Advertisement
১১ মে ২০২৪
paddy farmers

বিক্রি বন্ধ, ধান চাষিরা উদ্বিগ্ন

ধান বিক্রি করতে না পেরে তিনি সম্প্রতি জেলা খাদ্য নিয়ামক থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন।

রোয়া হচ্ছে ধানের চারা। নিজস্ব চিত্র।

রোয়া হচ্ছে ধানের চারা। নিজস্ব চিত্র।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৫২
Share: Save:

রাজ্যের কৃষকদের উৎপাদিত সব ধান কিনবে রাজ্য— বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের পিঠোপিঠি জনসভা থেকে এমনই কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই মুর্শিদাবাদ থেকেই সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে না পারার অভিযোগ তুললেন কৃষকরা। এ বিষয়ে বেলডাঙা ২ ব্লকের রামনগর বাছড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একদল কৃষক জেলা খাদ্য নিয়ামক থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও তার কোনও সুরাহা হয়নি।

বেলডাঙা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জুলেখা খাতুন বলেন, ‘‘খাদ্য দফতর ধান কেনা বন্ধ রেখেছে। যার জেরে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমরা ধান কেনার জন্য খাদ্য দফতরকে বলেছি।’’
তবে মুর্শিদাবাদের জেলা খাদ্য আধিকারিক রাজু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। তাঁদের ধান কেনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। শিবির করে সেখানকার চাষিদের ধান কেনা হবে।’’
জেলা খাদ্য দফতর সূত্রের খবর,

এ বছর মুর্শিদাবাদ জেলায় ৩ লক্ষ ৯০ হাজার মেট্রিকটন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। গত সপ্তাহের হিসেব, ইতিমধ্যে ৩ লক্ষ ৬ হাজার মেট্রিকটন ধান কেনা হয়েছে। সূত্রের খবর কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্রে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লক্ষ ৩০ হাজার মেট্রিকটন। সেখানে তাঁরা ধান কিনেছে ১ লক্ষ ২৩ হাজার মেট্রিকটন। ফলে লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি তলে আসায় কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্রে ধান কেনার গতি কমিয়ে দিয়েছে। তবে জেলা খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্র লক্ষ্যমাত্রার কাছে পৌঁছলেও ধান কেনার সঙ্গে যুক্ত এজেন্সিগুলি এখনও লক্ষ্যমাত্রার কাছে পৌঁছতে পারেনি। তাদের দিয়ে শিবির করে ধান কেনা হবে।

বাছড়ার কৃষক সুকুমার মণ্ডলের দু’বিঘা জমিতে ধান চাষ করেন। তাঁর ১৪ কুইন্ট্যাল ধান বিক্রি করার মতো রয়েছে। সরকারি নিয়ম মেনে ধান বিক্রি করার জন্য তিনি শক্তিপুর সুকান্ত ফুটবল মাঠে থাকা কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্রে আবেদন করেন। তার পরেও তাঁর ধান না কেনায় তিনি জানুয়ারি মাসে বেলডাঙা-২ ব্লকের বিডিও এবং বেলডাঙা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কাছে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করার জন্য আবেদন জানান। তার পরেও ধান বিক্রি করতে না পেরে তিনি সম্প্রতি জেলা খাদ্য নিয়ামক থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন।

সম্প্রতি সুকুমার বলেন, ‘‘খোলা বাজারেও ধান কেনার কেউ নেই। আবার সহায়ক মূল্যে সরকার এখনও আমার ধান নেয়নি। যার ফলে চরম সমস্যায় পড়ে ব্লক থেকে জেলায় দরবার করেও লাভ কিছুই হয়নি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সমস্ত ধরনের নিয়ম মেনে আমি ধান বিক্রির জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু আমার পরে আবেদন করেছেন এমন অনেকে ধান বিক্রি করতে পেরেছেন। অথচ আমার ধান বাড়িতে পড়ে রয়েছে।’’

ওই গ্রামের অশোক মণ্ডল, তাঁর ছেলে সুফল মণ্ডলও আবেদন করে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারেননি। শুক্রবার সুফল জানিয়েছেন, ‘‘যাঁদের ধান চাষ নেই তাঁরাও ধান বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন। অথচ আমাদের মতো প্রান্তিক চাষিরা ধান বিক্রির সুযোগ পাচ্ছি না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ব্লকস্তরে আবেদন জানিয়েও কাজ না হওয়ায় জেলাস্তরে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানিয়েছি। কিন্তু এখনও ধান বিক্রি করতে পারিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

paddy farmers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE