Advertisement
১৮ মে ২০২৪

রাস্তার দশা দেখে ভিরমি খান প্রসূতি

সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন সুতির সাদিকপুর পঞ্চায়েতের প্রধান ফরিদা বিবি। স্থানীয়দের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন বিমান হাজরা। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর। সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন সুতির সাদিকপুর পঞ্চায়েতের প্রধান ফরিদা বিবি। স্থানীয়দের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন বিমান হাজরা। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।

এমনই বেহাল কালভার্ট

এমনই বেহাল কালভার্ট

শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:০৮
Share: Save:

•বছর দুয়েক আগে তৈরি হওয়া সুজনিপাড়া স্টেশন থেকে চাঁদনিচক পর্যন্ত রাস্তাটি বেহাল হয়ে পড়েছে। সমানে চলছে লরি থেকে সব ধরনের গাড়ি। রাস্তা দেখে প্রসূতিরা ভিরমি খান। দুর্ঘটনাও ঘটছে আকছার। পঞ্চায়েতের হস্তক্ষেপ দরকার।

নবিরুল শেখ, রঘুনাথপুর

রাস্তাটির অবস্থা একেবারে বেহাল। ভারি গাড়ি চলাচলের জন্যই রাস্তার এই দুরবস্থা। রাজ্য পূর্ত দফতর এটি দেখভালের দায়িত্বে। বার বার পঞ্চায়েত থেকে এ নিয়ে বলা হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

• সুজনিপাড়া থেকে শেরপুর যাওয়ার রাস্তাটি তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন। শুধুমাত্র একটি কালভার্ট ভেঙে যাওয়ায় ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ। কালভার্টটির অবস্থাও বিপজ্জনক।

আমিরুল ইসলাম, শেরপুর

রাস্তাটি নির্মাণের সময় পূর্ত দফতরের নকশায় গোলমালের জন্য নতুন করে কালভার্ট তৈরি করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে সেটি একজনের ব্যক্তিগত জমি। এ নিয়ে একটি মীমাংসার চেষ্টাও করা হয়। মালিকের সঙ্গে পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের বসতে হবে। কিন্তু পূর্ত দফতরের সক্রিয়তার অভাবে তা হয়নি।

• বছর পাঁচেক ধরে আধা তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে সাদিকপুর নামোপাড়ার নির্মীয়মাণ জলাধারটি। এটি জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর তৈরি করেছিল। কিন্তু আজও সেটি শেষ হয়নি। ফলে পরিস্রুত পানীয় জলের অভাবে ভুগছে এই এলাকা।

অশোককুমার দাস, সাদিকপুর

জমি যথাযথ ভাবে হস্তান্তর না হওয়ায় সেই জলাধার তৈরি করতে গিয়েই সাদিকপুরে এই জলপ্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরী দফতরে বার বার বলা সত্ত্বেও তারা এ ব্যাপারে উদ্যোগী হননি। জলাধারটির নির্মাণ সম্পূর্ণ করতে তাদের সব রকম সাহায্য করবে গ্রাম পঞ্চায়েত।

• এই এলাকার তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। নেই সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সও। ছয় কিলোমিটার দূরে যে স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে সেখানে যেতে গেলেও সমস্যা রয়েছে। তাই এলাকার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রসূতিদের প্রসবের জন্য অন্তত ২৪ ঘণ্টার একটি স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র গড়ে তোলা জরুরি। তা ছাড়া বাড়িতে প্রসব হওয়া শিশুদের জন্মের শংসাপত্র পেতে গেলেও হয়রান হতে হচ্ছে।

রামকৃষ্ণ দাস, ফতুল্লাপুর

সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা ঠিকভাবে পায় না এলাকার মানুষ। তাই বহু ক্ষেত্রেই বাড়িতে প্রসব হয় প্রসূতিদের। বাড়িতে প্রসব হওয়া শিশুরাও যাতে জন্মের শংসাপত্র নির্বিঘ্নে পান তা নিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলা হবে। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির পাশেই একটি মাতৃসদন গড়ে তোলার চিন্তা ভাবনা রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলা হবে।

• গাবগাছিতে রেশন দোকান থেকে বেশির ভাগ সময়েই আটা দেওয়া হয় না। চাল মুখে তোলা যায় না, ধুলোয় ভরা। তাতেও ৮০০ গ্রাম থেকে এক কিলোগ্রাম কম দেওয়া হয়। সর্ষের তেলের এক লিটারের দাম ১১০ টাকা, লবণ নয় টাকা। বাইরের বাজারেও একই দাম। এই অব্যবস্থা দূর হবে কি?

এখনও শেষ হল না জলপ্রকল্প তৈরির কাজ

কালু শেখ, রঘুনাথপুর

অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। সাধ্য মতো যা করার তা করা হবে। তবে গ্রামবাসীদের বলব বিষয়টি নিয়ে বিডিও ও খাদ্য দফতরকে লিখিত ভাবে জানাতে।

• একশো দিনের প্রকল্পে আমি ও আমার বাবা এক বছর আগে কাজ করেছি। আমি ছয় দিনের ও বাবা পাঁচ দিনের মজুরি পাব। বার বার পঞ্চায়েত বলেও টাকা পাইনি। প্রতিবার গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়।

রবিউল, রঘুনাথপুর

গ্রাম পঞ্চায়েতে দীর্ঘদিন প্রধান ছিল না বলে একশো দিনের কাজ নিয়ে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। কিছু নির্দিষ্ট গাইড লাইন মেনে চলা হয়নি বলে ১৫ লক্ষ টাকা আটকে গিয়েছিল। চেষ্টা হচ্ছে দ্রুত সমস্যা সমাধানের।

• বার্ধক্য ভাতা পাই পাঁচ-ছয় মাস অন্তর। আয় বলতে এইটুকুই। তাই ভাতার টাকাটা যাতে প্রতি মাসে নিয়মিত দেওয়া হয় সে ব্যাপারে গ্রাম পঞ্চায়েত তৎপর হলে উপকৃত হব।

বিনয়কুমার দাস, সাদিকপুর

যেমন যেমন ভাতার টাকা আসে তেমন ভাবেই দেওয়া হয়। এটা প্রশাসনিক সমস্যা। রাজ্য সরকার সময় মতো টাকা দিলে নিয়মিত তা দেওয়া সম্ভব।

• রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ যেখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই সেখানে সপ্তাহে একদিন চিকিৎসক আসবেন। কিন্তু সাদিকপুর পঞ্চায়েতে চিকিৎসক নিয়মিত আসেন না। এ ব্যাপারে উদ্যোগী হোক গ্রাম পঞ্চায়েত।

রবিউল ইসলাম, গোঠা

প্রতি সপ্তাহে সাদিকপুরে স্বাস্থ্য শিবিরে চিকিৎসক আসেন তার ব্যবস্থা করা যায়। বিষয়টি নিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলব।

ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Village problems
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE