়িটা টাকাও নেই। পাগলের মতো অবস্থা!”

সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের রিজিওন্যাল ম্যানেজার এস এন নবি বলেন, “কিছু সমস্যার জঙ্গিপুর থেকে সম্মতিনগরে টাকা পাঠানো যায়নি। বুধবার রাতের মধ্যেই তা পাঠানো হচ্ছে, যাতে বৃহস্পতিবার টাকা দেওয়া যায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cash Road Blockade Bank
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE