জ্বলছে প্লাস্টিক কারখানা। বুধবার চাকদহে।—নিজস্ব চিত্র
চোখে মুখে তখনও আতঙ্ক লেগে রয়েছে আনোয়ার হোসেন মণ্ডলের। চাকদহ ব্লকের রাউতাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর পাঁচপোতা এলাকার বাসিন্দা তিনি। প্লাস্টিকের কারখানা লাগোয়া একটি বাড়িতে থাকেন তিনি। বুধবার ভোরে তাঁর ঘুম ভাঙে লোকজনের আর্ত চিৎকারে। ধড়মড়িয়ে উঠে দেখেন, কারখানা থেকে গলগল করে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। লোকের ভিড়। আগুন লেগেছে কারখানায়।
দমকলের চারটি ইঞ্জিন এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। কমবেশি পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন আয়ত্বে আসে। তবে, ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। রানাঘাট দমকল কেন্দ্রের আধিকারিক তাপস সাহা বলেন, “কী করে আগুন লেগেছে, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ কারখানায় আগুন নেভানোর কোনও ব্যবস্থা আমাদের চোখে পড়েনি।” স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, গ্রামগঞ্জে যে কারখানাগুলি চলছে তাদের কোনও অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা রয়েছে কি না সে দিকে আদৌ কারও দৃষ্টি রয়েছে? সেখানে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের নিরাপত্তা কতটুকু?
দমকল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোর পাঁচটা নাগাদ কারখানা থেকে ধোঁয়া বের হতে থাকে। সেখানকার কর্মীরাই প্রথমে আগুন দেখতে পান। তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। পরে রানাঘাট থেকে দু’টি এবং চাকদহ ও কল্যাণী থেকে একটি করে দমকলের ইঞ্জিন এসে আগুন আয়ত্বে আনে। কারখানার একটা আংশে যন্ত্রপাতি রয়েছে। অন্য অংশে বস্তা করে প্লাস্টিকের টুকরো রাখা ছিল। তা দিয়ে প্লাস্টিকের দানা তৈরি হয়। সেই দানা চলে যায় চেয়ার তৈরির কারখানায়। কারখানায় দুই মহিলা-সহ সাত জন কর্মী রয়েছেন। কারখানার মালিক সুদীপ চৌধুরী বলেন, ‘‘রাতে কেউ কারখানায় থাকেন না। আমি এখন এলাকার বাইরে রয়েছি। শ্রমিকদের মুখে আগুন লাগার কথা শুনেছি। ফিরে গিয়ে ক্ষতির পরিমাণ জানতে পারব।” কারখানা লাগোয়া বাড়ি বন্দনা পালের। টালির চাল দেওয়া ঘরে একাই থাকেন বছর ৬৫ বয়েসের ওই মহিলা। তিনি বলেন, “কারখানা থেকে আমার ঘরের প্লাস্টিকেও আগুন লেগেছিল। কোনওমতে রক্ষা পেয়েছে।’’
একই দিনে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল কৃষ্ণনগরের চারটে কুঁড়ে ঘর। এ দিন দুপুরে কৃষ্ণনগরের কাছে পানিনালা পূর্বপাড়ায় চম্পা ঘোষের বাড়িতে রান্নাঘরের পাটকাঠির বেড়ায় আগুন লাগে। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশে মদন ঘোষের বাড়িতেও। আগুন দেখে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই পুড়ে ছাই হয়ে যায় দু’টি পরিবারের চারটি ঘর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy