Advertisement
১৮ মে ২০২৪
TMC

রাজনৈতিক সৌজন্য দেখাচ্ছে তৃণমূল

বাড়ি বাড়ি রিপোর্ট কার্ড তুলে দিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। চাইছেন সমর্থন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৪৫
Share: Save:

রাজনৈতিক সৌজন্য ফিরিয়ে আনছে তৃণমূল। দলের সাফল্যের রিপোর্ট কার্ড দিতে যেতে তারা পা বাড়াচ্ছে অন্য দলের নেতাদের গুয়ারেও।

বাড়ি বাড়ি রিপোর্ট কার্ড তুলে দিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। চাইছেন সমর্থন। এনই এক সময় বাড়ির নীচে রৌদ্রে চেয়ারে গা এলিয়ে বসে ভোটার তালিকা পরীক্ষার কাজ করছিলেন সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্যসত্তোরোর্ধ আবুল হাসনাত খান। প্রাক্তন সাংসদ এবং ফরাক্কার প্রাক্তন বিধায়কও।

তাঁর হাতেই সরকারের রিপোর্ট কার্ড বাড়িয়ে দিলেন সুতির তৃণমূল নেতা ইলিয়াস শেখ, ‘‘দাদা আমরা এসেছি আপনার কাছে আমাদের সরকারের দশ বছরের সাফল্যের রিপোর্ট কার্ড তুলে দিতে।’’ হতবাক হলেও হাসনাত নিয়েছেন সেই রিপোর্ট কার্ড।

হাসনাত বলছেন, ‘‘আমিও ভাবতে পারিনি রিপোর্ট কার্ড নিয়ে ওরা আমার কাছে আসবে ইলিয়াস, মোজাম্মেল। সবাই ফরাক্কার পরিচিত তৃণমূল কর্মী। বললাম তোমাদের প্রচারের কথা কাগজে পড়েছি। ভাল, প্রচার কর। মানুষ কতটুকু বিশ্বাস করছে দেখ।’’ হাসনাত বলেন, ‘‘এসেছে যখন সৌজন্য দেখানোটাও কর্তব্য। তবে চা খাওয়াবো সে সময় টুকুও দেয়নি। আর রিপোর্ট কার্ডে যা আছে সবই তো মিথ্যে।’’

ইলিয়াস বলছেন, ‘‘আমরা বেওয়া ২ পঞ্চায়েতে প্রচারে বেরিয়েছিলাম। উনি বাড়ির কাছে বসেছিলেন। জেলা সিপিএমের প্রথম সারির প্রবীণ নেতা। তাই তাঁর হাতে রিপোর্ট কার্ড দিয়ে বলেছি পড়ে দেখবেন। উনি বলেছেন ভাল কাজ। প্রচার কর। বললাম আপনার বয়স হয়েছে সাবধানে থাকবেন। এইটুকুই। এটা নেহাতই সৌজন্য।"

গ্রামগঞ্জ জুড়ে চলছে তৃণমূলের বঙ্গধ্বনি প্রচার কর্মসূচি। উদ্দেশ্য মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়ানো। আর তাকে ঘিরেই এ জেলার সর্বত্র কর্মী ও নেতাদের উৎসাহ নজর কেড়েছে অনেকেরই।

সুতির হাড়োয়া গ্রাম পঞ্চায়েত জুড়ে প্রচারে নেমে পড়েন কয়েক শো তৃণমূল কর্মী। কিন্তু যার দায়িত্বে এই কর্মসূচি দলের সেই অঞ্চল সভাপতি কটা শেখের দেখা মেলেনি তখনও। ব্লক সভাপতি ফোন করার জন্য মোবাইল বের করতেই হাজির কটা। এত দেরি যে? বললেন, ‘‘বাড়ি থেকে বেরোতেই যাচ্ছিলাম। হঠাৎই জ্যেঠু মোজাম্মেল হক মারা গেলেন। এক পরিবারেই ছিলাম। খুব ভালবাসতেন আমাকে। বাড়িতে সবাই কান্নাকাটি করছিল। আমিও নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি। তাই দেরি হল।"

এরকম খবরের জন্য প্রস্তুত ছিল না কেউই। অনেকেই তাকে বাড়ি ফিরে যেতে বললেন। কিন্তু তিনি রাজি হলেন না। বললেন, ‘‘তাই কখনও হয়? আমার পঞ্চায়েতে বঙ্গধ্বনি ও রিপোর্ট কার্ড নিয়ে প্রচার, আর আমি থাকব না ? দিদি'র জন্য এটুকু তো করতেই হবে।’’ এ গ্রাম সে গ্রাম ঘুরে প্রচারের মিছিল শেষে কটা রওনা দিলেন বাড়ির পথে জ্যেঠুর জানাজায় অংশ নিতে। বাড়ি থেকে জ্যেঠুর দেহ কাঁধে নিয়ে রওনা দিলেন কবরস্থানের দিকে।

ওদিকে ফরাক্কায় এনটিপিসি মোড় হয়ে নবারুণের পাশ দিয়ে এগিয়ে চলেছে তৃণমূলের বঙ্গধ্বনি মিছিল।

সাগরদিঘিতেও রিপোর্ট কার্ড হাতে বুধবার বঙ্গধ্বনি প্রচারে বেরিয়েছিলেন বিধায়ক সুব্রত সাহা। এ বাড়ি সে বাড়ি ঘুরে দেখেন এক বাড়ির উঠোনে চলছে মেসিনে ধান ঝাড়াই। কথা বার্তার ফাঁকেই ‘‘দেখি একটু পারি কি না’’ বলেই ধানের আঁটি নিয়ে ধান ঝাড়াইয়ে হাত লাগালেন। কয়েক আঁটি ধান ঝেড়ে গ্রাম ছাড়লেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Political courtesy TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE