Advertisement
E-Paper

দমকল নয়, ত্রাতা পাম্প

শীত ফুরিয়ে আসছে, প্রাক-ফাগুনে ছুটতে শুরু করেছে শুকনো হাওয়া, সেই হাওয়ায় গ্রাম-শহরের আনাচ কানাচ থেকে আসছে আগুন লাগার খবর, অথচ জেলার অধিকাংশ জায়গাতেই নেই দমকলকেন্দ্র, তারই খোঁজ নিল আনন্দবাজার একই ভাবে কান্দি ব্লকের হিজল অঞ্চলের নতুনগ্রামে গোয়াল ঘরের সাঁজাল থেকে আগুন ধরে ৮টি গরু, ছ’টি ছাগল ও চারটি ভেড়া আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছিল। ওই অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গিয়েছিল বাড়ির যাবতীয় সমগ্রী।

কৌশিক সাহা

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৫১

সম্প্রতি কান্দি শহরের জেমো বাজারে একটি মুদির দোকানে আগুন লেগে পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে। প্রায় লক্ষাধিক টাকা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন ওই মুদি ব্যবসায়ী। তাঁর অভিযোগ, ঢিল ছোড়া দূরত্বে দমকল দফতরের কেন্দ্র রয়েছে। তা সত্ত্বেও দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছতে দেরি করে। অন্য দিকে, দমকল দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘‘কী করব বলুন তো! প্রাচীন শহর কান্দির রাস্তা এত সঙ্কীর্ণ যে যানজট লেগেই থাকে। তাই সময়ের মধ্যে পৌঁছনো যায়নি।

একই ভাবে কান্দি ব্লকের হিজল অঞ্চলের নতুনগ্রামে গোয়াল ঘরের সাঁজাল থেকে আগুন ধরে ৮টি গরু, ছ’টি ছাগল ও চারটি ভেড়া আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছিল। ওই অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গিয়েছিল বাড়ির যাবতীয় সমগ্রী। এমনকি মাটির বাড়িও পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। যদিও হিজল থেকে কান্দির দূরত্ব সাকুল্যে ৮ কিলোমিটার। কিন্তু ওই রাতে খবর দেওয়া হলেও দমকলের ইঞ্জিন যখন এসে পৌঁছয়, তত ক্ষণে যা বিপত্তি হওয়ার হয়ে গিয়েছে।

তবে বড়ঞা ব্লকের বাউগ্রামে মাঝরাতে আগুন লেগে তিনটি গরু, চারটি ছাগল ও মাটির বাড়িটি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। বাড়ির কর্তা ইদ্রিশ শেখ বলেন, “দমকলের ইঞ্জিনের উপরে ভরসা না করে গ্রামের মানুষ জল ঢেলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। গ্রামবাসীদের চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে না এলে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আরও কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে পারত।

কান্দি মহকুমার পাঁচটি ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় ঘিঞ্জি বাজার থেকে ঘনবসতি গড়ে উঠেছে। গ্রামের বসত বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা যেমন ঘটে, তেমনি ফাগুনের এলোমেলো হাওয়ায় খেতের ফসল থেকে খড়ের গাদায় আগুন লেগে থাকে। কিন্তু দমকলকেন্দ্র রয়েছে সাকুল্যে একটি। সালারের চন্দন কাজি যেমন বলছেন, ‘‘দেখুন কান্দি থেকে কাগ্রামের যা দূরত্ব, তাতে কাগ্রামে কোনও আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে দমকলের ইঞ্জিন এসে পৌঁছনোর আগেই সব পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া ছাড়াও কোনও উপায় থাকবে না।’’ ফলে সালারে একটি পৃথক দমকলকেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি উঠেছে। ভরতপুর ২নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আজাহারউদ্দিন সিজার বলেন, “আমাদের মনেই থাকে না যে কান্দি মহকুমায় একটি দমকলকেন্দ্র আছে। কান্দির বিভিন্ন ব্লকের গ্রামগুলিতে এখন অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলেই মানুষ ডিজেল চালিত সেচ পাম্পের সাহায্যে জল ঢেলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন।

অন্য দিকে, কান্দি শহরের মধ্যে জেমো বাজার থেকে তহবাজার, লিচুতলার বাজার অত্যন্ত ঘিঞ্জি এলাকায়। এখন সেখানে আগুন লাগলে সরু গলি রাস্তার ভেতর দিয়ে দমকলের ইঞ্জিন অনেক ক্ষেত্রে পৌঁছাতেই পারে না। সম্প্রতি বীরভূম সীমান্তবর্তী এলাকা খড়গ্রাম ব্লকের পারুলিয়া অঞ্চলের পাকা ধানের খেতে আগুন লেগে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিঘার পর বিঘা জমি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। দমকলের ইঞ্জিন কান্দি থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরের গ্রামে পৌঁছনোর আগেই সব শেষ হয়ে গিয়েছিল।

কান্দি দমকলকেন্দ্রের আধিকারিক বিষ্ণুপদ রায় বলেন, ‘‘সংকীর্ণ রাস্তা ও যানজটের কারণে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে অনেক সময়ে দেরি হয়ে যায়। এছাড়াও দূরত্ব একটা বড় কারণ। গোটা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

Fire Fire Brigade Water Pumps
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy