বৃষ্টিতে ব্যাহত নির্মাণের কাজ। সাগরদি ঘিতে অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।
বিরামহীন বৃষ্টি। আর সেই কারণেই সময়ে চালু করা যাচ্ছে না সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫০০ মেগাওয়াটের তৃতীয় ও চতুর্থ ইউনিট।
চলতি বছরেরই জুন ও ডিসেম্বরে চালু হওয়ার কথা ছিল ইউনিট দুটির। কিন্তু ইতিমধ্যে জুন পেরিয়ে গেলেও তৃতীয় ইউনিট চালু করা যায়নি। সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃতীয় ইউনিটটি এ বছর ডিসেম্বরে চালু করা গেলেও চতুর্থ ইউনিটটি আগামী বছর জুন মাসের আগে চালু করা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। টানা বৃষ্টিতে সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিতরে বিস্তীর্ণ এলাকার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে পড়েছে। সর্বত্রই জল জমে রয়েছে। কোথাও কোথাও কাদায় এতটাই পিছল অবস্থা যে কর্মীদের চলাফেরা করাই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্মীয়মাণ ৫০০ মেগাওয়াটের তৃতীয় ও চতুর্থ ইউনিট দু’টির নির্মাণ কাজ চালাতে গিয়ে রীতিমতো সমস্যায় পড়েছেন নির্মাণকারী ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা। কাজ সে ভাবে এগোতে পারছে না।
সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৩০০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটটি চালু হয়েছে ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে। পরের বছর অগস্টে চালু হয় ৩০০ মেগাওয়াটের দ্বিতীয় ইউনিটটি। বাম জমানায় ওই দু’টি ইউনিট তৈরি করে চিনের একটি সংস্থা। ইউনিট দু’টি চালুর পরে একাধিক বার তা বিকল হয়ে দীর্ঘদিন উৎপাদন ব্যাহত হয়। তাই পরের ৫০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট তৈরির বরাতও দেওয়া হয়েছে একটি সংস্থাকে। তৃতীয় ইউনিটের কাজ প্রায় শেষ হওয়ার মুখে। বয়লার ফায়ারিংও হয়ে গিয়েছে। কথা ছিল, এ বছর জুন মাসের মধ্যেই সেটির বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু টানা বৃষ্টি বাদ সেধেছে কাজে। সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার (প্রজেক্ট) অলোক দত্ত রায় বলেন, ‘‘যে ভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে প্ল্যান্টের মধ্যে অনেক জায়গাতেই জল জমেছে। কাজের গতিও মন্থর হয়ে পড়েছে। অন্যান্য বারের চেয়েও এ বারে বৃষ্টির দাপট বেশি। তাই কিছু করার নেই। তবু আশা করছি ডিসেম্বর মাস নাগাদ ৫০০ মেগাওয়াটের তৃতীয় ইউনিটটি বাণিজ্যিক ভাবে চালু করা যাবে। ৫০০ মেগাওয়াটের চতুর্থ ইউনিটটি চালু হয়ে যাবে ২০১৬ সালের মাঝামাঝি নাগাদ।’’
এই দু’টি ইউনিট চালু হয়ে গেলে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের চালু ৫টি বিদ্যুৎ প্রকল্পের মধ্যে ১৬০০ মেগাওয়াটের সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটিই হবে রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। সাগরদিঘির ১৬০০ ও ফরাক্কায় এনটিপিসির ২১০০ মেগাওয়াট মিলিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জঙ্গিপুর মহকুমায় গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে যাবে। ফরাক্কায় অবশ্য আরও একটি ৬০০ মেগাওয়াটের সপ্তম ইউনিট চালুর তোড়জোড় শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। এ বছর ২০ জানুয়ারি সাগরদিঘি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত। নির্মীয়মাণ তৃতীয় ও চতুর্থ ইউনিটের কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন তিনি। সাগরদিঘির ৫০০ মেগাওয়াটের দু’টি ইউনিটে এ বছরই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। সেই সময় তিনি জানিয়েছিলেন, ‘‘সাগরদিঘির তৃতীয় ও চতুর্থ ইউনিট দু’টি চালু হলে রাজ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে যথেষ্ট স্বনির্ভর হয়ে উঠবে। সেক্ষেত্রে সেই বাড়তি বিদ্যুৎ অন্য রাজ্যকে বিক্রি করবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy