Advertisement
E-Paper

পার্থেনিয়ামের আড়ালে হাঁপাচ্ছে হাসপাতাল

রং পড়েনি বেশ কয়ক বছর। কার্নিশে বট-পিপুলের ঘরবসত। আর বাড়িটাকে ঘিরে রেখেছে, কোথাও হাঁটু কোথাও বুক ছোয়া সাদা-বেগুনি ফুলের ঝা়ড়, পার্থেনিয়াম। হাত কয়েকের মধ্যে শিশু কিংবা বৃদ্ধেরা এলে শ্বাসকষ্ট অবশ্যম্ভাবী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৬ ০২:০৭
হাসপাতাল চত্বরে আগাছার জঙ্গল। —নিজস্ব চিত্র

হাসপাতাল চত্বরে আগাছার জঙ্গল। —নিজস্ব চিত্র

রং পড়েনি বেশ কয়ক বছর। কার্নিশে বট-পিপুলের ঘরবসত। আর বাড়িটাকে ঘিরে রেখেছে, কোথাও হাঁটু কোথাও বুক ছোয়া সাদা-বেগুনি ফুলের ঝা়ড়, পার্থেনিয়াম।

হাত কয়েকের মধ্যে শিশু কিংবা বৃদ্ধেরা এলে শ্বাসকষ্ট অবশ্যম্ভাবী। আর হাঁপানি থাকলে তো কথাই নেই। কান্দি হাসপাতাল ঘিরে এমনই রোগের বাগান সাজিয়ে রেখেছে পার্থেনিয়ামের কেয়ারি। হাসপাতালে আসা রোগীর বাড়ির লোকও তাই অনেক সময় শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় হাজির হয়ে যাচ্ছেন আউটডোরের চিকিৎসকের কাছে। তা নিয়ে অবশ্য কোনও হেলদোল নেই স্বাস্থ্য দফতরের। হাসপাতালের সুপার তথা কান্দি মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক মহেন্দ্র মাণ্ডি অবশ্য আশ্বাস দিচ্ছেন, “বর্হিবিভাগের সামনে আগাছা জমেছে। ওই আগাছা, বিশেষ করে পার্থেনিয়াম গাছগুলি দ্রুত পরিষ্কার করব। কারণ, ওই পার্থেনিয়াম গাছের সংস্পর্শে বেশিদিন থাকলে শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ হয়।’’

শুধু কী পার্থেনিয়াম, আরও হরেক প্রজাতির আগাছায় ছেয়ে রয়েছে হাসপাতাল চত্বর। ঘন জঙ্গলে রয়েছে সাপ-খোপেরও ভয়। দিন কয়েক আগে নিকটাত্মীয়ের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের বর্হিবিভাগে আসেন সাবিনা বিবি। বর্হিবিভাগের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। আচমকা পাশ দিয়ে চলে গেল ফুট তিনেক লম্বা একটা সাপ। সাবিনা বিবি-সহ হাজির অন্যান্যরা ওই সাপ দেখে ক্ষণকালের জন্য ভয়ে সিঁটিয়ে যান। চিৎকার করে ওঠেন, ‘কত বড় সাপ। বাপরে...।’ এটা কোনও বিচ্ছিন্ন দিনের ঘটনা নয়। কান্দি মহকুমা হাসপাতালের বহিঃবিভাগের সামনে এমনটা প্রায়ই ঘটে। হাসপাতালে চত্বরে গজিয়ে ওঠা ঘন জঙ্গল যেন সাপ-খোপের বসবাসের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালের রোগীদের অভিযোগ, আগাছায় ছয়লাপ হয়ে রয়েছে হাসপাতাল চত্বর। তাও আবার যেমন তেমন আগাছা নয়, একেবারে ঘন পার্থেনিয়ামের জঙ্গল। পার্থেনিয়াম মানব শরীরের পক্ষে হানিকারক।

হাসপাতালের সামনে-পিছনের ঘন জঙ্গল যে কতদিন পরিষ্কার হয়নি তা মাথা চুলকেও মনে করতে পারছেন না হাসপাতালের কর্মীরা। এমই দশা মহকুমা হাসপাতালের। হাসপাতালের বর্হিবিভাগে নিয়মিত প্রায় সাড়ে ছ’শোর বেশি রোগী আসেন। সিংহভাগ রোগীই আসেন মহকুমা শহর সংলগ্ন গ্রাম্য এলাকা থেকে। কিন্তু এখানে রোগ ভাল করতে এসে রোগীরা সাপ-খোপের ছোবলের আশঙ্কায় সিঁটিয়ে থাকেন। এই বুঝি ফণা তুলে সাপ তেড়ে এল।

আগাছার ডগায় কাস্তের কোপ না পড়ায় জঙ্গল বিনা বাঁধায় তরতরিয়ে বেড়ে উঠছে। প্রায় সাত ফুট উচ্চতার ওই জঙ্গল দেখেই অনেকে আঁতকে ওঠেন। এলাকায় বাসিন্দা দেবেশ দাস বলেন, “হাসপাতালে পা বাড়ানোর উপায় নেই। জঙ্গল থেকে মাঝে মধ্যেই বেড়িয়ে আসে পোকা-মাকড়। কখনও আবার সাপের দেখা মিলছে। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা সব কিছু দেখেও কেন হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন তা বুঝতে পারছিন না।’’ আর সাবিনা বিবি সাপ দেখার স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, “এমন ভাবে সাপটা ফণা তুলেছিল, দেখেই মনে হয় সাপটি নির্ঘাত বিষধর ছিল।’’

একই ভাবে হাসপাতালের নর্দমা থেকে অর্ন্তবিভাগের বাইরেও আগাছা জমেছে। আর ওই আগাছার মধ্যেই আবর্জনা ফেলার জায়গা খুঁজে নিয়েছেন রোগীর বাড়ির লোকজন। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কাছে এলাকার লোকজন একাধিক বার জঙ্গল সাফের আর্জি জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ তাঁদের কথায় কান দেন না।

Hospital Kandi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy