বাড়ির কর্তা হাইস্কুলের শিক্ষক। কর্ত্রী সরকারি হাসপাতালের নার্স। মেয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী।
তবু তাঁদের হাতেই চলে এসেছে ডিজিট্যাল রেশন কার্ড, যার দৌলতে বিপিএল তালিকায় থাকা অতি দুঃস্থ গ্রাহকদের জন্য বরাদ্দ দু’টাকা কিলো চাল তাঁরা চাইলেই পেতে পারেন।
গত শুক্রবার থেকে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন পঞ্চায়েত অফিস থেকে ওই রেশন কার্ড বিলি শুরু হতেই এমন বেশ কিছু তথ্য সামনে এসেছে। যেমন ভাকুড়ি-১ পঞ্চায়েত এলাকায় এমন শতাধিক পরিবারের সন্ধান মিলেছে যাদের আদৌ খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতাভুক্ত হওয়ার কথা নয় অথচ পিএইচএইচ (প্রায়োরিটি হাউস হোল্ড) ডিজিট্যাল রেশন কার্ড পেয়ে গিয়েছে। সামনের সপ্তাহ থেকেই ওই পরিবারের সদস্যেরা চাইলে ওই কার্ড দেখিয়ে দু’টাকা কিলো দরে চাল-গম তুলতে পারবেন। পঞ্চায়েতের প্রধান, কংগ্রেসের প্রদীপ সরকার জানান, তাঁর এলাকায় ৩০ হাজার গ্রাহকের মধ্যে অর্ধেকের ডিজিট্যাল রেশন কার্ড এসেছে। তার মধ্যেই শতাধিক এমন পরিবার রয়েছে।
ওই এলাকারই পাকুড়িয়ায় রাস্তার পাশে নীল-সাদা দোতলা বাড়ি মহালন্দি জিসি হাইস্কুলের শিক্ষক ষষ্ঠী হালদারের। বাড়ির চার সদস্যের মধ্যে তিন জন চাকুরে। ষষ্ঠীবাবুর স্ত্রী সবিতা সরকারি হাসপাতালের নার্স, মেয়ে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী। ষষ্ঠীবাবু বলেন, ‘‘রেশনের মাল আমরা নিই না। এক প্রতিবেশী কার্ড নিয়ে গিয়ে সমস্ত মাল তোলেন। শুধু কেরোসিন আমরা নিই।’’ তবে পিএইচএইচ কার্ড ফেরানোর সুযোগ থাকলে তিনি তা ফেরাতে চান।
কিছু পরিবার এসপিএইচএইচ (সুগার প্রায়োরিটি হাউস হোল্ড) ডিজিট্যাল রেশন কার্ড পেয়েছে। তারা দু’টাকা কিলো দরে চাল-গমের সঙ্গে চিনিও পাবে। কেন এমনটা হল? জেলা খাদ্য দফতর সূত্রের বক্তব্য, বছরখানেক আগে আর্থ-সামাজিক জনগণনার ফর্ম যাঁরা পূরণ করেছেন, তাঁদের কারও কারও নামে ডিজিট্যাল রেশন কার্ড এসেছে। কার্ড বিলির শেষ তারিখ আগামী ৩১ ডিসেম্বর। তার পরে খতিয়ে দেখা হবে কারা কারা কার্ড পেয়েছেন।
খাদ্য দফতরের জেলা আধিকারিক অরবিন্দ সরকার বলেন, ‘‘পরে ওই তালিকায় সংযোজন-বিয়োজন হবে। নতুন ফর্ম জমা দিয়ে ওই কার্ড জমা করার কথাও বলা হবে। তবে এখনও কোনও সরকারি নির্দেশ আসেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy