Advertisement
E-Paper

সামনে তিন, পিছনে চার, ভিড়ে ঠাসা অটো

পিছনে চার, সামনে তিন। তথ্য হিসেবে নিতান্তই দুর্বোধ্য। কিন্তু এবার যদি বলা হয়, হিসেবটা অটোর যাত্রী সংখ্যার। তা হলে তথ্যটা আর ততটা দুর্বোধ্য না ঠেকলেও হিসেবটা যে গোলমেলে ঠেকবে সে কথা বলাই বাহুল্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৬ ০০:০০

পিছনে চার, সামনে তিন। তথ্য হিসেবে নিতান্তই দুর্বোধ্য।

কিন্তু এবার যদি বলা হয়, হিসেবটা অটোর যাত্রী সংখ্যার। তা হলে তথ্যটা আর ততটা দুর্বোধ্য না ঠেকলেও হিসেবটা যে গোলমেলে ঠেকবে সে কথা বলাই বাহুল্য।

অটোর সামনে চালকের বাঁ দিকে দু'জন, আর ডান দিকে এক জন যাত্রী শহরতলীর খুব চেনা দৃশ্য। কিন্তু, তা বলে পিছনের আসনে চার জন যাত্রী!

এটা কল্যাণী। এটা এখানেই সম্ভব। এ কথা বলছেন, অটোর ভুক্তভোগী যাত্রীরা।

যাত্রী বসানোর জন্য কল্যাণীর অটো চালকদের নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে। অসুবিধা হলেও যাত্রীদের তা মেনে চলতেই হবে। তার ফলে শহরে লাগাতার দুর্ঘটনা ঘটছিল। খাতায় কলমে সেটা হয়তো খুব বড় নয়। কিন্তু কখনও সাইকেলে অটোর ধাক্কা, তো কখনও রিক্সায়— এটা রোজদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনই অভিযোগ যাত্রীদের।

এবার সেই চেনা ছবিতে বদল আনতে উদ্যোগী হল পুলিশ। অটো এবং ম্যাজিক গাড়ি-সহ অন্যান্য যানবাহনের দৌরাত্ম নিয়ন্ত্রণে অভিযান শুরু করেছে তারা। পুলিশ জানিয়েছে, এখন থেকে এই অভিযান নিয়মিত চলবে।

কল্যাণীর এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্য জানান, তাঁদের কাছে অটোচালকদের দৌরাত্ম নিয়ে মাঝে মধ্যেই অভিযোগ আসছিল। ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছিল প্রায় রোজই। সেই জন্যই পুলিশ এই অভিযান শুরু করেছে। এখন থেকে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এই অভিযান চালানো হবে।

কৌস্তভদীপ্তবাবু জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগেই পুলিশের পক্ষ থেকে অটো চালকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, পিছনের আসনে তিন জনের বেশি যাত্রী তোলা যাবে না। সামনে চালকের ডানদিকে কোনও যাত্রী বসানো যাবে না।

সেই নিয়ম মানা হচ্ছে কিনা, তা দেখার জন্যই শনিবার বিকেলে পুলিশ কল্যাণীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে নজরদারি চালায়। অতিরিক্ত যাত্রী তোলার জন্য কয়েকটি অটো চালককে এদিন ‘কেস’ও দেওয়া হয়েছে। এসডিপিও বলেন, ‘‘অটো চালকদের বলে দেওয়া হয়েছে, তারা যেন সামনের ডালদিকের আসন খুলে দেয়। তা না হলে পুলিশ সেগুলি খুলে ফেলবে। তার খরচ আদায় করা হবে চালকদের কাছ থেকেই।

কল্যাণীর অটোতে নিয়মিত যাতায়াত করা যাত্রীদের অভিজ্ঞতা ভয়াবহ। তেমনই এক মহিলা যাত্রী সুছন্দা সরকার। বারাকপুরের বাসিন্দা সুছন্দাদেবী গয়েশপুরের একটি সরকারি অফিসে চাকরি করেন। কল্যাণী স্টেশন থেকে অটোতে করেই রোজ যাতায়াত করতে হয় তাঁকে।

তিনি জানিয়েছেন, পিছনের আসনে বসাটা ভয়াবহ হয়ে দাঁড়ায়। পিছনে যতক্ষণ চারজন যাত্রী না হয়, ততক্ষণ অটো ছাড়ে না চালক। কিন্তু, তিন জনের আসনে চার জন বসেন কী করে? সুছন্দাদেবী জানালেন, একজন যাত্রী সামনে এগিয়ে বসেন, তাঁর পরের জন একটু পিছিয়ে। এইভাবে চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে বসতে হয়।

কল্যাণী স্টেশন থেকে ঘোষপাড়া, জেএনএম হাসপাতাল, সেন্ট্রাল পার্ক, কাঁঠালতলা, হাউজিং-সহ বিভিন্ন রুটের অটো ছাড়ে। এখানে সামনে পিছনে তিন জন করে যাত্রী থাকলেও, ব্যস্ত সময়ে সাত জন যাত্রী তোলা হয়। আবার উল্টো দিক থেকে কল্যাণী স্টেশনে আসার সময় বেশিরভাগ অটোতেই সাত জন যাত্রী থাকে। আর কল্যাণী স্টেশন থেকে গয়েশপুরের সব অটোতে সাত জন যাত্রী বসানোটাই দস্তুর।

কৌস্তভদীপ্তবাবু জানিয়েছেন, বার বার সাবধান করার পরেও যে সব অটো চালক ছ’জন বা তার বেশি যাত্রী অটোতে তুলবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কল্যাণীর বাসিন্দারা বলছেন, শনিবার বা ছুটির দিনে ধরপাকড় না করে কাজের দিনে পুলিশ অভিযানে নামলে ফল হবে।

পুলিশ এখন কী করে সেটাই দেখার।

auto rickshaw populated
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy